পেটে খিদে মুখে রুচি নেই - করণীয় কি

পেটে খিদে মুখে রুচি নেই ? এখন করণীয় কি? সঠিক তথ্য কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না? তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকের ব্লক পোস্টে আপনাদের সাথে কার্যকরী কিছু তথ্য শেয়ার করবো। আশা করি আজকের পোস্ট থেকে উপকৃত হবেন।  

পেটে-খিদে-মুখে-রুচি-নেই
আজকের ব্লগ পোস্ট সম্পূর্ণ পড়ে জানতে পারবেন খাবারে অরুচি আসার কারণ। এছাড়াও জানতে পারবেন অরুচি দূর করার উপায়। অরুচি সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে সম্পূর্ণ পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। চলুন শুরু করা যাক আজকের ব্লগ পোস্ট। 

পেইজ সূচিপত্রঃ পেটে খিদে মুখে রুচি নেই 

পেটে খিদে মুখে রুচি নেই 

অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনের একটি মারাত্মক অসুবিধা হলো পেটে খিদে অথচ মুখের রুচি নেই। যার কারণে দিনে দিনে শরীর খারাপ হতে শুরু করে। শরীর অসুস্থ হয়ে যায়। অসুস্থতার পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এর কারণ কি? চলুন এ বিষয়ে আজকে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা অর্থাৎ হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। 

এছাড়াও সঠিক পরিমাণে খাবার খাওয়া এবং সুষম খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানবদেহের জন্য। সময় মত খাবার খাওয়াও জরুরী। খাবার সময় মত না খেলে পরবর্তীতে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও এমন কিছু ঔষধ আছে যার সাইড ইফেক্ট হিসেবে এই সমস্যা দেখা দেয়। তাই অতিরিক্ত মাত্রায় ঔষধ খাওয়া উচিত নয়। চলুন আপনাদের সামনে পয়েন্টগুলো পরিষ্কার করে তুলে ধরা যাক। পেটে খিদে অথচ মুখে রুচি না থাকার কারণঃ

  • সুষম খাদ্য খেতে হবে। শুধু পেট ভরে ভাত খেলে সুস্থ জীবন যাপন করা সম্ভব নয়। সুষম খাদ্য শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের মধ্যে সঠিক পরিমাণে খনিজ এবং ভিটামিন থাকতে হবে। 
  • পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজনে বারবার খাবার খান কিন্তু সঠিক পরিমাণে খান। এক বেলাতেই বেশি করে খেয়ে অন্য বেলা না খেয়ে থাকবেন না। 
  • সময় মত খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা এক বেলা খাবার খান অন্য বেলা না খেয়ে থাকেন। এটি করবেন না তিন বেলা অল্প করে হলেও খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে এ ধরনের সমস্যা এড়ানো সম্ভব। 
  • অতিরিক্ত তেল চর্বি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। অতিরিক্ত তেল চর্বি খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। গ্যাসের সমস্যা দেখা দিলে অরুচি ভাব আসে। এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। 
  • অপ্রয়োজনে ঔষধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করুন তাহলে ছোট ছোট ব্যাপারে ঔষধ খেতে হবে না। এছাড়াও কিছু ঔষধ আছে যার সাইড এফেক্ট ক্ষুধা মন্দা দেখা দেয়। এ ধরনের সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 
  • শরীরে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণেও এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই মাত্রা অতিরিক্ত অসুবিধা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এতে বড় ধরনের সমস্যার হাত থেকে বাঁচা যাবে।
  • মেয়েদের সিস্ট এর সমস্যা দেখা দিলে অরুচি ভাব হয়। পেটে ক্ষুধা থাকা সত্ত্বেও খাওয়া যায় না। এ ধরনের সমস্যায় অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে নিয়মিত খাবার খেতে হবে। আর অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 

