সিস্ট দূর করার ৫ টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায়

সিস্ট দূর করার ঘরোয়া উপায় জানাবো আজকের পোস্টে। বর্তমান সময়ে নারীদের একটি বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জরায়ু সিস্ট। এর আগের পোস্টে আপনাদের জানিয়েছি সিস্টের কারণ এবং লক্ষণ সম্পর্কে। 

সিস্ট-দূর-করার-ঘরোয়া-উপায়
আমাদের নিত্য দিনের কাজে সিস্ট যেন এক বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে শারীরিক এবং মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ার অন্যতম কারণ জরায়ু সিস্ট। জেনে নেওয়া যাক ঘরোয়া পদ্ধতিতে সিস্ট দূর করার উপায়।

পেইজ সূচিপত্রঃ সিস্ট দূর করার ঘরোয়া উপায় 

সিস্ট দূর করার ঘরোয়া উপায় 

সিস্ট দূর করার ঘরোয়া উপায় আপনাদের সাথে আজ বিস্তারিত আলোচনা করব। বর্তমানে মহিলাদের সবচাইতে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জরায়ু সিস্ট। এটি অনেক ছোট একটি সমস্যা প্রথমে মনে হলেও একসময় ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রুপ ধারণ করতে পারে। প্রয়োজন হতে পারে সার্জারি বা অস্ত্রপাচার করানোর। অনেকেই এ ধরনের অপারেশনে ভয় পান বা করাতে চান না। 

তাই সঠিক উপায় মেনে ঘরে বসেই সিস্ট দূর করতে পারেন। নিয়মিত সঠিক খাওয়া-দাওয়ার মধ্য দিয়ে এবং সঠিকভাবে চলাফেরার মাধ্যমে সিস্ট এর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। সিস্টের সূচনার শুরুতেই কিছু পদক্ষেপ ফলো করলে তা আর বড় হতে পারে না। ছোট অবস্থায় সেরে যায়। তা না হলে বড় হতে হতে এক পর্যায়ে ফেটে গেলে তা জটিল আকার ধারণ করে। 

  • ১.হলুদ মেশানো দুধ পান করাঃ হলুদ মেশানো দুধ পান করা একটি ভেষজ উপায়। বেশ কিছু হারবাল উপকরণ এন্ডোক্রিন ব্যবস্থাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । সিস্ট দূর করতে হলুদ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • এক গ্লাস হালকা গরম দুধে এক চামচের অর্ধেক হলুদ মিশিয়ে তাপান করুন। এটি রক্তকে পরিষ্কার করে। পরিপাকে সাহায্য করে। ভালো ফলাফল পেতে ১০ থেকে ১৫ দিন নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধ পান করতে পারেন।
  • ২.হরমোনের মাত্রা বজায় রাখাঃ হরমোনের মাত্রা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওভিউলেশন নিয়মিত করতে ও প্রজনন তন্ত্রে রক্ত চলাচল বাড়াতে উপকার করে প্রাকৃতিক জিনিসগুলো। তাই হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন এতে হরমোন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
  • সিস্ট এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।সিস্ট এর উপসর্গ দেখা দেওয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ হলো ইস্ট্রোজেন হরমোনের নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে যাওয়া। ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে গেলে ওভিউলেসন অনিয়মিত হয়ে যায়। যার ফলে ডিম্বাশয় সিস্ট এর দেখা মেলে। তাই এটি থেকে মুক্তি পেতে ইস্ট্রোজেন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার চেষ্টা করুন।
  • পরিমিত প্রোটিন গ্রহণ করুন এটি ইস্ট্রোজেন বাড়াতে সাহায্য করে। যে কোন প্লাস্টিকের বোতল থেকে পানি অথবা কোমল পানীয় খাওয়া পরিত্যাগ করুন। প্লাস্টিকের বোতল শরীরে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায়। এর ফলে শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যায়।
  • ৩.খাদ্য গ্রহণঃ অভিজ্ঞদের মতে, অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং অনিয়মিত খাওয়া দেওয়ার জন্য ওভারিয়ান সিস্টের একটি প্রধান এবং অন্যতম কারণ। পরী এই জন্য খাদ্য তালিকা পরিমিত ফলমূল, শাক-সবজি, শস্য দানা বেশি পরিমাণে রাখা উচিত। এটি সিস্ট এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী সিস্টেম গড়ে তোলে। 
  • ৪.স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ করাঃ অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে ওভারিয়ান সিস্টের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এজন্য আপনার শরীরের বিএমআই নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করবেন। একজন সুস্থ মানুষের বিএমআই সব সময় ২৫ এর নিচে রাখতে হয়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে সিস্টের আশঙ্কা অনেকটাই কমানো যায়। 
  • ৫.পর্যাপ্ত পানি পান করাঃ সিস্ট এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারেন পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার মাধ্যমে। শরীরে পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অভিজ্ঞরা বলে থাকেন দিনে তিন থেকে চার লিটার পানি খাওয়া উচিত। 

