কলার খোসার ব্যবহার | দৈনন্দিন জীবনে কলার খোসার ব্যবহার
কলার খোসার ব্যবহার সম্পর্কে আজকের পোস্টে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো। আপনারা
অনেকেই কলার খোসার ব্যবহার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী সঠিক তথ্য জেনে নিন আজকের পোস্ট
থেকে।
এছাড়াও আজকের পোস্টে জানতে পারবেন কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা কিভাবে করা যায় তার
সম্পর্কে। কলার খোসার সকল গোপন উপকারিতা এবং ব্যবহারিক টিপস জেনে নিন।
পেইজ সূচিপত্রঃ কলার খোসার ব্যবহার
কলার খোসার ব্যবহার
কলার খোসার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। আমরা সকলেই জানি কলা কতটা
পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি সুস্বাদু ফল। কলা খাওয়ার উপকারিতা আমাদের সকলেরই জানা।
কিন্তু কলার খোসার ব্যবহার কি? কলার খোসার ব্যবহার আমাদের অনেকের কাছেই অজানা।
আজকের পোস্ট থেকে আপনারা জানতে পারবেন দৈনন্দিন জীবনে কলার খোসা রূপচর্চার
পাশাপাশি আর কিভাবে আমাদের কাজে আসে।
কলা খাওয়ার পর যেখানে সেখানে কলার খোসা ফেলে না দিয়ে তা আপনার কাজে লাগাতে
পারবেন আজকের পোস্টটি পড়ার পর থেকে। অনেক উপকারিতা রয়েছে কলার খোসার। তাই কলার
খোসা ফেলে না দিয়ে দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করুন। তবে মাথায়
রাখবেন কেমিক্যাল ব্যবহৃত ফল থেকে দূরে থাকা উচিত। উপকারগুলোঃ
- দাঁত ঝকঝকে করতে কলার খোসা ব্যবহার করুন।
- মুখের ব্রণ দূর করতে কলার খোসা ব্যবহার করতে পারেন।
- কলার খোসা মুখের দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
- মুখের বলিরেখা দূর করে কলার খোসা।
- ত্বককে মসৃণ করতে সাহায্য করে কলার খোসা।
- কলার খোসা অবসাদ দূর করে।
- কলার খোসা অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়।
- দাদ রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে কলার খোসা।
- পোকামাকড় কামড় দিলে কলার খোসা লাগাতে পারেন।
- চুলকানি দূর করতে কলার খোসা সাহায্য করে।
- গয়না পরিষ্কার করতে কলার খোসা সাহায্য করে।
- মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করুন। কলার খোসা খুবই উপকারী। কলা যেমন স্বাস্থ্যের
জন্য ভালো তেমনি কলার খোসা রূপচর্চার জন্য খুবই উপকারী। আপনার ত্বককে সুন্দর করতে
সাহায্য করবে কলার খোসা। তাই কলা খাওয়ার পর কলার খোসাটি ফেলে না দিয়ে তা
সংরক্ষণ করুন। চলুন দেখে নিন কিভাবে কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করা সম্ভবঃ
আরো পড়ুনঃ কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চার গোপন টিপস জেনে নিন
- ব্রণ দূর করেঃ আপনার যদি মুখে ব্রণের সমস্যা থাকে তাহলে কলার খোসা ব্যবহার করতে পারেন। মুখে কলার খোসা ঘষে সারারাত রেখে দিন সকালে মুখ ধুয়ে নিন। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে মুখের ব্রণ ঠিক হয়ে গেছে। কলার খোসা দিয়ে মুখের ব্রণ একবার দূর হয়ে গেলে আর ফিরে আসবে না।
- ব্রণের দাগ দূর করেঃ ব্রণের দাগ দূর করতে কলার খোসা সাহায্য করে। কলার খোসা বেটে তার সাথে কিছুটা মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন। শুখিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার ব্রণের দাগ মুছে যাবে।
- বলি রেখা বা বয়সের ছাপ দূর করেঃ কলার খোসা মুখের জন্য খুবই উপকারী। কলার খোসায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মুখের বলিরেখা বা বয়সে ছাপ ঢাকতে সাহায্য করে। ত্বক সতেজ রাখে।
- ত্বক মসৃণ করেঃ ত্বক মসৃণ করতে কলার খোসা খুবই উপকারী। আপনার ত্বক যদি খসখসে বা রুক্ষ হয় তাহলে নিয়মিত কলার খোসা পেটে মুখে লাগাতে পারেন। এতে আপনার ত্বক মসৃণ নরম মোলায়েম হবে।
দাঁতের যত্নে কলার খোসার ব্যবহার