খাবারে অরুচি হয় কেন 

খাবারের অরুচি হয় কেন? অনেকেরই এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই। যার কারণে অরুচি সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। অরুচি দূর করার আগে জানতে হবে খাবারের অরুচি আসার কারণ। তবেই সঠিক পথ অবলম্বন করে অরুচি সমস্যা দূর করা সম্ভব। আজকের আলোচিত এই বিষয়গুলোর প্রতি একটু মনোযোগী হবেন, তাহলে খাবারের প্রতি অরুচির সমস্যা দূর করতে সক্ষম হবেন।

  • গ্যাস্ট্রিকঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে খাবারে অরুচি আসে। পেটের যেকোনো সমস্যার কারণে এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই পেটের যেকোনো সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। গ্যাস্ট্রিক আলসার নিরাময়ে অবশ্যই মনোযোগী হবেন। গ্যাসের সমস্যা অবহেলা করবেন না। 
  • কোষ্ঠকাঠিন্যঃ যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়, তাদের খাবারে অরুচি আসে। তাই নরম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করুন এতে খাবারের অরুচি সমস্যা দূর করা সম্ভব। অর্থাৎ পেট পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাবারের রুচি ধরে রাখতে। 
  • লিভারঃ লিভারের সমস্যা দেখা দিলে খাবারে অরুচি আসে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শরীরের জন্য। লিভারের সমস্যা এড়িয়ে চলতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং সঠিক নিয়মে চলাফেরা করুন। 
  • কিডনিঃ কিডনির সুস্থতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানব দেহের জন্য। কিডনির সমস্যা দেখা দিলে ক্ষুধা মন্দা আসে। তাই কিডনির সমস্যা এড়াতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং উপযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। কিডনি সুস্থ রাখুন এবং সুস্থ জীবন যাপন করুন। 
  • যক্ষাঃ যক্ষা রোগের কারণে অরুচি দেখা দিতে পারে। তাই যেকোনো ধরনের সংক্রমণ জনিত রোগ থেকে সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন। দীর্ঘমেয়াদী এ ধরনের রোগের কারণে মুখে অরুচি দেখা দিতে পারে। তাই অল্পতেই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার চেষ্টা করুন। 
  • মানসিক চাপঃ অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা বিষণ্ণতার কারণে খাবারে অরুচি দেখা দেয়। তাই মানসিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা করবেন। মানসিক অসুস্থতা কারণে অরুচির সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
  • মেডিসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ কিছু ঔষধ আছে যার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই সমস্যা দেখা দেয়। অর্থাৎ খাবারে অরুচি চলে আসে। তাই এ ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যারা দীর্ঘস্থায়ী কোন রোগে ভুগছে তাদের বেশি ঔষধ খেতে হয়। এ ধরনের রোগীর উচিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। 
  • বিভিন্ন খাবারঃ এমন কিছু খাবার আছে যা খেলে মুখের রুচি কমে যায়। এর মধ্যে অন্যতম হলো চিপস। তাই অতিরিক্ত চিপস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এটি মুখে রুচি নষ্ট করে দেয়। খাবারের প্রতি অনীহা চলে আসে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। 
  • ঘুমঃ নিয়মিত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময় মতো ঘুমানোর চেষ্টা করুন। নিয়মিত সঠিক সময় ঘুমাতে যান এবং সঠিক সময় ঘুম থেকে উঠুন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের ঘাটতি থাকলে খাবারে অরুচি দেখা দেয়।

খাবারে অরুচি দূর করার উপায় 

অরুচির সমস্যা দেখা দিলে শরীর অসুস্থ হয়ে যায়। তাই অরুচি দূর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলুন দেখে নেওয়া যাক অরুচি দূর করার কিছু উপায়। সঠিক খাবার নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ খাবারের মাধ্যমেই শরীরের সুস্থতা এবং খাবারের মাধ্যমেই শরীরের অসুস্থতা আসে। এমন কিছু খাবার রয়েছে যা খাওয়ার মাধ্যমে অরুচি তৈরি হয় তাই সেসব খাবার থেকে বিরত থাকুন। অরুচি দূর করার উপায়ঃ