সিস্ট দূর করার ব্যায়াম 

সিস্ট দূর করার ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সিস্টের বিরুদ্ধে। নিয়মিত কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখা সম্ভব। এছাড়াও সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া কিছু উপায়ের মধ্যে ব্যায়াম অন্যতম। তাই নিয়মিত পরিমান মত ব্যায়াম করা জরুরী। এটি আপনাকে ফিট রাখার পাশাপাশি সুস্থ রাখবে। শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পেলে অনেক কার্যকরী কাজগুলো সম্পন্ন হয়। যা আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজন। 

  • সিস্ট দূর করতে প্রতিদিন সকালে ২০ মিনিট জোরে জোরে হাঁটার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। এটি আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাই নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস তৈরি করুন। 
  • জগিং করতে পারেন। হালকা কিছু জগিং এর মাধ্যমে নিজেকে ফিট রাখতে পারবেন এমনকি সিস্ট প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবেন। 
  • এছাড়াও সাইকেলিং করতে পারেন। নিয়মিত সাইকেল চালানোর মধ্যে দিয়ে সিস্ট এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারেন।
  • সাঁতার খুব ভালো এক্সারসাইজ। নিয়মিত সাঁতার কাটার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন এর মাধ্যমে সিস্ট প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবেন। 
  • এছাড়াও করতে পারেন ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম। নিয়মিত করার মাধ্যমে নিজের ওজন কন্ট্রোলে রাখতে পারেন। ওজন বেড়ে গেলে সিস্ট এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। যোগ ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখতে পারেন। এটি সিস্ট এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলবে। 

কি খেলে ওভারি সিস্ট ভালো হয় 

কি খেলে ওভারি সিস্ট ভালো হয় তা আপনাদের বিস্তারিত জানাবো। সিস্ট একটি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমানে। তাই শরীর সুস্থ রাখতে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন কি খেলে ওভারি সিস্ট ভালো করা সম্ভব। তো নিয়মিত পুষ্টিকর খাবারগুলো খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এর মাধ্যমে সিস্ট এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা সম্ভব।

আরো পড়ুনঃমধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

ডায়েটের ফলমূল শাক সবজি রাখার চেষ্টা করুন। শস্যদানার পরিমাণ খাবার তালিকায় বেশি রাখুন এটি সিস্ট এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। অভিজ্ঞদের মতে অনিয়মিত খাওয়া দাওয়া একটি প্রধান কারণ ওভারি সিস্ট এর। তাই সঠিক সময়ে খাদ্য গ্রহণ করুন। খাবার তালিকায় পুষ্টিকর খাদ্য রাখার চেষ্টা করুন। এতে ওভারি সিস্টেম এর বিরুদ্ধে কার্যকারী প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলবে।

পর্যাপ্ত পানি খাওয়া 

পর্যাপ্ত পানি খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওভারি বা ডিম্বাশয়ে সিস্ট হলো একটি পিণ্ড যা ডিম্বাশয় ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরিমাণ মতো পানি পান করা এই জন্য খুবই জরুরী। পানি শরীরে নানা কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে। শরীরকে সতেজ রাখতে রক্ত সঞ্চালনে পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই পরিমাণ মতো প্রতিদিন পানি পান করার চেষ্টা করবেন।

সিস্ট-দূর-করার-ঘরোয়া-উপায়
অভিজ্ঞরা বলে পানি স্বল্পতার কারণে সিস্ট দেখা দিতে পারে। তাই রেগুলার তিন থেকে চার লিটার পানি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করবেন। পানি নানা রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। পানি ছাড়া শরীর সুস্থ থাকা অসম্ভব। শরীরের প্রতিটি কাজে পানির গুরুত্ব অপরিহার্য। তাই সিস্টোর করতে পানি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অতুলনীয়। পরিমাণ মতো প্রতিদিন পানি পান করার চেষ্টা করবেন।

ওভারি সিস্টের কারনে শরীরে কেমন পরিবর্তন দেখা দেয়

ওভারি সিস্ট এর কারনে শরীরে কেমন পরিবর্তন দেখা দেয় এটা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। শরীরের নানা পরিবর্তন চোখে পড়ে এই সমস্যার কারণে। তবে বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ওজন বৃদ্ধি পায়। অপ্রত্যাশিতভাবে অস্বাভাবিক ওজন হয়ে যায়। এটি ওভারি সিস্টের একটি লক্ষণ। এছাড়াও অন্যরকম উপসর্গও দেখা দিতে পারে। চলুন দেখে নিই কেমন পরিবর্তন হতে পারে। 

