মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা

মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকের ব্লগ পোস্টে। আমরা সকলেই জানি মেথি এক ধরনের মসলা যা রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে রান্না ছাড়াও এর ব্যবহার রয়েছে প্রচুর। আজকের ব্লক পোস্টে আপনাদের সাথে মেথি সম্পর্কে সকল তথ্য শেয়ার করবো। 

মেথির-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা জানার পাশাপাশি জানতে পারবেন চুলের যত্নে মেথির ব্যবহার এবং গ্যাস্টিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম সমূহ। মেথির কি কি উপকার রয়েছে এবং মেথির অপকারী দিকসমূহ জেনে নিন আজকের ব্লগ পোস্টে। সম্পূর্ণ পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়ুন আশা করছি উপকৃত হবেন। 

পেইজ সূচিপত্রঃ মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা 

মেথির উপকারিতা 

মেথি একটি মসলা তা আমরা কমবেশি সকলেই জানি। আর যারা জানেন না তাদেরকে বলে রাখি মেথি রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও মেথির বিভিন্ন ব্যবহার রয়েছে কারণ এটি ভীষণ উপকারী। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান মেথি ব্যবহারের মাধ্যমে পাবেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক মেথি থেকে আমরা কি ধরনের উপকার পেয়ে থাকি।

মেথির পরিচয় আপনাদের সাথে শেয়ার করি চলুনঃ মেথি দেখতে ছোট ছোট গোল গোল কিছুটা বাদামি কালার। এটির স্বাদ কিছুটা তিতা। মেথি শাক রান্না করে খাওয়া যায়। চিকিৎসাবিদে মেথির ব্যবহার রয়েছে। এছাড়াও ব্যবহৃত হয় পাঁচ ফোড়নে। স্টেরয়েড পাদান তৈরি করতে সাহায্য করে মেথি। মেথি গাছের পাতা সাধারণত তিন পাতা বিশিষ্ট হয়। এটি একটি মৌসুমী গাছ। এটি খাবার মসলা এবং পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি করতে বৃদ্ধি ভীষণ উপকারী। এটি নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করলে শরীরে রোগের আক্রান্ত কমে যাবে। শরীরকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করবে মেথি। তাই এটি নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। 
  • কৃমি প্রতিরোধঃ কৃমি প্রতিরোধ করতে এটি ভীষণ উপকারী। ছোট বড় সকলের এই সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে বাচ্চাদের এ সমস্যা বেশি ফেস করতে হয়। তাই নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। পেটে কৃমি হলে সকল পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন তারা নষ্ট করে দেয়। তাই শরীর তেমন শক্তি পায় না। মেথি খাওয়ার মাধ্যমে কৃমি প্রতিরোধ করতে পারবেন এবং দেহকে শক্তিশালী করে তুলতে পারবেন।
  • রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ রক্তে অতিরিক্ত চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে মেথি। তাই যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তারা প্রতিদিন সকালে মেথি চিবিয়ে খেতে পারেন। আশা করছি উপকৃত হবেন। 
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ রক্তে জমে যাওয়া অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে মেথি। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এমনকি স্ট্রোক হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। তাই নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
  • ত্বকের ঘাঃ বিভিন্ন কারণে ত্বকে ঘা দেখা দিলে তা ভালো করতে সাহায্য করে মেথি। ত্বকের ঘা নিয়ন্ত্রণে মেথির ব্যবহার করতে পারেন। এটি ঘা সরিয়ে তোলার পাশাপাশি চুলকানিও দূর করতে সাহায্য করবে।
  • ফোড়াঃ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফোড়া দেখা দিলে মেথির ব্যবহার করতে পারেন। এটি ফোড়া সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই ফোড়া প্রতিরোধে মেথির ব্যবহার খুবই উপকারী। 
  • তারুণ্য দীর্ঘস্থায়ীঃ তারুণ্যকে দীর্ঘস্থায়ী করতে মেথি ভীষণ উপকারী। তাই নিয়মিত চায়ের সাথে অথবা চিবিয়ে মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। এটি নিয়মিত খেলে বয়সের ছাপ দূর হয়ে যায় এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • ডায়াবেটিস প্রতিরোধঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মেথি খুবই উপকারী। ডায়াবেটিস জড়িত সকল সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে মেথি। নিয়মিত মেথি খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন খুব সহজেই। 
  • স্ট্রোক প্রতিরোধঃ স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে মেথি। রোগ হওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কমিয়ে দেয় মেথি। তাই নিয়মিত মেথির ব্যবহার করতে পারেন দৈনন্দিন জীবনে।
  • চুলের যত্নেঃ চুলের যত্নে মেথির ব্যবহার করতে পারেন। মেথি চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। বেশি দুঃখ চুলকে করে তুলে কোমল এবং সাইনি । মাথা ঠান্ডা রাখতেও মেথি ভীষণ উপকারী। 
  • গ্যাস্ট্রিকঃ গ্যাস্টিকের সমস্যাতেও মেথি ব্যবহার করতে পারেন। এটি গ্যাস্টিকের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। সব সময় ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া উপায়ে চেষ্টা করতে পারেন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করনে।
  • জ্বর সর্দি ও কাশি প্রতিরোধঃ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি করে, জ্বর সর্দি ও কাশি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কাশির সময় মেথি দিয়ে উষ্ণ গরম পানি খেতে পারেন দেখবেন অনেকটাই আরাম পেয়েছেন।
  • হজমঃ পেটের যেকোনো গোলমাল বা হজমে সমস্যা থাকলে তার সমাধান করতে সাহায্য করে মেথি। নিয়মিত মেথি খেলে পেটে হজমের সমস্যা দূর হয়। 
  • দুধ উৎপাদনঃ গর্ভবতী মায়েদের দুধ উৎপাদন করতে সাহায্য করে মেথি। তাই গর্ভবতী মায়েরা মেথি খেতে পারেন এটি বাচ্চার দুধের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করবে। 
  • শিশুর ওজন বৃদ্ধিঃ দুধ উৎপাদনের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় মেথি খেলে নবজাতক শিশুর ওজন বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে মেথি। 

