আসল মুক্তা চেনার ৮টি সহজ উপায় জেনে নিন

আসল মুক্তা চেনার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকের ব্লগ পোস্টে। মুক্তা কিনতে গিয়ে অনেকেই প্রতারণার শিকার হন। আজকের পোস্ট সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ার পর আপনি আসল মুক্তা খুব সহজেই চিনতে পারবেন। আরো জানতে পারবেন মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কোথায় তা সম্পর্কে।
আসল-মুক্তা-চেনার-উপায়
এছাড়াও আজকের ব্লগ পোস্টে আলোচনা করা হবে আসল মুক্তার দাম কত তা নিয়ে এবং আরো জেনে নিন ঝিনুকে মুক্তা হতে কতদিন সময় লাগে ও বাণিজ্যিক মুক্তা চাষ করার পদ্ধতি। মুক্তা সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ুন।

পেইজ সূচিপত্রঃ আসল মুক্তা চেনার উপায়

আসল মুক্তা চেনার উপায় 

আসল মুক্তা চেনার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন কিছু গোপন কার্যকারী টিপস। ঝিনুকের মধ্যে পাওয়া যায় চকচকে মূল্যবান পাথর  টা হলো মুক্তা। নারীর সাজ সজ্জার কাজে মুক্তার ব্যবহার রয়েছে। মুক্তা পাথর দিয়ে তৈরি করা হয় মেয়েদের গহনা এছাড়াও মুক্তার পাউডার রূপচর্চার কাজে লাগে। মুক্তার তৈরি গহনা পড়লে নারীর সৌন্দর্য যেন কয়েক গন বেড়ে যায়। তবে ইদানিং বাজারে মুক্তা কিনতে গেলে প্রতারণার শিকার হতে হচ্ছে।
 
আসল মুক্তা সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা না থাকলে অসাধু ব্যবসায়ীরা নকল বক্তা, কাচ, প্লাস্টিক অথবা চকচকে প্রলেপ লাগানো অন্য পাথর কে মুক্তা বলে আমাদের কাছে বিক্রি করছে। আসল মুক্তা কিনতে গিয়ে নকল মুক্তা কিনে চলে আসতে হচ্ছে। যারা এ ধরনের দুর্ঘটনায় এড়াতে চান আজকের পোস্টটি তাদের অনেক কাজে আসবে। আজকের পোষ্ট পড়ে আসল মুক্তা খুব সহজেই নির্বাচন করতে পারবেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক আসল মুক্তা চেনার উপায়ঃ
 
১.তাপমাত্রাঃ আসল মুক্তা একটু ঠান্ডা হয়। আপনি যতই গরম পরিবেশে থাকেন তবুও মুক্তা ত্বকের সাথে টাচ লাগার পর ঠান্ডা অনুভূতি হবে। ত্বকের সাথে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখলে তারপর গরম হবে। আর নকল মুক্তা তাপমাত্রা পরিবর্তন করে ঠান্ডা পরিবেশে ঠান্ডা থাকে গরম পরিবেশে গরম থাকে। আর মুক্তা যদি কাঁচ দিয়ে তৈরি হয় তবে ঠান্ডা অনুভূতি হতে পারে। আসল মুক্তার তুলনায় নকল কাঁচের তৈরির মুক্তা শরীরের সাথে ধরে রাখলে গরম হতে বেশি সময় লাগবে।
 
২.মুক্তার রংঃ আসল মুক্তা চকচকে হয় এবং দেখতে ন্যাচারাল লাগে। নকল মুক্তা অতিরিক্ত চকচক করে। নকল মুক্তার ওপর আলাদা একটি প্রলেপ দেওয়া থাকে চকচক করার জন্য। আসল মুক্তার ওপর অনেক সময় গোলাপী সবুজ মিশাল দেখতে পাবেন তবে এক কলার চকচকে সাদা ও হতে পারে। মুক্তা সাধারনত গাঢ় গোলাপি, সবুজ, নীল কালার পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও এসব অনেক এক্সপেন্সিভ বা দাবি হয়।
 
