নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করনে
নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করনে কিভাবে কাজে লাগে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
হবে আজকের ব্লগ পোস্টে। আজকের পোস্ট সম্পূর্ণ পড়ে নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে
সকল তথ্য জানতে পারবেন। তাই সম্পূর্ণ পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
এছাড়াও আজকের পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ত্বকের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা
এবং চুলের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে। বিভিন্ন রোগ জীবাণু সাথে নিম পাতা
কিভাবে যুদ্ধ করে তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আরো জানতে পারবেন, নিম
পাতার অপকারিতা সম্পর্কে।
পেইজ সূচিপত্রঃ নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করনে
- নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করনে
- নিম পাতার উপকারিতা
- নিম পাতার উপাদান
- ত্বকের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা
- চুলের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা
- সকালে খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়
- নিম পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা
- নিম পাতার অপকারিতা
- মন্তব্যঃ নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করনে
- আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর
নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করনে
নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করনে কিভাবে অবদান রাখে তা সম্পর্কে জেনে নিন।
যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারাই জানে এটি কতটা কষ্টকর। কমবেশি সকলেরই কোনো না
কোনো জিনিসে অ্যালার্জি থেকে থাকে। বিভিন্ন ঔষধ খেয়ে সাময়িক আরাম পেলেও দীর্ঘ
সময়ের জন্য নিস্তার পাওয়া যায় না এলার্জি থেকে। এছাড়াও অ্যালার্জির ঔষধ খেলে
ঘুম অতিরিক্ত বেড়ে যায়।
ঘুম অতিরিক্ত বেড়ে গেলে ওজন বাড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়
দৈনন্দিন কাজে। তাই নিম পাতা ব্যবহার করে ঘরোয়া ভাবে চেষ্টা করতে পারেন এলার্জি
দূর করনে। কিছুদিন নিয়ম মেনে নিম পাতা ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন বলে আশা
করছি। এলার্জির কারণে বিভিন্ন খাবার থেকে দূরে থাকতে হয়। হাঁসের ডিম, গরুর মাংস,
ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ এ ধরনের খাবার খেলে এলার্জি কয়েক গুড বেড়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
চলুন জেনে নেওয়া যাক নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করনেঃ নিম পাতা রোদে
শুকিয়ে পাউডার বানিয়ে দীর্ঘদিন কৌটায় সংরক্ষণ করতে পারবেন। এই পাউডার হালকা
গরম পানির সাথে অথবা চায়ের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এক চামচের চারভাগের একভাগ
সকালে খালি পেটে চায়ের সাথে খেতে পারেন, দুপুরে খাবার খাওয়ার পর হালকা গরম
পানির সাথে এক চামচের চার ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন।
এভাবে ৩০ দিন খেলে এলার্জির সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা করছি। তিন বেলা নিম
পাতার গুড়ো খেলে সবচাইতে ভালো ফলাফল পাবেন। আর আপনি যদি তিন বেলা খেতে না পারেন
তাহলে এক বেলাও খেতে পারেন। নিম পাতার স্বাদ তিতা হওয়ায় সবাই তিন বেলা খেতে
পারে না। এছাড়াও চাইলে আপনি নিম পাতার ভাজি করে খেতে পারেন। এতেও উপকৃত হবে।
এভাবে এক মাস চেষ্টা করলে এলার্জি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক
বেশি।
যেকোনো ধরনের চুলকানি দাউদ এবং এলার্জি সারাতে নিমপাতা খুবই কার্যকারী। যেসব
খাবার খেতে মন চাইতো তবুও খেতে পারতেন না যেমন হাঁসের ডিম, গরুর মাংস, বেগুন,
ডাল বা যেকোনো সবজি সেসব এখন খেতে পারবেন। তবে একটি কথা মনে রাখবেন যারা
দীর্ঘদিন ধরে এলার্জির সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শে ওষধ
খাওয়া উচিত। আর যদি নতুন নতুন এলার্জির সমস্যা দেখা দেয় তাহলে নিম পাতা খেয়ে এ
সব আশা থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
নিম পাতার উপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন আজকের ব্লগ পোস্টে। নিম পাতা