মেথি খাওয়ার নিয়ম 

মেথির উপকারিতা ওপরে আলোচনা করেছি, আশা করছি বুঝতেই পারছেন মেথি কতটা উপকারী আমাদের শরীরের জন্য। চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক মেথি খাওয়ার নিয়ম। প্রায় সকলের কাছেই মেথি পরিচিত। তবে যাদের কাছে অপরিচিত তাদেরকে জানিয়ে রাখি মেথি দেখতে ছোট ছোট, গোল গোল, কিছুটা বাদামি কালার। মেথির স্বাদ কিছুটা তিতা হয়ে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক মেথি খাওয়ার নিয়মঃ

মেথি প্রতিদিন সকালে চায়ের সাথে খেতে পারেন। অর্থাৎ চা করার সময় ফোটানো পানিতে কিছুটা মেথি দিয়ে জাল করে নিতে পারেন। এছাড়াও মেথি চিবিয়েও খেতে পারেন। এটি খেতে কিছুটা তিতা হলেও উপকার রয়েছে। এছাড়াও পাওয়া যায় মেথি শাক যা আপনি বাসায় রান্না করে খেতে পারবেন খুব সহজেই। যেকোনো ভর্তার সাথে মেথি মিশিয়ে খেতে পারবেন। এটি খাওয়ার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। খাওয়াটা জরুরী, আপনি যেভাবেই খান উপকৃত হবেন। 

বিভিন্ন উপায়ে মেথি খাওয়া যায়। রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ভিজিয়ে রাখা মেথি চিবিয়ে খেতে পারেন। ভিজিয়ে না রেখেও চাইলে শুকনো মেথি চিবিয়ে খেতে পারেন। এটির সাদ কিছুটা তিতা লাগবে। এছাড়াও মেথি পেস্ট বানিয়ে খেতে পারেন। ভর্তা, ভাজি অথবা তরকারির সাথে মেথি ব্যবহার করতে পারেন। মেথি বেটে জুসের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। খাওয়া ছাড়াও এটি মাথায় ব্যবহার করা যায় মাথা ঠান্ডা রাখতে।

