গোলাপ গাছের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়
গোলাপ গাছের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয় তা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। আজকের ব্লগ পোস্টে গোলাপ গাছের পরিচর্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এছাড়াও আজকের ব্লগে জানতে পারবেন কোন মৌসুমে কেমন যত্ন নিতে হয় গোলাপ গাছের। সকল তথ্য জানতে সম্পূর্ণ পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পেইজ সূচিপত্রঃ গোলাপ গাছের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়
- গোলাপ গাছের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়
- টবে গোলাপ চাষ
- গোলাপ বাগান তৈরির কৌশল
- গোলাপের উপযোগী মৌসুম
- গোলাপ গাছে ফুল ধরে না কেন
- পোকামাকড় প্রতিরোধ পদ্ধতি
- বর্ষাকালে গোলাপ গাছের যত্ন
- গরমে গোলাপ গাছের যত্ন
- গোলাপ গাছের পরিচর্যায় সাবধানতা
- মন্তব্যঃ গোলাপ গাছের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়
গোলাপ গাছের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়
গোলাপ গাছের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়? আজকে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। গোলাপ খুব সুন্দর একটি ফুল। গোলাপ পছন্দ করে না এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। বর্ণ, গন্ধ ও সৌন্দর্যের দিক দিয়ে গোলাপ সবচাইতে এগিয়ে আছে। আগে মানুষ এটি শখের বসে ব্যবহার করলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় গোলাপের। গোলাপের চাহিদা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি গোলাপ চাষ ও বাড়ছে।
তবে সঠিক নিয়মে গোলাপ চাষ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো গাছের পরিচর্যা সঠিক নিয়মে না হলে তা থেকে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না। তাই সঠিক নিয়ম ফলো করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে ফলন ভালো হবে এবং আপনি সন্তুষ্ট হবেন ফলাফল দেখে। দেশ-বিদেশ সব জায়গায়তেই গোলাপ ভীষণ সারা ফেলেছে। সব ধরনের উৎসব আয়োজনে গোলাপের ব্যবহার রয়েছে। তরুণ সমাজ যেন গোলাপের ভক্ত। চলুন দেখে নেওয়া যাক গোলাপের পরিচর্যাঃ
- জলবায়ুঃ আমরা সকলেই জানি শীত মৌসুমে গোলাপের চাষ হয়। তবে এখন সারা বছরই গোলাপ চাষ করা হচ্ছে। তার জন্য মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম। গোলাপ শীত মৌসুম পছন্দ করে। অতিরিক্ত গরমে গোলাপ গাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশ খুবই পছন্দ গোলাপের। ২৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৮০ পার্সেন্ট হলে তা গোলাপ চাষের উপযোগী।
- সময়ঃ জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি অথবা সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাস গোলাপ চাষের জন্য উপযুক্ত সময় হিসেবে ধরা হয়। এ সময় আপনি সঠিক নিয়ম ফলো করে গোলাপ চাষ করতে পারেন। রোগ মুক্ত করে গোলাপ চাষ করলে ফলন ভালো হয়। গাছ সবসময় খোলামেলা জায়গায় চাষ করার চেষ্টা করবেন এতে আলো বাতাস পাবে এবং গাছ ভেতর থেকে স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠবে।
- মাটিঃ মাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকরণ। মাটির পি এইচ ৬ হলে তা পারফেক্ট হিসেব। এটেল মাটিতে গোলাপ চাষ ভালো হয় না দোআঁশ মাটি গোলাপ চাষের জন্য বেশি উপযোগী। এছাড়াও গোলাপ চাষ করার আগে মাটি প্রস্তুত করে নিতে হবে। পর্যাপ্ত সার গোবর মিশিয়ে মাটি তৈরি করতে হয়।