আরো পড়ুনঃ খেজুরের রস খাওয়ার সতর্কতা

  • পছন্দের খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখুন। দিনে অন্তত একবার পছন্দের খাবার টেবিলে রাখার চেষ্টা করুন।
  • তেল মশলা দিয়ে টেস্টি খাবার রান্না করুন। প্রয়োজনে পছন্দের রেস্টুরেন্টে খাবার খান। 
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অরুচি দূর করতে।
  • ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। ফল শরীরের জন্য খুবই উপকারী। শরীরও ত্বক সুন্দর রাখে ফল।
  • পর্যাপ্ত সবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। যেকোনো ধরনের সবজি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লাল শাক, পালং শাক ইত্যাদি।
  • জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন। অর্থাৎ বাইরের খাবার একটু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। বাইরের পছন্দের খাবারগুলো বাসায় তৈরি করুন।
  • চিপস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। মুখের রুচি নষ্ট করে দেয়। 
  • মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন। 
  • নিয়মিত ডিম ও দুধ খান। এছাড়াও দুধের তৈরি ছানা পনির মিষ্টি খেতে পারেন।
  • পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শরীরের জন্য। নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম যেন হয় সেই দিকে খেয়াল রাখুন।

খাবারের রুচি বাড়ানোর উপায়

খাবারে অরুচি হলে মন শরীর কোনটাই ভালো থাকে না। অরুচির কারণে সারাদিন মাথা ঝিমঝিম করে এবং বমি বমি ভাব হয়। তাই অরুচি দূর করে খাবারের রুচি বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাবার খাওয়া এবং সঠিক নিয়মে জীবন যাপন করার মাধ্যমে খাবারের রুচি বাড়ানো সম্ভব। শুধু খাবার খেলেই রুচি বাড়বে এমনটা নয় সঠিক নিয়মে জীবন যাপন করাও জরুরী। চলুন দেখে নেওয়া যাক খাবারের রুচি বাড়ানোর উপায়ঃ 

পেটে-খিদে-মুখে-রুচি-নেই

  • একবারে বেশি বেশি করে খাবার না খেয়ে দিনের বিভিন্ন সময় বারবার অল্প অল্প করে খাবার খান । এতে হজমের সমস্যা এড়ানো সম্ভব। কোনো বেলাতেই খাবার মিস দিবেন না। দিনের বিভিন্ন সময় নাস্তা করার চেষ্টা করুন। 
  • গ্যাসের সমস্যা হতে পারে এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলুন। গ্যাস্ট্রিক খাবারের রুচি কমিয়ে দেয় তাই অবশ্যই তেল চর্বি কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। 
  • ক্যালোরি যুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। নিয়মিত পছন্দের খাবার খাদ্য তালিকায় রাখুন। শুধু ভাত না খেয়ে ভাতের পাশাপাশি বিভিন্ন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। 
  • বিভিন্ন ধরনের পাতা , মসলা খাবারে ব্যবহার করুন। এতে খাবারের সুগন্ধ বাড়বে এবং মুখের স্বাদ ধরে রাখতে সাহায্য করবে। যেমনঃ ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, তেজপাতা ইত্যাদি খাবারে ব্যবহার করতে পারেন।
  • আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করার চেষ্টা করবেন। আঁশযুক্ত খাবার হজমে সাহায্য করে। হজম সঠিক নিয়মে হলে ক্ষুধা বাড়বে। খাবারে রুচি বাড়বে। তাই নিয়মিত খাবারে শাক সবজি রাখুন। 
  • সালাদ রাখার চেষ্টা করুন খাবারের পাশে। খাবারের সাথে সালাত লেবু মিশিয়ে খেলে মুখের রুচি বাড়ে এবং একটু বেশি খাওয়া যায়। এগুলো রুচি বাড়ানোর পাশাপাশি মুখের রুচি ধরে রাখতেও সাহায্য করে। 
  • সুন্দর মুহূর্ত খাবার খাওয়ার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। তাই একা একা বসে বসে না খেয়ে ফ্যামিলির সাথে বসে খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে খাওয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়বে। এছাড়াও খাবারের প্রতি বিরক্তিভাব আসবেনা। 
  • খাবারের সময় বড় প্লেট ব্যবহার করুন। বড় প্লেটে খাবার বেশি ধরে। আপনি নিজের অজান্তেই বেশি খাবার খেয়ে ফেলবেন। এভাবে আপনার খাবার রুচি বাড়ানো সম্ভব। বড় প্লেট হলে খাওয়ার ইচ্ছাটাও একটু বেশি জাগবে। আপনি বুঝতে পারবেন না কখন এত বেশি খাবার খেয়েছেন। 
  • মানসিক চাপ নির্মূল করার চেষ্টা করবেন। মানসিক চাপ খাবারের প্রতি অনিহা সৃষ্টি করে। খাবারের প্রতি আগ্রহ ধরে রাখতে মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন। মনকে হাসি খুশি রাখুন এতে শরীরও ভালো থাকবে। 
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পর্যাপ্ত পানি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি পান করলে শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। শরীরের অঙ্গ পতঙ্গ সুস্থ থাকে। তাই এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ 