মেথির ব্যবহার 

মেথি খাওয়া ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা যায়। চলুন এ বিষয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করি। মেথি খাওয়ার উপায় এবং নিয়ম উপরে শেয়ার করেছি। মেথির শাক ভর্তা করে খেতে পারেন এবং বাসায় রান্না করে খেতে পারেন। এছাড়াও আমরা সকলেই জানি মেথি পাঁচ ফোড়নে ব্যবহার হয়। মেথির স্বাদ কিছুটা তিতা হয়ে থাকে। তবে এটি খেতে পারলে উপকার রয়েছে তা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন।

আরো পড়ুনঃ কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়

এছাড়াও মেথি বেটে মাথায় ব্যবহার করতে পারেন। এটি মাথাকে ঠান্ডা রাখতে ভীষণ সাহায্য করে। মেথি বেটে গাছের মেহেদি পাতার সাথে মিশ্রণ করে অনেকেই মাথায় ব্যবহার করে। এটি মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখে। শুধু ভর্তা বা চায়ের সাথে নয় আপনি চাইলে তরকারিতেও ব্যবহার করতে পারেন এটি। ডাল রান্না করতে মেথি ব্যবহার করতে হয়। এতে খুব সুন্দর একটি সুগন্ধ আসে। আপনি চাইলে যে কোন রান্নাতেই ব্যবহার করতে পারেন। 

পুরুষের জন্য মেথির উপকারিতা 

পুরুষের জন্য মেথির উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন আজকের ব্লগ পোস্টে। নারী পুরুষ সকলের জন্যই মেথি উপকারী। নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন এতে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও মাথায় ব্যবহার করতে পারেন মেথির রস যা মাথাকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক পুরুষের জন্য মেথির উপকারিতা কি কি তা সম্পর্কেঃ 

মেথির-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
যথাঃ

  • যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে মেথি। তাই কারো এ ধরনের সমস্যা থাকলে নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন এটি আপনাকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে তুলবে। 
  • টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে মেথি। এতে যারা শারীরিকভাবে অর্থাৎ যৌন ক্ষমতা কম তারা উপকৃত হবেন। নিয়মিত মেথি খেলে শারীরিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
  • কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভীষণ উপকারী মেথি। শরীরকে ভেতর থেকে শক্তিশালী এবং কর্মক্ষমও করে তোলে। তাই যারা নিজেদের দুর্বল অনুভব করেন তারা নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
  • হজম শক্তি বৃদ্ধিঃ হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে ভীষণ উপকারী মেথি। যাদের হজমে গোলমাল আছে বা পেটের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।। এটি সকল ধরনের পেটের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। 
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ রক্তে যাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা অধিক তারা নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন এটি অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। জীবনের সাথে যুদ্ধ করে এবং শক্তি ও কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে মেথি। তাই যারা শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল তারা নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণঃ ওজন কমাতে নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। ওজন কমাতে মেথি ভীষণ উপকারী। যারা অতিরিক্ত ওজনে ভুগছেন তারা এটি ট্রাই করতে পারেন। 
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ মেথিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। 
  • এন্টি ইনফ্লেমেটরিঃ মেথিতে রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান। 
  • ভিটামিনঃ এছাড়াও প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের শূন্যতা পূরণ করতে সাহায্য করে মেথি। 

মেয়েদের জন্য মেথির উপকারিতা 

মেয়েদের জন্য মেথির উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। এটি পুরুষদের জন্য যেমন উপকারী পাশাপাশি মেয়েদের জন্য ভীষণ উপকারী। নিয়মিত মেথি খাওয়ার মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবন অনেক সুন্দর হয়ে উঠবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে মেথি। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং মনকে ফুরফুরে রাখতে নিয়মিত মেথি খেতে পারেন। বিভিন্ন উপায়ে মেথি খাওয়া যায় তা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। দেখে নেওয়া যাক মেয়েদের জন্য মেথির উপকারিতাঃ