বিভিন্ন ঔষধি গুণাগুনে ভরপুর। নিম পাতা মানবদেহের বিভিন্ন কার্যকলাপে সাহায্য
করে। নিম পাতার স্বাদ একটু তিতা হলেও এটি জীবাণুর সাথে যুদ্ধ করে, শরীরের
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।নিম গাছের সবকিছুতেই উপকার রয়েছে।যেমনঃ নিম পাতা,
নিম ফুল, গাছের ডাল, শিকড় এবং ডিম গাছের ছাল সবগুলোই কাজে লাগানো যায়। চলুন
দেখে নেওয়া যাক নিম পাতার উপকারিতাঃ
আরো পড়ুনঃ কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
- চুলকানিঃ যেকোনো ধরনের চুলকানি রোধ করতে সাহায্য করে নিমপাতা। নিম পাতা নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে চুলকানির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
- দাউদঃ যারা দীর্ঘদিন যাবত দাউদের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন। দাউদের সমস্যা বিশেষ করে শীতকালে বেশি দেখা দেয়। হালকা উষ্ণ গরম পানির সাথে নিমপাতা সিদ্ধ করে গোসল করতে পারেন এটি দাউদ রোধ করতে সাহায্য করে।
- এলার্জিঃ এলার্জি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে নিমপাতা। নিম পাতা শুকিয়ে তারপর গুঁড়ো করে নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
- সর্দি কাশিঃ সর্দি কাশি নিরাময়ে সাহায্য করে নিমপাতা। এছাড়াও দীর্ঘদিন কফ জমে বুকে ব্যথা হলে নিম পাতা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
- ত্বকঃ ত্বক সতেজ রাখতে ভীষণ উপকারী নিমপাতা। ত্বক মসৃন করতে সাহায্য করে নিম পাতার পেস্ট।
- ব্রণঃ ব্রণ দূর করতে নিমপাতা খুবই উপকারী। সপ্তাহে দুই থেকে চার দিন নিমপাতা এবং কাঁচা হলুদ বেটে মুখে লাগাতে পারেন।
- ব্রণের দাগ দূর করণঃ ব্রনের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে নিম পাতার পেস্ট। ভালো ফলাফল পেতে রোজ গোসলের আগে কিছুক্ষণ মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন নিম পাতার পেস্ট।
- উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিঃ উজ্জ্বলতার বৃদ্ধিতে ভীষণ উপকারী এবং কার্যকারী নিমপাতা। নিম পাতার সাথে সামান্য মধু এবং কাঁচা হলুদ মেশালে আরো ভালো ফলাফল পাবেন।
- চুলঃ চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিম পাতা খুব ভালো কাজ করে। চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে এবং মসৃণ সুন্দর চুল পেতে নিয়মিত নিম পাতার পেস্ট চুলে লাগাতে পারেন।
- উকুনঃ চুলে উকুনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে নিমপাতা। নিম পাতার স্বাদ তিতা হওয়ায় মাথার উকুন দূর হয়ে যায়।
- খুশকি দূর করুনঃ খুশকি দূর করতে সাহায্য করে নিম পাতা। গোসল এর আগে নিম পাতার পেস্ট কিছুক্ষণ চুলে এবং মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন তারপর শ্যাম্পু করে নিন সপ্তাহে দুই দিন এভাবে চুলের যত্ন নিতে পারেন দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে চুলের খুশকি দূর হয়ে গেছে।
- কৃমি প্রতিরোধঃ কৃমি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে নিম পাতা। বাচ্চা থেকে বড় যে কারো কৃমি রোধ করতে নিমপাতা নিয়মিত খেতে পারেন। পেটে কৃমি হলে শরীর কোনো খাবারের গুনাগুন পায় না এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। তাই নিয়মিত নিমপাতা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
- দাঁতঃ দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভীষণ সাহায্য করে নিমপাতা। দাঁতের মাড়ি ব্যাথা রোধ করতে নিমপাতার ডাল দিয়ে মেছাক বা ব্রাশ করতে পারেন। নিম পাতার ডাল দিয়ে ব্রাশ করার প্রচলন আদিকাল থেকে চলে আসছে। এতে দাঁতের জন্য খুবই ভালো।
- ব্যথাঃ দাঁতে ব্যাথার পাশাপাশি শরীরের যেকোনো জায়গায় ব্যথা হলে তা নিরাময় করতে সাহায্য করে নিমপাতা।
- সুগার নিয়ন্ত্রণঃ রোজ সকালে নিম পাতার রস খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরে সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে নিমপাতা। নিম গাছের যেকোন অংশ ব্যবহার করে প্রাকৃতিকভাবে জীবাণুর সাথে যুদ্ধ করতে পারবেন। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে নিমপাতা।
এতক্ষণ আলোচনা করা হলো দিব পাতার উপকারিতা সম্পর্কে। আশা করছি কিছুটা হলেও ধারণা
পেয়েছেন, সামান্য নিম পাতা যে গাছ বাড়ির অজ্ঞিনায় অথবা জঙ্গলের ভেতরে হয়ে
থাকে তার এত উপকারিতা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকে বাড়ির সামনে অথবা দরজার