- গোলাপের বীজঃ ভালো জাতের গোলাপের বীজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বীজ ভালো হলে গোলাপ ভালো হবে এবং ফলন বেশি হবে। রোগমুক্ত বীজ নির্বাচন করতে হবে। বিভিন্ন রকম গোলাপের জাত রয়েছে। যেমনঃ টাটা সেন্টার, সিটি অফ বেলফাস্ট, ব্লু মুন, প্যারাডাইস, তাজমহল ইত্যাদি।
- প্রজননঃ বীজ লাগানোর পাশাপাশি কলম কেটে ও প্রজনন ঘটানো যায়। এতে এক গাছে বিভিন্ন রকম গোলাপ পেতে পারেন। গোলাপ গাছের বংশ বিস্তার এর কিছু পদ্ধতি হলো বীজ কাটিং চোখ কলম এবং গুটি কলম পদ্ধতি। এই পদ্ধতি গুলোতে বংশবিস্তার করানো যায়। এছাড়াও বীজ সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। গোলাপ গাছের ক্ষেত্রে টি বাডিং করা হয়ে থাকে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিরঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গাছের গোড়ায় চা পাতা বিছিয়ে দিতে পারেন। এছাড়াও ডিমের খোসা গুড়ো করে গাছের গোড়ায় দিতে পারেন এটি গাছকে শক্তিশালী করে তুলে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পর্যাপ্ত সারাদিন এবং সেচ দিন।
- পোকামাকড়ঃ পোকামাকড় প্রতিরোধ করতে সার ব্যবহার করতে পারেন এছাড়াও স্প্রে করতে পারেন। কীটনাশক মিশিয়ে মাটিকে ভালোভাবে প্রস্তুত করে সেই মাটিতে গাছ লাগাবেন অবশ্যই। পোকামাকড় আক্রান্ত করলে গাছের গোড়ায় ছাই ছিটিয়ে দিন।
- সাবধানতাঃ গোলাপ চাষে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। গ্রীষ্মকালে গোলাপ চাষ করলে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে তাপমাত্রার দিকে। বিকালের দিকে গোলাপ গাছ যেন অতিরিক্ত তাপমাত্রায় না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে ছায়া করে রাখুন। অতিরিক্ত তাপমাত্রায় গোলাপের রং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সার, পাউশ, চুন ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও পোকামাকড় দূর করতে গাছের গোড়ায় ছাই ছিটিয়ে দিতে পারেন।
টবে গোলাপ চাষ
টবে গোলাপ দেওয়ার পদ্ধতি অনেকেই জানতে চেয়েছেন। চলুন আজকের পোস্টে বিস্তারিত
আলোচনা করা যাক। অনেকেই শখ করে বাড়ির আঙিনায় অথবা বাড়ির ছাদের গোলাপ চাষ করতে
চান টবের মধ্যে। কিন্তু সঠিক নিয়ম জানেন না। আজকের পোস্ট থেকে আপনি এ বিষয়ে
বিস্তারিত জানতে পারবেন। সঠিক নিয়মে টবে গোলাপ গাছ লাগালে ফলন অনেক ভালো হয়।
চলুন দেখে নেওয়া যাক টবে গোলাপ চাষ পদ্ধতিঃ
- টব নির্ধারণঃ গোলাপের জাতের উপর নির্ভর করে টব। তাই কি ধরনের কাজ লাগাবেন তা আগে নির্ধারণ করুন তারপর টব সিলেক্ট করুন। বড় গাছের জাত হলে বড় টব নির্ধারণ করুন আর ছোট হলে ছোট নির্ধারণ করুন। প্রতি বছরে এক সাইজ করে বড় সাইজের টবে গাছ স্থানান্তর করতে হবে।
- ভালো জাতঃ অনেক সময় টবে গাছ বাঁচতে চায় না তাই ভালো জাত নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভালো জাত নির্ধারণ করবেন যেন দীর্ঘজীবী হয় এবং অনেক সময় পর্যন্ত আপনাকে ফুল দিতে পারে।
- রোগবালাই মুক্তঃ রোগবালাই মুক্ত বীজ নির্ধারণ করবেন। নয়তো গাছের উন্নতি হবে না গাছ ধীরে ধীরে নেতিয়ে যাবে।
- সেচঃ নিয়মিত পানি দেওয়ার চেষ্টা করবেন। প্রতিদিন বিকালে অর্থাৎ সন্ধ্যার আগে পানি দিলে গাছের জন্য বেশি উপকারী। দুপুরে পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন এতে গাছ মারা যেতে পারে।