  • শর্করা নিয়ন্ত্রণঃ শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে মেথি। তাই এটি নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। ইনসুলিন এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • উচ্চ রক্তচাপঃ যারা দীর্ঘদিন যাবত উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তারা নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এটি প্রাকৃতিক উপায়ে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • প্রদাহ বিরোধীঃ প্রদাহ বিরোধী হিসেবে কাজ করে মেথি। নিয়মিত মেথি খেলে প্রদাহ রোধ করতে সাহায্য করবে আপনার শরীরে। 
  • ডায়াবেটিসঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে মেথি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত মেথি খেতে পারেন আশা করছি উপকৃত হবেন। 
  • মাথার ত্বক ঠান্ডাঃ মাথার ত্বক ঠান্ডা করতে সাহায্য করে মেথি। তাই সপ্তাহে একবার মেহেদী পাতার সাথে মেথির রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন আশা করছি উপকৃত হবে। 
  • তারুণ্যঃ তারুণ্য ধরে রাখতে ভীষণ উপকারী মেথি। নিয়মিত মেথি খাওয়ার মাধ্যমে বয়সের ছাপ রোধ করতে সক্ষম হবেন। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় মেথি এবং বয়স যেন বাড়তে দেয় না। মেথি এতটাই উপকারী।
  • চুলের যত্নেঃ চুলের যত্নে ভীষণ উপকারী মেথি। চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মাথার টক ঠান্ডা রাখতে মেথি ভীষণ উপকারী। 
  • খুশকি প্রতিরোধঃ খুশকি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে মেথি। তাই নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। বিশেষ করে শীতকালে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তাই শীতকালে চায়ের সাথে মেথি মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • দুগ্ধ উৎপাদনঃ নবাগত শিশুর যদি দুধের অভাব দেখা দেয় তাহলে বাচ্চার মায়ের মেথি খাওয়া উচিত। এটি দুধ উৎপাদন করতে সাহায্য করে। তাই সদ্য মা হওয়া নারীদের জন্য মেথি উপকারী।
  • বাচ্চার বৃদ্ধিঃ গর্ভাবস্থায় মেথি খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অর্থাৎ বাঁচার ওজন সঠিক রাখতে নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
  • বদ হজমঃ যাদের হজমে গোলমাল রয়েছে বা যে কোন খাবার খেলে বদহজম হয়ে যায় তারা নিয়মিত মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। এটি হজমের সমস্যা দূর করে এবং পেটকে পরিষ্কার রাখে। 
  • গ্যাস্ট্রিকঃ যারা দীর্ঘদিন যাবত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। এটি গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
  • ক্যান্সার বা স্তন ও কোলন ক্যান্সারঃ ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে মেথি। নিয়মিত মেথি খেলে কতটা উপকারী আশা করছি বুঝতেই পারছেন। 

চুলের যত্নে মেথির উপকারিতা 

চুলের যত্নে মেথির উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। অর্থাৎ এতটাই উপকারী মেথি। আপনার চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখতে নিয়মিত মেথির ব্যবহার খুবই উপকারী। মেথি একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এতে কোন কেমিক্যাল নেই। তাই এটি ব্যবহার আপনার জন্য সবচাইতে ভালো হবে। বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে চুলকে সুন্দর রাখতে সাহায্য করে মেথি। চলুন জেনে নেওয়া যাক চুলের যত্নে মেথির উপকারিতাঃ