বাহিরে নিমগাছ থাকলে সেই বাড়িতে রোগ বালায় কম হয়। নিম গাছ জীবাণু রোধ করতে
সাহায্য করে। তাহলে বুঝতেই পারছেন নিম গাছের প্রতিটা অংশ কতটা উপকারী।
নিম পাতার উপাদান
নিম পাতার উপাদান সমূহ দেখে নেওয়া যাক। ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি নিম পাতা কতটা
উপকারী আমাদের মানব দেহের জন্য। নিম গাছের প্রতিটা অংশই যেন অমূল্য সম্পদ। কারণ
স্বাস্থ্যের সুরক্ষা সবার আগে। শরীরে অসুস্থতা থাকলে কোন কাজই ভালো লাগেনা। তাই
শরীর সুরক্ষিত রাখতে এবং সুস্থতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত নিমপাতা খেতে পারেন। চলুন
দেখে নেওয়া যাক নিমপাতার উপাদান সমূহঃ
- অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল
- ব্যাকটেরিয়া রোধক
- প্রদাহ রোধ কারক
- ট্রেইটারপেনয়েড
- এন্টি পাইরেটিক
- ছত্রাক নাশক
- ভাইরাস নাশক
- এন্টি হিস্টামিন
- প্রদাহ রোধকারী
- অ্যান্টিসেপটিক এর বৈশিষ্ট্য।
এই উপাদান সমূহ শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বহুবর্ষজীবী
এই গাছ সম্পূর্ণ ভেষজ গুনে ভরপুর। নিয়মিত নিম পাতা খেতে পারেন এটি চোখের সমস্যা
দূর করতে সাহায্য করে, পাকস্থলীর কৃমি নাশক হিসেবে কাজ করে, পেটের বিভিন্ন
গন্ডগোল থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে চাইলে
ছোট থেকে বড় সকলেই নিম খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
ত্বকের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা
ত্বকের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হবে আজকের পোস্টে। ত্বকের
যত্নে নিম পাতা ভীষণ উপকারী। ত্বক সতেজ রাখতে সাহায্য করে। যারা দীর্ঘদিন যাবত
ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন। নিম পাতার পেস্ট
বানিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন অথবা খেতেও পারে। গোসলের আগে নিম পাতার পেস্ট মুখে
লাগিয়ে রাখতে পারেন এবং গোসলের সময় ধুয়ে ফেলতে হবে।
আরো পড়ুনঃ থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
এছাড়াও নিম পাতার রস ঘুমানোর আগে ব্রণের ওপরে একটু একটু করে দিয়ে রাখলে সকালে
তার রেজাল্ট দেখতে পাবেন। ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। চাইলে নিম পাতার
সাথে কিছুটা কাঁচা হলুদ আর মধু ব্যবহার করতে পারেন। আবার অনেকেই আছেন যাদের মুখে
ব্রণের অনেক দাগ। বাজারের বিভিন্ন প্রোডাক্ট ব্যবহার করেও ফলাফল পাচ্ছেন না তারা
নিমপাতা রস ব্যবহার করতে পারেন।
বাজারের প্রসাধনীতে থাকা কেমিক্যাল মুখের ক্ষতি করে, তাই প্রাকৃতিকভাবে চেষ্টা
করতে পারেন। নিমপাতা মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কিছুদিন নিমপাতা
এবং কাঁচা হলুদ মুখে ব্যবহার করলেই রেজাল্ট দেখতে পাবেন। ত্বকের যত্নে ভীষণ
উপকারী নিমপাতা। সবচাইতে ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন নিম
পাতার রস বা পেস্ট।
চুলের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা
চুলের যত্নে নিমপাতার উপকারিতা মুখে বলে শেষ করা যাবে না। চুলের যত্নে ভীষণ
উপকারী নিমপাতা। নিম পাতায় রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল যা চুলের গোড়ায় থাকা
জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে। মেয়েদের সবচেয়ে বড় সমস্যা খুশকি, নিয়মিত নিম
পাতা ব্যবহার করলে খুশকি প্রতিরোধ হয়। এছাড়াও চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য
করে নিমপাতা।
আরো পড়ুনঃ চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতা
আবার যারা চুলে উকুনের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত নিম পাতার পেস্ট মাথায়
লাগাতে পারেন এটি ১৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যে ভালো ফলাফল দিবে। নিম পাতার স্বাদ তিতা
তাই এটি উকুন দূর করতে। পাশাপাশি মাথার ক্যাল্প অনেক পরিষ্কার রাখে। চুলের
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং চুলকে ঝলমলে
করে তোলে।
তাই সপ্তাহে দুইদিন নিম পাতার পেস্ট লাগাতে পারেন। গোসলের কিছুক্ষণ আগে চুলে
মাখিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট রাখলেই হবে। তারপর গোসলের সময় শ্যাম্পু করে নিন। চুল
শুকিয়ে গেলে নিজে চোখেই তার রেজাল্ট দেখতে পাবেন। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন। চাইলে