- কীটনাশকঃ ইউরিয়া সার, গোবর অথবা চুন পানি ব্যবহার করতে পারে। এতে গাছ সবল হয়ে উঠবে। এছাড়াও গাছের রোগ জীবাণু দূর করতে মাছ ধোঁয়া পানি ব্যবহার করতে পারেন।
- সঠিক সময়ঃ জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি এবং সেপ্টেম্বর অক্টোবর টবে গাছ লাগানোর সঠিক সময়। এ সময় আবহাওয়া শীতল থাকে। গাছ ভালো হয়।
- সূর্যের আলোঃ গাছে আলো বাতাস লাগাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই গাছ সবসময় খোলা জায়গায় রাখার চেষ্টা করবেন। তবে অবশ্যই অতিরিক্ত রোদ লাগা থেকে রক্ষা করবেন। গ্রীষ্মকালের অতিরিক্ত রোদ ফুলের রং নষ্ট করে দেয়। এছাড়াও গাছকে নির্জীব করে ফেলে। তবে পর্যাপ্ত রোধ লাগাটাও জরুরী।
- সাবধানতাঃ অবশ্যই খেয়াল রাখবেন গাছের তুলনায় টব ছোট হয়ে যাচ্ছে কিনা। টপ যদি ছোট হয়ে যায় তাহলে গাছ বেশি বাড়বে না এবং ধীরে ধীরে কাজ নেতিয়ে যাবে এমনকি মারা যেতেও পারে।
গোলাপ বাগান তৈরির কৌশল
বাগানে গোলাপ চাষ করতে চাইলে ন্যূনতম কিছু জ্ঞান আপনার মধ্যে থাকতে হবে। আপনি যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন আপনি একটি গোলাপ বাগান তৈরি করবেন তাহলে এই বিষয়গুলো আপনার জানতেই হবে। না হলে আপনি ভাল ফলন পাবেন না। আমরা গোলাপ বাগান তৈরি করে থাকি সাধারণত শখের বসে অথবা ব্যবসা শুরু করার প্রস্তুতি হিসেবে। তাই সঠিক নিয়ম মেনে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গোলাপ বাগান তৈরি করতে চাইলে যে বিষয়গুলো আপনার অবশ্যই মাথায় রাখতে হবেঃ
আরো পড়ুনঃ মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা
- অবশ্যই আপনার এমন জায়গা নির্ধারণ করতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস রয়েছে। অর্থাৎ বোঝাতে চাচ্ছি যেখানে পর্যাপ্ত সূর্যের তাপ রয়েছে এমন জায়গা নির্ধারণ করতে হবে।
- ছায়াযুক্ত জায়গা নির্বাচন করবেন না এতে ফলন ভালো হবে না এমনকি গাছ মারাও যেতে পারে।
- তবে এটি মাথায় রাখবেন গ্রীষ্মকালে যেন কোন কিছুর সাহায্যে বিকালের দিকে গাছে ছায়া প্রদান করা যায় এমন ব্যবস্থা রয়েছে এমন একটি জায়গা।
- বর্ষাকালে যেন গাছের গোড়ায় পানি জমে না যায় এদিকে খেয়াল রাখবেন।
- অতিরিক্ত নিচু জমি থেকে বিরত থাকুন।
- পানি শেষ দেওয়ার সুবিধা রয়েছে এমন জায়গা নির্ধারণ করুন।
- বাগান যদি ভালো রাখতে চান তাহলে অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
- নিয়মিত গাছের যত্ন নিতে হবে।
- বেশ কিছুদিন পর পর গাছের গোড়ার মাটি পরিবর্তন করতে হবে।
- অর্থাৎ নতুন মাটি সুন্দর করে তৈরি করে গাছের গোড়ায় দিতে হবে।
- গাছে পোস্টটি সরবরাহ করতে হবে।
- আপনি যদি বসতবাড়ি থেকে দূরের কোন জায়গা নির্ধারণ করেন বাগান করার জন্য তাহলে অবশ্যই পানির ব্যবস্থা আছে কিনা তা খেয়াল রাখবেন।
- বালি মাটিতে গাছ লাগানো থেকে বিরত থাকুন।
- ডিএপি, স্যার ইউরিয়া সার এবং পাউশ ব্যবহার করতে পারেন বাগানের মাটিতে।
- বাগানের চারিদিকে বেড়া দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যদি আপনার বাড়ি গ্রামে হয়।
- নতুন নতুন গাছ লাগালে অত্যন্ত সাবধান থাকবেন।
- নয়তো হাঁস-মুরগি আপনার বাগানে ঢুকে গাছের গোড়া থেকে মাটি সরিয়ে ফেলবে এবং গাছ তুলে ফেলবে।
- ছোট বাচ্চার নাগালের দূরে রাখুন গাছগুলো।
- নিয়মিত গাছের গোড়ায় পানি দিন।
গোলাপের উপযোগী মৌসুম