গর্ভাবস্থায় খাবারের প্রতি অরুচি আসার কারণ

গর্ভাবস্থায় অনেকরই খাবারের প্রতি অরুচি আসে। এটি একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। খাবারের প্রতি অরুচি আসলে পুষ্টিকর খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায়। ফলে মা ও শিশুর বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ সমস্যা দূর করতে হলে আগে জানতে হবে খাবারে অরুচি আসার কারণ কি? গর্ভাবস্থায় শরীরে বিভিন্ন হরমোনাল পরিবর্তন হয় যার কারণে অনেক সময় খাবারে অরচি আসে।

এছাড়াও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে খাবারে অরুচি আসতে পারে। মানসিক অবসাদ খাবারের প্রতি অরুচি আসার একটি বড় কারণ। তাই মন সব সময় ফ্রেশ রাখার চেষ্টা করবেন। পছন্দের খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখবেন। তাহলে খাওয়ার আগ্রহ বাড়বে। তবে অবশ্যই পুষ্টিগুনের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সঠিক সময় ঘুমাতে যান এবং সঠিক সময় ঘুম থেকে উঠুন।

একই খাবার বার বার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এই কাজটি করলে খাবারের প্রতি অনীহা আসে। পুষ্টিকর খাবারগুলো বিভিন্ন উপায়ে রান্না করে খাওয়ার চেষ্টা করুন। একবারে বেশি বেশি না খেয়ে বার বার খাওয়ার চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। স্বাস্থ্যের জন্য পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ দিবেন। বাচ্চার ওজন ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ 

গর্ভাবস্থায় খাবারের প্রতি অরুচি দূর করার উপায়

গর্ভাবস্থায় খাবারের প্রতি অরুচি দূর করার কিছু উপায় জেনে দিন আজকের ব্লক পোস্টে। বিভিন্ন কারণে এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ ধরনের সমস্যা দূর করতে কিছু উপায় জেনে নিন আজকের পোস্টে। গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চার ওজন ঠিক রাখতে। বাচ্চার ওজন কম থাকলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। চলুন দেখে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় খাবারের প্রতি অরুচি দূর করার উপায়ঃ

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা

  • প্রথমত অতিরিক্ত তেল চর্বি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ভাজাপোড়া খাওয়া ত্যাগ করুন। এ ধরনের খাবার মুখের রুচি নষ্ট করে দেয়। আর স্বাস্থ্যের জন্য এগুলো একদম ভালো নয়। 
  • গর্ভাবস্থায় খাবারের প্রতি সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু খাবার খেলেই হবে না খাবারের পুষ্টি এবং গুনাগুন এর প্রতিও সতর্ক হতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন খাবারের প্রতি অরুচি আসার কারণে যেন পুষ্টিকর খাবার গুলো বাদ পড়ে না যায়। 
  • সঠিক সময় খাবার গ্রহণ করুন। কোনো বেলাতেই খাবার খাওয়া বাদ দিবেন না। প্রয়োজনে দিনের বিভিন্ন সময় বার বার খাবার খান। তিন বারের জায়গায় চার থেকে পাঁচ বার খাবার খেতে পারেন।
  • এক খাবার বার বার একরকম করে রান্না করে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। খাবারটি বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। এতে খাবারের প্রতি বিরক্ত আসবে না। 
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পানি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর শরীর পরিচালনায় পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পানি খেলে গ্যাসের সমস্যাও এড়ানো যায়।
  • অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যার জন্যেও অরুচি দেখা দিতে পারে তাই যেসব খাবার খেলে গ্যাস হয় এমন খাবার এড়িয়ে চলুন। গর্ভাবস্থায় গ্যাস্টিক একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ দিন। 
  • শুধু খাবার খেলেই হবে না প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার প্রতিদিন খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই খাবারের পুষ্টি গুণের দিকে একটুও মনোযোগী হন। আপনার বাচ্চা পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে তা নিশ্চিত করুন।
  • অতিরিক্ত গন্ধ যুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত গন্ধযুক্ত খাবার গর্ভাবস্থায় অরুচির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এ বিষয়ে মনোযোগী হন। এসব উপায় ফলো করার পরেও যদি অরুচির সমস্যা দূর না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