৩.আকৃতিঃ আসল মুক্তার আকৃতি সাধারণত গোলাকার হয় না। অনেক কম সংখ্যক মুক্তা গোলাকার হয়ে থাকে। আর এই গোলাকার মুক্তার দাম অনেক বেশি হয়। মুক্তা সাধারণত লম্বা, চ্যাপ্টা, ডিম্বাকৃতি বা অনিয়মিত আকারের হয়ে থাকে। মাদার মুক্তা সব সময় চ্যাপ্টা হয়। তবে অনেক সময় লম্বাকৃতি বা ডিম্বাকৃতি মুক্তা গুলোকে পালিশ করে গোলাকৃতি তৈরি করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আসল মুক্তা অনিয়মিত আকারের হয়ে থাকে। আর নকল মুক্তা গুলোর সাইজ সব সময় একরকম হয় সুন্দর গোলাকৃতি।
 
৪.ওজনঃ আসল মুক্তার ওজন নকল মুক্তার তুলনায় বেশি হয়। আসল মুক্তা গুলো প্রাকৃতিকভাবে একটু ভারী হয়। আপনি হাতে নিলেই অনুভব করতে পারবেন। এ ব্যাপারে যাদের একটু অভিজ্ঞতা আছে তারা আরো ভালো বুঝতে পারবে। নকল মুক্তা গুলো প্লাস্টিক অথবা কাঁচ দিয়ে তৈরি হয় তাই তুলনামূলক হালকা হয় কিন্তু আসল মুক্তা প্রাকৃতিকভাবে ঝিনুকের মাঝে তৈরি হয় তাই এর ওজন একটু বেশি।
 
৫.মসৃণতাঃ আসল মুক্তা একটু কম মসৃণ হয় এবং আসল মুক্তায় দাগ থাকতে পারে আচর টাইপের। তবে পরবর্তীতে তা পালিশ করে এ মসৃণ করার চেষ্টা করা হয়। আর নকল মুক্তা সবগুলো এক সমান এবং মসৃণ হয়ে থাকে। আসল মুক্তার ড্রিলের ছিদ্র তুলনা মূলক ছোট হয় অন্যদিকে নকল মুক্তার ছিদ্র বড় হয়। আসল মুক্তার ছিদ্রের মুখ মসৃণ ও চকচকে হয় আর নকল মুক্তার ছিদ্রের মুখ অমসৃণ বা আবরণ উঠে যাচ্ছে বলে মনে হয়।
 
৬.উজ্জ্বলতাঃ আসল মুক্তার উজ্জ্বলতা অনেক বেশি সুন্দর। আসল মুক্তা পরীক্ষা করতে মুক্তার গায়ে আলো ধরুন অথবা নিচ থেকে আলো ধরুন দেখবেন আলো প্রতিফলিত হচ্ছে বিভিন্নভাবে। অন্যদিকে নকল মুক্তা আলো প্রতিফলন করতে পারেনা। আর নকল মুক্তা যদি কাচ দিয়ে তৈরি হয় তাহলে শুধু ঝকঝক করবে। আসল মুক্তা ভাল করে পর্যবেক্ষণ করলেই দেখতে পাবেন মুক্তার ফিনিশিং কিছুটা অসমান বা অসম্পূর্ণ। নিখুত ফিনিশিং মুক্তা সাধারণত নকল মুক্তা। আসল প্রাকৃতিক মুক্তার ফিনিশিং নিখুত হয় না।
 
৭.আগুনঃ আগুন দিয়ে পরীক্ষা করলে আসল মুক্তা চেনা খুব সহজ। আসল মুক্তার আগুন ধরে না। আসল মুক্তা আগুনে কালো হয় না। মুক্তার আসল রং বজায় থাকে। নকল মুক্তা আগুনে ধরলেই ওপরের পড়ল পুড়ে কুঁচকে যায় এবং মুক্তা কালো হয়ে যায়। নকল মুক্তার রং পরিবর্তন হয়। আপনি আসল মুক্তা পরীক্ষা করতে চাইলে গ্যাস লাইটের আগুন দিয়ে তৎক্ষণাৎ চেক করে দিতে পারেন। সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করতে অভিজ্ঞ মতামত নিতে পারেন অথবা মুক্তা টেস্ট করাতে পারেন।
 