আরো পড়ুনঃ চুলের খুশকি দূর করার ঘরোয়া উপায়

  • চুলকে মজবুত করতে সাহায্য করে মেথি। চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে মেথির রস। 
  • নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে মেথি। নিয়মিত মেথি ব্যবহার করলে চুল হয়ে উঠবে ঘন। চুল পড়ে যাওয়া রোধ করবে এবং চুল গজাতে সাহায্য করবে মেথি।
  • চুলের অপ্রত্যাশিত খুশকি দূর করতে সাহায্য করে মেথি। চুলের খুশকি প্রতিরোধ করতে নিয়মিত মেথি পেস্ট করে ব্যবহার করতে পারেন। 
  • চুলের আদ্রতা ভাব দূর করে চুলকে করে তোলে মসৃণ। যাদের চুল অনেক বেশি রুক্ষ বা ড্রায় তারা নিয়মিত মেথির পেস্ট চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
  • চুল পড়ে যাওয়া রোধ করতে সাহায্য করে। চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল স্বাস্থ্যজ্জ্বল করে তোলে। 
  • চুলের কালার কালো করতে সাহায্য করে। লাল চুলকে কিস কিসে কালো করে ঝলমলে ভাব নিয়ে আসতে সাহায্য করে মেথি। 
  • মেথিতে রয়েছে এন্টি ফাঙ্গাস ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল যা মাথার সকল জীবানুকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে এবং চুলকে করে তোলে ভেতর থেকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল। 
  • মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখতে ভীষণ উপকারী মেথি। তাই সপ্তাহে দুই একবার মেথির রস বেটে মাথায় লাগাতে পারেন।
  • অনেকেই আছেন যাদের অল্প বয়সেই চুলে পাক ধরে যায়। তাই চুলের পাক রোধ করতে ব্যবহার করতে পারেন মেথি।
  • মেথি ব্যবহার করলে চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। চুলকে করে তোলে কোমল এবং ঝলমলে। মশ্চারাইজার এর কাজও করে দেয় মেথি।
  • মেথিতে রয়েছে আয়রন ও প্রোটিন যা চুলকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে। যাদের চুল অনেক বেশি ড্যামেজ হয়ে যাচ্ছে তারা নিয়মিত মেথি ব্যবহার করতে পারেন।

কালোজিরা ও মেথির উপকারিতা 

কালোজিরা ও মেথির উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন আজকের পোস্ট হতে। কালোজিরা ও মেথি দুটোই শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। প্রতিদিন সকালে কালোজিরা ও মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। সবচাইতে ভালো উপকার পাবেন এগুলো চিবিয়ে খেলে। এছাড়াও আপনি ভর্তা, ভাজি অথবা চায়ের সাথে খেতে পারেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক কালোজিরা ও মেথির উপকারিতাঃ

  • এটি চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। 
  • চুল ঝরে যাওয়া রোধ করে। 
  • চুলের খুশকি রোধ করতে সাহায্য করে। 
  • চুল ঝলমলে ও ঘন করে। 
  • মুখে রুচি ফেরাতে সাহায্য করে। 
  • রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। 
  • শরীরে বিভিন্ন পুষ্টি ও উপাদান সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
  • হজমে সাহায্য করে। 
  • রক্তের শর্করা কমাতে সাহায্য করে। 
  • এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে। 
  • শরীরের শক্তির প্রদান করতে সাহায্য করে। 
  • সর্দি কাশি দূর করতে সাহায্য করে। 
  • ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে। 
  • যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে। 
  • মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। 
  • স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। 
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • হাঁপানি রোধ করে। 
  • শ্বাসকষ্ট রোধ করে। 
  • মানসিকভাবে সুস্থ রাখে। 
  • শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি করে। 
  • প্রসবকালে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। 
  • নতুন মায়ের দুধ উৎপাদনে সাহায্য করে। 
  • এলার্জি দূরীকরণের সাহায্য করে। 
  • গায়ের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। 
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। 
  • বহুমূত্র রোগ নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • হার্টের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে। 
  • হাইপার টেনশন থেকে নিরাময় পাওয়া যায়। 
  • ব্রংকাইটিস রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। 
  • ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে। 
  • শরীরের কোষ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 
  • ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। 
  • পেটের ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে। 
  • গ্যাসের সমস্যা দূর করে। 
  • হৃদরোগ ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 
  • মাথা ব্যাথা দূর করতে সাহায্য করে। 

গ্যাস্টিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম 

গ্যাস্ট্রিক রোধ করতে মেথি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। গ্যাস্ট্রিক ও হজমের সমস্যা দূর করতে মেথি ভীষণ উপকারী। চলুন জেনে নেওয়া যাক গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম। মেথি খুব সহজেই রান্নার সাথে মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন উপায়ে মেথি খেতে পারেন। মেথি যেহেতু খেতে একটু তিতা তাই কোন কিছুর সাথে মিশিয়ে খেলে তিতা সাদ খুব একটা পাওয়া যায় না। তবে চাইলে আপনি চিবিয়েও খেতে পারেন।  