নিম পাতার পেস্ট চুলের জন্য ব্যবহার করতে পারেন ভালো ফলাফল পাবেন।
সকালে খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়
সকালে খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়? সকালে খালি পেটে নিম পাতার রস খাওয়া
খুবই উপকারী স্বাস্থ্যের জন্য। প্রাকৃতিকভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
করতে চাইলে নিয়মিত নিম পাতা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। ছোট থেকে বড় সকলেই সকালে
খালি পেটে নিমপাতা খেতে পারবেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক সকালে খালি পেটে নিমপাতা রস
খাওয়ার উপকারিতাঃ
আরো পড়ুনঃ কলার মোচার ১৫ টি কার্যকারী উপকারিতা
- পেটের যেকোনো সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে।
- পেট পরিষ্কার রাখে।
- হজমে সাহায্য করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে।
- দাদ রোগ ভালো করতে সাহায্য করে।
- টক সতেজ রাখি।
- কর্ম দক্ষতা বাড়িয়ে দেয়।
- শরীর সক্রিয় রাখে।
- ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।
- মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে।
- অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে।
- শরীরের বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশন করতে সাহায্য করে।
নিম পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা
নিম পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা অনেক, চলুন দেখে নেওয়া যাক:
সপ্তাহে দুই একদিন নিমপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। এটি শরীর সতেজ
রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন উপকার করবে। নিম পাতায় রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল যা
জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও নিমপাতা এন্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।
পোকামাকড় কামড় দিলে নিমপাতার রস লাগালে দ্রুত ভালো হয়ে যায়। কথা না বাড়িয়ে
চলুন দেখে নেওয়া যাক নিমপাতা সিদ্ধ দিয়ে গোসল করার উপকারিতাঃ
- ঘামের দুর্গন্ধঃ শরীরে ঘামের গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে নিম পাতা সিদ্ধ পানি। গরমের সময় ঘামের সমস্যা বেশি হয় এবং শরীর থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। সপ্তাহে দুই একদিন নিম পাতা সিদ্ধ করা পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে।
- বিষাক্ত পোকামাকড়ঃ পোকামাকড় কামড় দিলে অনেক জ্বালা করে, এছাড়াও চুলকানির সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে নিমপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন।
- এলার্জিঃ এলার্জি খুবই মারাত্মক একটি সমস্যা। গরমকালে এ সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। এ সমস্যা থেকে বাঁচতে নিমপাতা সিদ্ধ করা পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন।
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নঃ শরীরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং জীবাণু দূর করতে নিমপাতা সিদ্ধ করা পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন।
- ত্বকের দাগঃ ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করে নিমপাতা সিদ্ধ পানি। ত্বকের দাগ দূর করতে নিমপাতা সিদ্ধ করা পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন।
নিম পাতার অপকারিতা
নিম পাতার অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন। নিমপাতা খুবই উপকারী প্রাকৃতিক ভাবে ভেষজ
গুণাগুণ সম্পন্ন। নিম পাতা ব্যবহারে করে শরীরের জীবাণু দূর করা যায়। এছাড়াও নিম
পাতা খেলে বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুন পাওয়া যায়। তবে নিম পাতা খাওয়ার কিছু ক্ষতিকর
প্রভাব রয়েছে। সে সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। না হলে স্বাস্থ্য ভালো
রাখতে গিয়ে বিপদে পড়তে পারেন।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা ডুমুরের ২০ টি কার্যকারী উপকারিতা
যেসব মানুষ কিডনি, লিভার এবং পাকস্থলীর যেকোনো অসুখে আক্রান্ত তারা নিম পাতা
খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিম পাতা
খাওয়া উচিত হবে না। আবার নিম পাতার রস ত্বকে ব্যবহার করার সময় যদি এলার্জির
সমস্যা অনুভব করেন তাহলে নিমপাতা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এটি আপনার জন্য