৮.আঁচড়ঃ আসল মুক্তার আঁচড় কাটলে তার চকচকে ভাব চলে যায় না। আসল মুক্তা ছুরি অথবা ধারালো কিছু দিয়ে আঁচড় কাটলে দেখবেন মুক্তা ক্ষয়ে গিয়ে পাউডারের মতো বের হচ্ছে কিন্তু তার চকচকে ভাব একটুও নষ্ট হয়নি। উপরের চকচকে ভাব ক্ষয় হয়ে চলে গেলেও নিচের পড়ল আবারও চকচকে বের হচ্ছে। অন্যদিকে নকল মুক্তাকে ধারালো কিছু দিয়ে আঁচড় কাটলে তার ওপরের চকচকে ভাব চলে যাবে এবং নিচ থেকে কখনোই আর চকচকে ভাব বের হবে না। কারণ নকল মুক্তার ওপরে চকচকে কৃত্রিম প্রলেপ দেওয়া থাকে।

আসল মুক্তার দাম কত 

আসল মুক্তার দাম কত এ বিষয়ে জানতে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মুক্তার চাহিদা ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে পাশাপাশি মুক্তা চাষও বেড়ে চলেছে বাংলাদেশ।মেয়েরা মুক্তা দিয়ে বিভিন্ন অলংকার তৈরি করে থাকে। মুক্তার অলংকার নারীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। মুক্তা অনেক মূল্যবান একটি রত্ন। মুক্তার ওপর সকলেরই আকর্ষণ কাজ করে। বিশেষ করে মেয়েরা এ বিষয়ে অনেক বেশি আগ্রহী। মুক্তার মূল্য নির্ভর করে ক্যারেটের উপরে। চলুন আসল বক্তার দাম জেনে নেওয়া যাক।
  • বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের চাষের মুক্তার গড় দাম ৯০ থেকে ৮০ টাকা।
  • বাংলাদেশের অরজিনাল মুক্তার দাম ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। ক্যারেটের ওপর নির্ভর করে মুক্তার দাম ১৫০০ টাকার উপরে হতে পারে।
  • অরজিনাল বসরাই মুক্তার দাম বর্তমান বাজার মূল্য অনুসারে প্রতি ক্যারেট ৮০০,৯০০ টাকা থেকে শুরু এবং সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকার উপরে হতে পারে।
  • বাংলাদেশ অরজিনাল বক্তার আংটির দাম ৬ হাজার থেকে ১২ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। দাম নির্ভর করে ভালো মানের সুন্দর মুক্তা এবং ক্যারেটের ওপর।
  • বাংলাদেশের অরজিনাল মুক্তার লকেট প্রায় ৫০০ টাকা।
  • বাংলাদেশে অরজিনাল মুক্তার  একটি মালার দাম ৮০০ থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়াও বড় লহরের মালা অথবা ভারি মালার সেটের দাম আরও বেশি হবে।
  • অরজিনাল মুক্তার কানের দুলের দাগ ২০০ থেকে ৩০০ হতে পারে।
  • বর্তমানে বাংলাদেশে অরজিনাল মুক্তার নাক ফুল যদি স্বর্ণের ওপর বসানো হয় তবে এর দাম ১০০০ থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। রুপোর উপর বসিয়ে নিতে চাইলে এক হাজারের মধ্যেই হয়ে যাবে। এছাড়াও সিঙ্গেল মুক্তার পাথরের নাক ফুল নিতে চাইলে তার দাম ২০০ টাকা পড়তে পারে।
  • অরজিনাল মুক্তার ব্রেসলেট এর দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা হতে পারে।