মেথির-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
চা তৈরি করার সময় ফুটন্ত গরম পানিতে মেথি দিয়ে নিতে পারেন। এছাড়াও মেথি সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে খেতে পারেন খালি পেটে। মেথি ভেজানো পানি লেবুর রস ও মধু দিয়ে পান করতে পারেন। এছাড়াও যে কোন ধরনের তরকারির সাথে মেথি মিশ্রণ করতে পারেন। চাইলে সালাদেও মেথি মেশাতে পারেন। ডাল রান্নার সময় মেথি ফোড়ন দেওয়া খুব স্বাভাবিক একটি রান্নার কৌশল। 

চাইলে আপনি যে কোনো রান্নাতেই মেথি ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন রাতে অথবা সকালে মেথি ও কালোজিরা একসাথে চিবিয়ে খেতে পারেন। মেথি চিবিয়ে খেতে অতিরিক্ত তিতা লাগলে ভিজিয়ে রাখা পানিও খেতে পারেন। মেথির পেস্ট গোলাপ জলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটি মুখের ব্রণ, দাগ ও চোখের নিচের কালো দাগ, বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে। আপনি যেভাবেই খান উপকার পাবেন। 

মেথির অপকারিতা 

এতক্ষণ আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি মেথির উপকারিতা সম্পর্কে। চলুন এখন কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জেনে নেওয়া যাক মেথির। ইতিমধ্যে আপনারা জেনে গেছেন মেথি কতটা উপকারী আমাদের শরীরের জন্য। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত ব্যবহার অপকারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অর্থাৎ একটা জিনিসের যতই ভালো বা উপকারী দিক থাকুক তার সঠিক ব্যবহার জানতে হবে। অতিরিক্ত ব্যবহার বা অপব্যবহার হতে পারে ক্ষতির কারণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক মেথির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কেঃ

আরো পড়ুনঃ মানসিক টেনশন ও চাপ দূর করার কার্যকারী উপায়

  • অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে টেরাটোজেনিক এর কারণে জন্মদোষ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই খাওয়া শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 
  • অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে গর্ভাশয় সংকোচন হয়ে যেতে পারে কারণ মেথির জরায়ু উদ্দীপক। 
  • মেথি খেলে হজমের সমস্যা দূর হয় তবে অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে পেটব্যথা, গ্যাসের সমস্যা এমনকি ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে পারে।
  • কারো কারো ক্ষেত্রে মেথি এলার্জির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ মেথি এলার্জির প্রতিক্রিয়া করে।
  • বাতজ্বর বা যেকোনো ধরনের জ্বর, শ্বাসকষ্ট হওয়া, যেকোনো ধরনের ফুসকুড়ি বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া অর্থাৎ দুর্বল হয়ে যাওয়া এলার্জির লক্ষণ।
  • অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যে কোনো ঔষধ সেবন করার পর মেথি খাওয়া উচিত না। কমপক্ষে দুই থেকে তিন ঘন্টা আগে বা পরে মেথি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

মন্তব্যঃ মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা 

মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আজকের ব্লগ পোস্টে। মেথির প্রচুর উপকারী দিক রয়েছে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীরে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। মেথির উপকারী দিক বিবেচনা করলে তেমন অপকারী দিক নেই যদি আপনি সঠিক নিয়ম মেনে খান সঠিক পরিমাণে খান। মেথি খাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উপায়ে কাজে লাগাতে পারবেন চুল সুন্দর রাখতে ও ত্বক সুন্দর রাখতে।

আজকের পোস্টে মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা জানানোর পাশাপাশি পুরুষদের জন্য মেথির উপকারিতা ও মেয়েদের জন্য মেথির উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়াও আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি চুলের যত্নে মেথির উপকারিতা এবং গ্যাস্টিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম। আশা করছি আজকের পোস্ট হতে কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছেন। আজকের পোস্ট ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডেইলি ডাইরির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url