ভালো হবে।
আর যাদের এলার্জির সমস্যা দেখা দিচ্ছে না তারা ব্যবহার করতে পারেন তবে অবশ্যই
খেয়াল রাখবেন নিম পাতার পেস্ট বেশি বেশি করে অনেকক্ষণ মুখে লাগিয়ে রাখবেন
না। এতে মুখে চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। অল্প রস নিয়ে আলতো করে মুখে
লাগিয়ে রাখবেন। পাতার রস বেশি বেশি খেলে যে বেশি উপকার পাবেন এমনটা নয় সঠিক
পরিমানে খাবেন, ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন। আশা করি বুঝতে
পেরেছেন।
মন্তব্যঃ নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করনে
নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি দূর করনে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আজকের ব্লগ
পোস্টে। এছাড়াও আপনাদের সামনে নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে সকল তথ্য তুলে ধরার
চেষ্টা করেছি। ত্বক ও চুলের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা নিয়েও বিস্তারিত জানানোর
চেষ্টা করেছি। আশা করছি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছে আজকের পোস্ট হতে। নিম পাতা ভীষণ
উপকারী মানব শরীরের জন্য।
জীবাণু ধ্বংস করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও নিমপাতা নিয়মিত খেলে পেটের সকল সমস্যা দূর হয়। ত্বকের যত্নে এবং চুলের
যত্নেও ভীষণ উপকারী নিমপাতা। নিম পাতার অপকারিতা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে নিমপাতা খাওয়ানোর আগে ডাক্তারের পরামর্শ দেওয়া অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্নঃ নিম পাতা কি কি রোগের কাজ করে?
উত্তরঃ নিম পাতা পেটের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে, চোখের সমস্যা সমাধান করতে
সাহায্য করে, পাকস্থলীর কৃমি নিরাময় করতে সাহায্য করে, যকৃতের সমস্যা দূর করতে
সাহায্য করে এছাড়াও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। জ্বর সর্দি
থেকে রক্ষা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
প্রশ্নঃ প্রতিদিন কয়টা ডিম পাতা খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ টি নিমপাতা খেতে পারেন।
প্রশ্নঃ নিম পাতা খেলে কৃমি নিরাময় হয়?
উত্তরঃ নিম পাতা নিয়মিত খেলে কৃমি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
প্রশ্নঃ কাদের নিম পাতা খাওয়া উচিত নয়?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় নিম পাতা খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও যে নারী পুরুষ বাচ্চা
নিতে ইচ্ছুক তারা নিম পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন কারণ এটি শুক্রানু ধ্বংস করে
দেয় অর্থাৎ নিম পাতা জন্ম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় নিম পাতা খেলে কি হবে?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় নিম পাতা খেলে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রশ্নঃ নিম পাতা কি প্রতিদিন খাওয়া যায়?
উত্তরঃ হজমের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন নিমপাতা খেতে পারেন। এছাড়া নিমপাতা খেলে
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্নঃ নিম পাতা শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে?
উত্তরঃ প্রতিদিন নিয়মিত নিম পাতা খেলে শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য
করে।
প্রশ্নঃ নিম পাতা খেলে কি লিভার নষ্ট হয়ে যায়?
উত্তরঃ নিম পাতা খেলে লিভার নষ্ট হয় না এটি লিভার সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
তবে খাওয়ার মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে গেলে লিভারের ক্ষতিসাধন করতে পারে।
প্রশ্নঃ এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে নিম পাতা?
উত্তরঃ এলার্জি দূর করতে ভীষণ উপকারী নিমপাতা। তবে দীর্ঘদিন এলার্জির সমস্যায়
ভুগলে বা এ সমস্যা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত শুধু নিম
পাতা খেলে কাজ করবে না।
প্রশ্নঃ ডায়াবেটিস রোগীর কোন পাতা খাওয়া ভালো?
উত্তরঃ ডায়াবেটিস এর রোগী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়মিত সজিনা পাতা খেতে
পারেন। এছাড়া নিম পাতাও উপকারী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে।
ডেইলি ডাইরির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url