বাচ্চাদের খাবারের প্রতি অরুচি আসার কারন 

বাচ্চাদের নিয়ে সবচাইতে বড় সমস্যা হলো খাবারের প্রতি অরুচির সমস্যা। এ ধরনের সমস্যায় প্রায় সকল বাচ্চার মায়েরাই পড়ে থাকেন। বাচ্চা খেতে না চাইলে বাচ্চাকে খাওয়ানো খুবই কষ্টকর হয়। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আজকের ব্লগ পোস্ট পড়ে আপনি বাচ্চাদের খাবারের প্রতি অরুচি দূর করার উপায় জানতে পারবেন। তবে অরুচি দূর করার উপায় জানার আগে জানতে হবে অরুচি আসার কারণ কি? চলুন এ বিষয়ে আলোচনা করা যাকঃ 

পেটে-খিদে-মুখে-রুচি-নেই

 যথাঃ

  • পেটের খাবার হজম না হলে খাওয়ার আগ্রহ বাড়ে না। পেটের খাবার হজম না হওয়ার কারণ হল অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার মৃত্যু বা অভাব। অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার অভাব দেখা দিলে খাবারের প্রতি বাচ্চাদের অরুচি আসে। কারোর এ সময় পেটের খাবার হজম হয় না। তাই খাবার খেতে আগ্রহী হয় না বাচ্চারা।
  • জিংকের ঘাটতি দেখা দিলে বাচ্চাদের শরীরে খাওয়ার রুচি কমে যায়। 
  • ভিটামিন-বি ১২ বাচ্চাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে অরুচির সমস্যা দেখা দেয়। 
  • লাইসিন অ্যামাইনো এসিড এর অভাব দেখা দিলে খাবারের প্রতি অনিহা আসতে পারে।
  • ভিটামিন-ডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শরীরের জন্য। ভিটামিন-ডি এর অভাব দেখা দিলে খাবারের প্রতি অনিহা আসতে পারে। সূর্যের আলো ভিটামিন-ডি এর উৎস।
  • বাচ্চাদের পর্যাপ্ত ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করবে। মুখের রুচি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে কাজ করে ভিটামিন সি-এর অভাব। ভিটামিন-সি এর উৎস হলো বিভিন্ন টক ফল।
  • বাচ্চাদের পেটে কৃমির সংক্রমণ দেখা দিলে খাবারের প্রতি অরুচি আসে। এছাড়াও কৃমি সকল খাবারের পুষ্টি উপাদান নষ্ট করে দেয়। তাই এই সমস্যায় ডাক্তার দেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • বাজারের বিভিন্ন চিপস বাচ্চাদের খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি করে। এগুলো চিপস অতিরিক্ত খেলে খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যায় মুখের রুচি নষ্ট হয়ে যায়।
  • বাচ্চাদের পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু খাবার দিলেই হবে না খাবারের পুষ্টির প্রতি মনোযোগী হতে হবে। একই খাবার বারবার না দিয়ে আলাদা আলাদা খাবার দিতে হবে। 
  • মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, কলিজা, বাদাম বাচ্চার শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ ধরনের খাবার খাদ্য তালিকায় রাখুন বা রাখার চেষ্টা করুন।
  • শুধু মাছ-মাংস খাওয়ালেই হবে না শাকসবজি ও খাওয়াতে হবে। শাকসবজি খাদ্য তালিকায় রাখুন।দিনের বিভিন্ন সময় ড্রাই ফ্রুট দেওয়ার চেষ্টা করুন।