দাঁতের যত্নে করতে কলার খোসার ব্যবহার অতুলনীয়। আপনার দাঁত যদি ঝকঝকে করতে চান
তাহলে নিয়মিত কলার খোসা দিয়ে দাঁত ঘষতে পারে না। এটি আপনার দাঁত কে
প্রাকৃতিকভাবে সাদা ঝকঝকে করে তুলবে। অনেকেই আছেন যাদের দাঁত হলদেটে তারা নিয়মিত
কলার খোসা দিয়ে দাঁত মাজতে পারেন। এছাড়াও যেসব উপকার পাব খোলার খোসা থেকে তা
হলোঃ
- দাঁতের মাড়ি ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে কলার খোসা।
- দাঁতের গোড়া মজবুত করে।
- দাঁতে পোকা হওয়ার সমস্যা থাকলে তা সমাধান করে।
- দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করে।
- দাদ ঝকঝকে করে।
- যেকোনো পেস্ট বা পাউডার দিয়ে দাঁত মাজলে আপনার সমস্যার সমাধান না ও পেতে পারেন কিন্তু খোলার খোসা ব্যবহার করলে আপনি অবশ্যই উপকার পাবেন।
মুখের অবসাদ দূর করতে কলার খোসার ব্যবহার
মুখের অবসাদ দূর করতে কলার খোসার ব্যবহার জেনে নিন। অসুস্থ থাকার কারণে যদি আপনার
মুখের স্বাদ চলে যায় তাহলে কলার খোসার ভাজি খেতে পারেন। অনেকে আছেন দীর্ঘদিন
জ্বরের কারণে কোন কিছু খেতে পারছেন না বা খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে গেছে। তারা কলার
খোসার ভাজি খেয়ে মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে পারেন। ও সাপ দূর করতে কলার খোসা খুবই
উপকারী।
কলার খোসাকে ময়লা হিসেবে ফেলে না দিয়ে রান্না করে খান মুখের রুচি ফেরাতে। কলার
খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মুড নিয়ন্ত্রণকারী রাসায়নিক পদার্থ সেরোটোনিন। এই
সেরোটোনিন মুখের অরুচি বা অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে। তাই আপনারা যদি অরুচি বা
অবসাদ এই ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন কলার খোসা রান্না করে খেতে পারেন। খুব দ্রুত
ফলাফল পাবেন।
কলার খোসা অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়
কলার খোসা অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়। অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের দৈনন্দিন
জীবনের একটি বড় সমস্যা। এর কারণে আমরা নানা অসুবিধায় পড়ি এবং নানা অসুখের
লক্ষণ দেখা দেয়। কলার খোসায় রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট লুটিন। যা মারাত্মক
অতিবেগুনি রশি থেকে আপনাকে বাঁচাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কলার খোসা ব্যবহার
অথবা রান্না করে খেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ গাজর খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
চোখে ছানি পড়ার সমস্যা থেকে রক্ষা করে কলার খোসা। এছাড়াও চুলকানির সমস্যা দূর
করতে সাহায্য করে কলার খোসা। আবার যাদের চোখের সমস্যা বা অবসাদ রয়েছে সে
সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে কলার খোসা। চোখের সমস্যা দূর করতে চোখে কলার
খোসা মেখে রাখতে পারেন। নিয়মিত এভাবে রাখবেন এটা আপনার জন্য উপকারী হবে।
কলার খোসার ঔষধি গুনাগুন
কলার খোসার ঔষধি গুনাগুন গুলো জেনে নিন। কলা যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই
উপকারী এবং পুষ্টিকর একটি ফল তেমনি কলার খোসার রয়েছে নানান ব্যবহারিক উপকারী
দিক। কলার খোসা ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুন ও পেয়ে থাকি। কলার খোসা
দাদ রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। চুলকানি রোধ করতে কলার খোসার ব্যবহার করতে
পারেন।
যে জায়গাটা চুলকাচ্ছে সেই জায়গায় কলার খোসা হালকা করে ঘষে দিলে চুলকানি দূর
হয়ে যাবে। কোন পোকামাকড় কামড় দিলে তখন কলার খোসা ঘষে দিতে পারেন এতে আর
জায়গাটি আর জ্বলবে না বা চুলকাবে না। এভাবে কলার খোসা ব্যবহার করে আমরা নানা
ঔষধি গুনাগুন পেয়ে থাকি। ছোটখাটো বিষয়গুলোতে যে কোন রাসায়নিক পদার্থ আগে
ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক কোলার খোসা ব্যবহার করতে পারেন
অলংকার পরিষ্কার করতে কলার খোসার ব্যবহার
অলংকার পরিষ্কার করতে কলার খোসার ব্যবহার রয়েছে চোখে পড়ার মতো। শুধু অলংকার নয়
বেশ কিছু জিনিস পরিষ্কার করার কাজে কলার খোসার ব্যবহার দেখা যায় কলার খোসা
পরিষ্কারের কাজে খুব ভালো ফলাফল দেয়। কলার খোসা দিয়ে অলংকার পরিষ্কার করা যায়
অনায়াসেই। খুব সুন্দর ভাবে অলংকার পরিষ্কার করতে পারে এবং সে অলংকারটি টেকসই
হয়।
আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্রণ দূর করার উপায়
অলংকারের মসৃণতা বৃদ্ধি পায়। কলার খোসা দিয়ে চামড়া জুতা পরিষ্কার করা যায়।
খুব সুন্দর পরিষ্কার হয়। সোনার গয়না পাশাপাশি রুপার গয়না ও পরিষ্কার করা যায়
কলার খোসা দিয়ে। এই জিনিসগুলো পরিষ্কারের ক্ষেত্রে যে কোন কেমিক্যাল আগেই
ব্যবহার না করে কলার খোসা দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। আশা করছি ভালো ফলাফল পাবেন।
কলার খোসার উপকারিতা
কলার খোসার উপকারিতা সমূহ বর্ণনা করা হলো। কলা যেমন আমাদের জন্য খুবই উপকারী
তেমনি কলার খোসা খুবই উপকারী। খোলার খোসায় রয়েছে অদ্রবনীয় এবং দ্রবণীয়
ফাইবার। এই দ্রবণীয় ফাইবার গুলো শরীরের লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন কমাতে
সাহায্য করে। অর্থাৎ শরীরের বাজে কোলেস্টেরল কমায়। কলার খোসার তরকারি নিয়মিত
খেতে পারেন।
এতে রয়েছে ফাইবার যা হজমে সাহায্য করে। ডায়াবেটিকস রোগীর জন্য খুবই উপকারী।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও কলার খোসা নিয়মিত খেলে ওজন
কমানো যায়। কলার খোসায় রয়েছে ভিটামিন-সি যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। কলার খোসা নিয়মিত খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
কলার খোসা দিয়ে সার তৈরি
কলার খোসা দিয়ে সার তৈরি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। কলার খোসা পানিতে ভিজিয়ে
রেখে তা গাছে ব্যবহার করা যায়। এটি গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কলার খোসায়
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। এগুলো
ভিজিয়ে রাখলে যে দ্রবণ তৈরি হয় তা গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ কুকুর কামড়ালে কত দিনে টিকা দিতে হয়
কলার খোসা, ডিমের খোসা ও চা পাতা এগুলো একসাথে মিশিয়ে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার
করতে পারেন। এটি গাছের স্বাস্থ্য ভালো করে এবং গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই
গাছের যত্নে নিয়মিত এই দ্রবণ ব্যবহার করতে পারেন। যে কোন গাছের বীজ বপন করার আগে
মাটিতে এই দ্রবণটি ব্যবহার করুন। এতে একটি সুন্দর ফলাফল পাবেন।
মন্তব্যঃ কলার খোসার ব্যবহার
কলার খোসার ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করেছি। কলার খোসার ব্যবহার দিয়ে আপনাদের যত
প্রশ্ন ছিল সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কলার খোসা দিয়ে কিভাবে
রূপচর্চা করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এবং দাঁতের জন্য কতটা উপকারী
তা বিস্তারিত জানিয়েছি। আশা করছি কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন। ভালো লাগলে কমেন্ট করে
জানাবেন।
এখন থেকে কলা খাওয়ার পর তা ফেলে না দিয়ে এসব কাজে ব্যবহার করতে পারেন। এতে কোন
সাইড ইফেক্ট নেই এবং প্রাকৃতিকভাবে উপকৃত হবেন। কলার খোসা দিয়ে নিয়মিত গাছের যত
নিতে পারেন। গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং গাছের স্বাস্থ্য ভালো হবে। পোস্টটি ভাল
লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন এবং অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
ডেইলি ডাইরির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url