গোলাপের উপযোগী মৌসুম কোনটা? আপনারা কি জানেন? না জানলেও সমস্যা নেই আমি আপনাদের জানাবো। গোলাপকে বলা হয় শীতকালীন ফুল। গোলাপ ফুল শীত পছন্দ করে অতিরিক্ত গরমে গোলাপ গাছ মারা যায়। এটি আগে মৌসুমী ফুল হিসেবে পরিচিত ছিলও এখন সারা বছর পাওয়া যায় গোলাপ ফুল। গোলাপ ফুলের চাহিদা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। প্রায় সকল অনুষ্ঠানেই গোলাপ ফুলের ব্যবহার রয়েছে।
দেশি গোলাপ গুলো খুব সহজেই ঝড়ে যায়। তাই শহরে হাইব্রিড গোলাপের চাহিদা অনেক বেশি। গোলাপ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে অনেক মানুষ। শীতের মৌসুমে গোলাপ বেশি পাওয়া যায় এ সময় গোলাপের দাম ও কম থাকে তবে অন্যান্য সিজনে গোলাপের দাম একটু বেশি থাকে। কারণ সে সময় গোলাপ তুলনামূলক কম উৎপাদন হয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
গোলাপ গাছে ফুল ধরে না কেন
অনেকেই জানতে চেয়েছেন গোলাপ গাছে ফুল না ধরার কারণ। বিভিন্ন কারণে গোলাপ গাছের
ফুল না আসতে পারে। তা আপনার গাছের ওপর নির্ভর করবে বা আপনি কেমন পরিচর্যা করেন
তার ওপর নির্ভর করবে। তাই গাছের যত্ন না নিলে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব না। মনের
মত ফুল এবং গাছের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত গাছের যত্ন নিন। চলুন দেখে নেওয়া
যাক গোলাপ গাছের ফুল না আসার কারণঃ
- মাটি দীর্ঘদিনের পুরনো হলে ফুল না আসতে পারে। তাই মাটির পরিবর্তন করুন এক বছর পর পর।
- মাটি সুন্দর করে প্রস্তুত করতে হবে। মাটিতে পর্যাপ্ত ভিটামিন না থাকলে কাজ বেড়ে উঠবে না এবং পুষ্টির অভাবে ফুল আসবে না।
- মাটির সাথে গোবর মিশিয়ে গাছের গোড়ায় দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
- ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে পারেন।
- গাছের যত্নে এবং গাছের অপুষ্টি দূর করতে গাছের গোড়ায় চা পাতা এবং ডিমের খোসা গুঁড়ো করে দিতে পারেন।
- গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মাছ ধোঁয়া পানি দিতে পারেন।
- এছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন হাড়ের গুড়া। এটি গোলাপ গাছের জন্য ভীষণ উপকারী।
- গোলাপ গাছে বা যেকোনো গাছে দুপুরে পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে গাছ মারা যেতে পারে।
- বিকালে অর্থাৎ সন্ধ্যার আগে পানি দিন
- গাছের ডাল ছাঁটাই করুন। অতিরিক্ত বা অপ্রয়োজনীয় বা মরে যাওয়া ডাল গুলো কেটে বাদ দিন।
- এছাড়াও যেগুলো ডালে রোগ আক্রান্ত করে বা পোকামাকড় যে সব পাতা খেয়ে নেয় সেগুলো ছিড়ে ফেলে দিন।
- তবে খেয়াল রাখবেন ছিঁড়ে গাছের গোড়াতেই ফেলবেন না এতে আবারো আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
- আক্রান্ত পাতাগুলো পুড়িয়ে ফেলা সবচাইতে ভালো হবে।
- গাছের স্প্রে করতে পারেন এতে ক্ষতিকর পোকামাকড় মরে যাবে।
- গাছের পোকা মাকড় দূর করতে এবং পুষ্টি বাড়াতে গাছের গোড়ায় কিছুটা ছাই ছড়িয়ে দিতে পারেন।
- নিয়মিত পানি দিন এবং গাছের যত্ন নিন। পর্যাপ্ত আরো পাচ্ছে কিনা সেদিকে সতর্ক থাকুন।
- অতিরিক্ত আলোর তাপ থেকে বিরত রাখুন।
পোকামাকড় প্রতিরোধ পদ্ধতি
পোকামাকড় প্রতিরোধ পদ্ধতি জেনে নিন আজকের ব্লগ পোস্টে। অনেকেই পোকামাকড়ের
জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে গেছেন। কিভাবে গাছ থেকে এদের নির্মূল করবেন তা বুঝতে পারছেন
না। চলুন আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করি কিছু ঘরোয়া উপায়। এই পদ্ধতি গুলো ফলো
করে খুব সহজে গাছের ক্ষতিকর পোকামাকড় মেরে ফেলতে পারবেন। গাছের পরিচর্যা গুলোর