বাচ্চাদের খাবারের প্রতি অরুচি দূর করার উপায় 

অনেক বাচ্চারাই আছে খাবার খেতে চায়না। খাবার না খাওয়ার জেদ করে। বাচ্চাদের খাবারের প্রতি অরুচি দূর করার উপায় কি? চলুন জেনে নেওয়া যাক। সঠিক পুষ্টি পেতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু খাবারে অরুচি আসার কারণে বাচ্চারা বিভিন্ন পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়। কিন্তু এসব পুষ্টি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করণে

  • বাচ্চাদের নিয়মিত খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। বিভিন্ন সময় ঘুরে ঘুরে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের খাবার রাখুন। দীর্ঘ সময় বাচ্চাকে না খাইয়ে রাখবেন না।
  • বারবার একই খাবার দিবেন না এতে খাবারের প্রতি অনিহা চলে আসে। একই খাবার বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়াতে পারেন এতে খাবারের প্রতি বিরক্ত আসবে না বরং আগ্রহ বাড়বে।
  • বাচ্চাদের খাবার জোর করে খাওয়াবেন না। এতে বাচ্চারা খাবার দেখলে ভয় পায়। ফলে খাওয়ার আগ্রহ কমে যায়।
  • বিভিন্ন ধরনের ড্রাই ফুড বাচ্চাকে দিতে পারেন। এগুলো বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। শরীর গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 
  • বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখুন বাচ্চাকে। বাহিরের খাবার বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিভিন্ন চিপস খাওয়া থেকে বিরত রাখবেন এগুলো মুখের রুচি নষ্ট করে দেয়। 
  • বাচ্চাকে একা হাত দিয়ে খাওয়ার সুযোগ করে দিন। নিজে নিজে খাওয়া আরও আরো ভালো। 
  • খাবার খাওয়ার সময় বিভিন্ন আইটেম রাখতে পারেন। যেন বাচ্চারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, সে কোনটা খাবে তার কোনটা পছন্দ। তাহলে আপনিও বুঝতে পারবেন আপনার বাচ্চার পছন্দের খাবার কি।
  • বাচ্চাকে মাছ মাংস দুধ ডিম খাওয়ানোর অভ্যাস তৈরি করুন। এগুলোর পাশাপাশি পর্যাপ্ত সবজি খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। রান্না করা সবজি না খেতে চাইলে লবন দিয়ে সিদ্ধ করে খাওয়াতে পারেন। 
  • বাচ্চাকে কখনো মেরে মেরে করে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। এতে উপকার তো পাবেনই না বরং অপকার হবে। 
  • এসব টিপস ফলো করে বাচ্চাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। তবুও যদি না খায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ দিন। অনেক সময় মুখের বিভিন্ন ঘা, জিব্বা এর ঘা অরুচির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ দেওয়া সবচাইতে উপকারী।

মন্তব্যঃ পেটে খিদে মুখের রুচি নেই

পেটে খিদে মুখে রুচি নেই, এই সমস্যায় অনেকেই ভুগছেন। আজকে এই সমস্যা দিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এছাড়াও আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি এ সমস্যার দূর করার উপায় সম্পর্কে। আশা করি আজকের পোস্ট পড়ে কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছে। ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। 

পুষ্টিকর খাবার খাওয়া মানব দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু খাবার খেলেই হবে না খাবারের গুনাগুন এর প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে। মুখের রুচি ফেরাতে উপরে আলোচিত উপায় গুলো ফলো করতে পারেন। জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে অরুচির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। গর্ভাবস্থায় এবং বাচ্চাদের অরুচি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ। 

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডেইলি ডাইরির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url