ঝিনুকে মুক্তা হতে কতদিন সময় লাগে 

ঝিনুকে মুক্তা হতে কতদিন সময় লাগে এই প্রশ্নের উত্তর আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক। সবগুলো ঝিনুকের মধ্যে মুক্তা হতে একই সময় লাগেনা সময় কম বেশি হতে পারে। ঝিনুকের মধ্যে মুক্তা তৈরি হতে কতদিন সময় লাগবে তা নির্ভর করে ঝিনুকের ন্যাক্রে নিঃসরণের ওপর। এই ন্যাক্রে নিঃসরণ  প্রতিটি ঝিনুকের এক রকম হয় না। 
আসল-মুক্তা-চেনার-উপায়
কোন ঝিনুক একবার আবার কোন ঝিনুক দুইবার এছাড়াও কিছু কিছু ঝিনুক রয়েছে তারা প্রতিদিন চারবার ন্যাক্রে নিঃসরণ করে। প্রাকৃতিক ঝিনুক এর ভেতরে মুক্তা গুলো সাধারণত ২ মিলিমিটার থেকে ৭ মিলিমিটার পর্যন্ত বড় হয়ে থাকে। চাষ করা ঝিনুকের মুক্তা ন্যাক্রে নিঃসরণ এর হিসাব অনুসারে পাঁচ থেকে সাত মিলিমিটার বড় হতে ২৪ থেকে ২৫ মাস সময় লাগে মনে প্রায় ২ বছর।

মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ কোথায় হয়

মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ কোথায় হয় এ সম্পর্কে আপনারা অনেকেই বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। আজকের পোষ্টে মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণে অনেকেই আগ্রহী। কারণ এটি ভীষণ লাভজনক একটি ব্যবসা। এই ব্যবসা শুরু করতে প্রয়োজন হয় না মোটা অংকের পুঁজি। খুব অল্প পরিশ্রমে এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। যেকোনো বয়সের মানুষই এই উদ্যোগ নিতে পারবেন।

কিন্তু সঠিক নিয়মে মুক্তা চাষ করতে না পারলে ব্যবসায় লস। তাই মুক্তা চাষ সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরী। মুক্তা চাষে জ্ঞান অর্জন করতে মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। সরকারি বেসরকারি যেকোনো উপায়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। সরকারিভাবে মুক্তা চাষ প্রশিক্ষক নিতে চাইলে মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ময়মনসিং যোগাযোগ করুন।
 
ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি উদ্যোগে ফ্রিতে মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়া এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে ঢাকাতেও চাইলে সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। আর ভালোভাবে মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ দিতে চাইলে বাহিরের দেশে অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ কলকাতায় মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ নিয়ে অভিজ্ঞতার সাথে কাজ শুরু করতে পারেন।
 
সামান্য কিছু ইনভেস্ট করে প্রশিক্ষণ লাভ করুন তারপর শুরু করুন মুক্তা চাষের মত লাভজনক ব্যবসা। আর আপনি যদি সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ নেন তাহলে এই খরচ টাও আপনার বেঁচে যাবে। এছাড়াও সরকারিভাবে সাহায্য পেতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করতে পারেন। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন বিষয়গুলো। এখন চাইলে আপনিও শুরু করতে পারেন মুক্তা চাষের মত লাভজনক ব্যবসা।

বাণিজ্যিক মুক্তা চাষ পদ্ধতি 

বাণিজ্যিক মুক্তা চাষ পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকের পোস্টে। মুক্তা চাষ লাভজনক এবং জনপ্রিয় একটি ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যবসায় তুলনা মূলক পরিশ্রমও কম। আপনি চাইলে অল্প পুজিতে মুক্তা চাষ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। মুক্তা চাষ পদ্ধতি জানতে একটি কোর্স করতে পারেন এতে আপনার কাজ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বাণিজ্যিক মুক্তা চাষ পদ্ধতিঃ 
আসল-মুক্তা-চেনার-উপায়
যথাঃ
  • মুক্তা চাষ করতে উত্তম পরিবেশ নির্বাচন করতে হবে। 
  • ঝিনুক সংরক্ষন করুন। খাল বিল থেকে সংরক্ষন করতে পারেন অথবা কিনে নিতে পারেন।
  • ঝিনুকের মধ্যে টিস্যু প্রতিস্থাপন করতে হবে নিউক্লিয়াস পদ্ধতিতে। 
  • ঝিনুকের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কোন কারণে ঝিনুক মারা যাচ্ছে কিনা সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • দুর্ভাগ্যবশত মারা গেলে সেই ঝিনুক বাকি ঝিনুক থেকে আলাদা করতে হবে অর্থাৎ ফেলে দিতে হবে। 
  • এরপর ঝিনুক গুলো পানির মধ্যে রেখে দিন। ৮ থেকে ১০ মাসের মধ্যে মুক্তা জন্ম নেবে ঝিনুকের মধ্যে।
  • এ সময় আপনার কোন কাজ নেই ঝিনুক প্রাকৃতিকভাবে খাবার গ্রহণ করে। 
  • শুধু একটু খেয়াল রাখবেন। অতিরিক্ত রোদে ঝিনুকের পানি যেন বেশি গরম না হয়ে যায়।
  • এইটুকু কাজ সম্পূর্ণ করলে প্রাকৃতিকভাবে ঝিনুকের ভেতরে মুক্তা একাই তৈরি হবে।