মধ্যে পোকামাকড় প্রতিরোধ একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। উপায় সমূহঃ
আরো পড়ুনঃ কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- গাছে পোকামাকড় দেখা দিলে গাছের গোড়ায় কিছুটা ছাই ছিটিয়ে দিন।
- গাছের গোড়ার মাটির সাথে গোবর মিশিয়ে আবার গাছের গোড়ায় লাগিয়ে দিন।
- পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায় এমন জায়গায় গোলাপ গাছের টব রাখার চেষ্টা করুন।
- অতিরিক্ত রোদ থেকে দূরে রাখুন।
- গাছে রোগ প্রতিরোধ করতে চা পাতা ব্যবহার করতে পারেন।
- গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ডিমের খোসা গুড়া করে গোড়ায় ব্যবহার করতে পারেন।
- গাছের ও প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি করতে আরও ব্যবহার করতে পারেন তা হল হাড়ের গুড়া।
- ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে পারেন।
- পাউশ ব্যবহার করতে পারেন।
বর্ষাকালে গোলাপ গাছের যত্ন
বর্ষাকালে গোলাপ গাছের যত্ন নেওয়া অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ সময় গাছের যত্ন না নিলে গাছের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায় এমনকি মারাও যেতে পারে। বর্ষাকালে সতর্ক থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই জানেন না কিভাবে বর্ষাকালে গোলাপ গাছের যত্ন নিতে হয়। চলুন আপনাদের সাথে শেয়ার করি কিছু অজানা তথ্য যা দ্বারা আপনারা উপকৃত হবেনঃ
- এমন জায়গায় গোলাপ বাগান তৈরি করুন যেখানে বর্ষাকালে পানি জমে থাকে না।
- গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকা গাছের জন্য খুবই মারাত্মক। এইদিকে খেয়াল রাখুন।
- গাছের টব অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে যেন সবসময় ভিজে না থাকে তা খেয়াল রাখুন।
- গাছের শ্যাওলা হতে দিবেন না এটি গাছের জন্য খুব ক্ষতিকর।
- গাছের আশেপাশে যেন শামুক না জন্মায় সেই দিকে সতর্ক থাকবেন।
- গাছের আশেপাশে শামুক জন্মিয়ে গেলও তা নিধন করুন এবং গাছের গোড়ার মাটি পরিবর্তন করুন।
- নতুন করে মাটি তৈরি করে গাছের গোড়ায় স্থাপন করুন।
- গাছের গোড়া যেন শ্যাওলা জমে পচে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন এতে কাজ মারা যায়।
- ঝিনুক জমা করে গাছের গোড়ায় উপুড় করে অর্থাৎ মাটিতে লাগিয়ে রাখতে পারেন এতে কাছের গোড়ায় পানি জমে থাকে না।
- সব সময় টব ঘরের মধ্যে রাখবেন না রোদের সময় বাহিরে নিয়ে আসুন।
- বর্ষার সময় এক্সট্রা করে গাছে পানি দেওয়ার দরকার নেই।
- গাছের পাতা পোকায় খেয়ে নিলে রাসায়নিক ব্যবহার করতে পারেন। ইউরিয়া সার অথবা পাউস ব্যবহার করতে পারেন।
- চুন ব্যবহার করতে পারেন।
- গাছের গোড়া পরিষ্কার রাখতে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ থেকে গাছকে দূরে রাখুন।
গরমে গোলাপ গাছের যত্ন
গরমে গোলাপ গাছের যত্ন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকে ব্লগ পোস্টে। ওপরে আলোচনা করেছি গোলাপ শীতকালীন ফুল। তাই গরমে বা গ্রীষ্মকালে গোলাপ গাছের যত্ন নেওয়া একটু কষ্টকর। কারণ অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত তাপমাত্রা গোলাপ গাছ সহ্য করতে পারে না। এ সময়ে একটু গুরুত্ব সহকারে গোলাপ গাছের দেখাশোনা করতে হয়। চলুন দেখে নেয়া যাক গরমে গোলাপ গাছের যত্নঃ
- গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় গোলাপ গাছের ফুলের কালার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই বিকালের সময় গাছে রোদ লাগতে দিবেন না।
- এসময় কাজ বাড়ির ভেতরে রাখতে পারেন অথবা গাছের ওপর ছায়া করে রাখতে পারেন।
- গরমের সময় দুপুর বেলা গাছে পানি দেওয়া থেকে সতর্ক থাকবেন।
- সন্ধ্যায় অথবা বিকালে গাছে পানি দিন।
- গোলাপ গাছে সকালে ও বিকালের দিকে স্প্রে মেশিন দিয়ে পানির স্প্রে করতে পারেন কিছুক্ষণ পরপর।
- ঝরে যাওয়া পাতা গাছের গোড়া থেকে দূরে ফেলে দিন।
- এছাড়াও অপ্রয়োজনীয় ডাল ছেঁটে ফেলতে পারেন।
- কেটে ফেলা ডালগুলো অবশ্যই দূরে ফেলে দিবেন।
গোলাপ গাছের পরিচর্যায় সাবধানতা
গোলাপ গাছ পরিচর্যা করার সময় কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নতুবা নিজের অসাবধানতায় হয়ে যেতে পারে বড় ধরনের ভুল। আর আপনার ভুলের কারণে গাছের মৃত্যু হতে পারে। তাই মৌসুম অনুযায়ী গাছের যত্নে সতর্ক থাকতে হবে। সব সময় গাছে এক ধরনের যত্ন নিলে হবে না। আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে গাছের পরিচর্যা ও পরিবর্তন করতে হবে। চোদোন দেখে না যাও গোলাপ গাছ পরিচর্যায় সাবধানতা সমূহঃ
আরো পড়ুনঃ মানসিক টেনশন ও চাপ দূর করার কার্যকারী উপায়
- বর্ষাকালে গোলাপ গাছে অতিরিক্ত পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন এতে গাছ মারা যেতে পারে। কারণ এই সময় এমনিতেই সব সময় গাছের গোড়ায় পানি থাকে।
- গ্রীষ্মকালে গোলাপ গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন এটি গোলাপ কাছের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
- অতিরিক্ত তাপমাত্রা থেকে গোলাপ গাছ দূরে রাখুন এতে গোলাপ গাছ মারা যেতে পারে।
- প্রয়োজনের অধিক গাছে পানি দেবেন না।
- বেশি বেশি রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করবেন না।
- বর্ষার সময় গাছের গোড়ায় শামুক জন্মাতে পারে এদিকে খেয়াল রাখবেন।
- গাছের গোড়ায় অথবা পাতায় ফাঙ্গাস আক্রান্ত করলে গাছের গোড়ায় সাই ছিটিয়ে দিন।
- গোলাপ গাছে সাতপাতার ডাল বের হলে তা কেটে ফেলতে হয়। এ ডালটি দেখতে অনেক লম্বা হয় তবে এতে কখনোই ফুল ধরে না।
- কিন্তু গাছের সকল পুষ্টি উপাদান এই ডাল নিয়ে নেয়। এতে গাছ অপুষ্টি থেকে যায়। ডাল কেটে ফেলা উচিত।
মন্তব্যঃ গোলাপ গাছের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়
গোলাপ গাছের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয় এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি আজকের পোস্টে। আশা করছি আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর আপনারা পেয়ে গেছেন। আজকের ব্লগ পোস্টে গোলাপ গাছের পরিচর্যা আলোচনার পাশাপাশি গোলাপ গাছে ফুল না ধরার কারন কি তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া মৌসুম ভিত্তিক কিভাবে গোলাপ গাছের যত্ন নেওয়া যায় তারও একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আরো আলোচনা করেছি পোকামাকড় প্রতিরোধ পদ্ধতি সম্পর্কে। পোকামাকড় প্রতিরোধ করা
একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক গাছের পরিচর্যায়। পোকামাকড় প্রতিরোধ করতে ওপরের টিপস
গুলো ফলো করতে পারেন।আশা করছি আজকের পোস্ট হতে কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছেন।
পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর আপনি যদি টবে গোলাপ চাষ করতে চান
তাহলে এই উপায় বা পদ্ধতি হলো ফলো করতে পারেন। ধন্যবাদ।
ডেইলি ডাইরির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url