পুকুরে মুক্তা চাষ পদ্ধতি

পুকুরে মুক্তা চাষ পদ্ধতি জেনে নিনঃ
  • সুন্দর পরিবেশে পুকুর নির্বাচন করুন। 
  • ঝিনুক কিরে পুকুরে ছাড়ুন। 
  • ঝিনুকের মধ্যে টিস্যু প্রতিস্থাপন করুন নিউক্লিয়াস পদ্ধতিতে। 
  • ঝিনুকের দিকে খেয়াল রাখুন যেন ঝিনুক কোনভাবে মারা না যায়।
  • পুকুরে যেন হাঁস না নামে সেদিকে খেয়াল রাখুন না হলে ঝিনুক নষ্ট করে ফেলবে।।
  • পুকুর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। 
  • অবশ্যই এমন পুকুর নির্বাচন করবেন না যেখানে বেশি রোদ পড়ে এতে পুকুরের পানি অতিরিক্ত গরম হয়ে যাবে এটি ঝিনুকের জন্য সমস্যা। 
  • ঝিনুক প্রাকৃতিকভাবে খাবার তৈরি করে। এ সময় আপনার কোনো কাজ নেই শুধু পুকুরটি সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করুন।

চৌবাচ্চায় মুক্তা চাষ 

চৌবাচ্চায় মুক্তা চাষ পদ্ধতি জেনে নিন। আপনার বাসার আশেপাশে সুরক্ষিত উত্তম পুকুর না পেলে চৌবাচ্চায় মুক্তা চাষ করতে পারে। এছাড়াও অনেকে ছাদে কিছুটা অংশ ইট দিয়ে গেঁথে নিয়ে সেখানে পানি জমিয়ে মুক্তা চাষ করে। বাড়ির আশেপাশে সুন্দর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গায় কিছুটা গর্ত করে ছোট্ট পুকুরের মতো চৌবাচ্চা তৈরি করতে পারেন। একই পদ্ধতিতে মুক্তা চাষ করতে পারবেন।

পুকুর আর চৌবাচ্চায় কোন পার্থক্য নেই। শুধু একটি ছোট্ট পার্থক্য তা হল পুকুর একটু বড় হয় আর চৌবাচ্চা একটু ছোট। পুকুরের তুলনায় চৌবাচ্চায় কম ঝিনুক চাষ করতে পারবেন। ভালো মানের ঝিনুক কিনে চৌবাচ্চায় মুক্তা চাষ করুন। পর্যাপ্ত পারি রাখার চেষ্টা করবেন। এবং সঠিকভাবে ঝিনুকের টিস্যু প্রতিস্থাপন করবেন। আশা করছি ঝিনুক চাষ করে ভালো ইনকাম করতে পারবেন। এখানে পরিশ্রম পুঁজি এবং কষ্ট সবকিছুই তুলনামূলক কম লাগে আর লাভ বেশি।

শেষ কথাঃ আসল মুক্তা চেনার উপায় 

আসল মুক্তা চেনার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আজকের পোস্টে। এই টিপসগুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই আসল মুক্তা নির্বাচন করতে পারবেন। এছাড়াও আজকের পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আসল মুক্তার দাম কত হতে পারে এবং মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ সম্পর্কে। এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করে মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। 
 
এছাড়াও ওপরের নিয়ম অনুসারে করে পুকুর অথবা চৌবাচ্চায় মুক্তা চাষ করতে পারেন। মুক্তা চাষ অল্প পুজিতে এবং অল্প পরিশ্রমে অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসা। আশা করছি আজকের পোস্ট থেকে কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছে। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডেইলি ডাইরির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url