  • চিকন থেকে মোটা হয়ে যায় অনেকেই। অস্বাভাবিকভাবে ওজন বেড়ে যায়। 
  • আবার অনেকের ক্ষেত্রে উল্টোটা হয়ে থাকে। শরীর ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় অর্থাৎ মোটা থেকে রোগা হয়ে যায়। 
  • আরেকটি লক্ষ্যনীয় পরিবর্তন হলো হঠাৎ করেই শরীরের রং পরিবর্তন হয়ে যায়। এই সিনড্রোম একটি মারাত্মক সমস্যা। এক্ষেত্রে গায়ের রং পরিবর্তন হয়ে যেতে দেখা যায়। 
  • পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিস্ট এর আরেকটি উল্লেখযোগ্য সিনড্রোম হলো শরীরে অবাঞ্ছিত লোমের বৃদ্ধি। অর্থাৎ শরীরের ছোট ছোট লোমগুলো বৃদ্ধি পায়। 

সিস্ট প্রতিরোধে খাদ্য তালিকায় কেমন খাবার রাখতে হবে

সিস্ট প্রতিরোধে খাদ্য তালিকায় কেমন খাবার রাখতে হবে চলুন জেনে নেয়া যাক। সিস্ট আক্রান্ত মহিলাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কিছু খাদ্য দৈনন্দিন খাবার তালিকায় যুক্ত করা প্রয়োজন। চলুন দেখে নেওয়া যাক কি ধরনের খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আমরা সিস্টকে প্রতিরোধ করতে পারবো। সেইসব খাবার আপনাদের দৈনন্দিন খাবার তালিকার সাথে যুক্ত করে নিন। 

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় অর্থ উপার্জনের সাতটি আকর্ষনীয় উপায়

  • সিস্ট প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাদা রুটি আপনার খাবার তালিকায় যুক্ত করতে পারেন।
  • সাদা আলু প্রতিদিনের খাবারে রাখতে পারেন। তবে অতিরক্ত না খেয়ে পরিমিত খাওয়ার চেষ্টা করবেন। 
  • সাদা ময়দা দিয়ে তৈরি যেকোনো নাস্তা বা ফাস্টফুড খাওয়া। বাসায় নাস্তা করার সময় সাদা ময়দা দিয়ে তৈরি করার চেষ্টা করবেন। এদের রোগ প্রতিরোধ হবে এবং আপনি আপনার খাবার চাহিদা পূরণ করা হবে।
  • ডেজার্ট খাওয়ার চেষ্টা করবেন। অর্থাৎ দুগ্ধ জাত খাবার আপনার জন্য উপকারী হবে। 
  • সবজি রান্না করার সময় অতিরিক্ত সিদ্ধ করে ফেলবেন না। অতিরিক্ত সিদ্ধ সবজি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। 
  • সিস্ট দূর করনে পানির কোন বিকল্প নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এটি ওপরেও বর্ণনা করা হয়েছে। 
  • প্রতিদিন এক টুকরো করে আদা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। আদা খেয়ে কিছুটা ওভারি  সিস্ট এর সমস্যা দূর করা সম্ভব।
  • যেকোনো ধরনের বাদাম খেতে পারেন। যেমন:কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, কাঠবাদাম ইত্যাদি। কাজুবাদাম সিস্ট বৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অস্বাভাবিক বৃদ্ধি রোধ করে। এছাড়াও কাজুবাদাম হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সিস্ট এর বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • এছাড়াও খেতে পারেন অ্যালোভেরার জুস, যেকোনো হারবাল টি, আমল জুস, আমলকির জুস ইত্যাদি। এগুলো সিস্ট এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। 
  • ওভারি সিস্টের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে নিয়মিত ডাব অথবা নারকেলের পানি খেতে পারেন। এতে ভালো ফলাফল পাবেন আশা করছি। 
  • নিয়মিত শাক সবজি খেতে পারেন। শাক সবজির মধ্যে রাখতে পারেন সবুজ শাক, ব্রকলি, টমেটো,গাজর এবং নানা রকম ফ্রেশ শাকসবজি। তবে উচ্চফাইবার যুক্ত খাবার আপনার জন্য বেশি উপকারী হবে। 
  • এছাড়াও খেতে পারেন চর্বিবিহীন প্রোটিন। আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন মাছ এবং মুরগির মাংস। 
  • জলপাই খেতে পারেন নিয়মিত। এটি সিস্ট প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

সিস্ট কি বংশগতিয়

সিস্ট কি বংশগতিয় এ প্রশ্নের উত্তর আপনারা অনেকে জানতে চান। আপনাদের আজকের পোস্টে জানাবো সিস্ট বংশগতিয় কিনা। বংশগতিয় ধারা থেকে সিস্ট হতে পারে। তবে আপনি যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং নিয়মকানুন মেনে চলেন তাহলে সিস্ট প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে ওভারি সিস্ট যদি বংশগতিও হয় তাহলে এর ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

ওভারি সিস্ট থেকে মুক্তি পেতে হলে জীবন যাত্রার মান পরিবর্তন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওভারি সিস্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। এমন কিছু সিস্ট আছে যা ভেতরে ভেতরে জন্ম নিয়ে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। নীরব ঘাতকের মত কাজ করে। তাই নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে আপনার সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে।

সিস্ট হলে কেমন সমস্যা দেখা দেয় 

সিস্ট হলে কেমন সমস্যা দেখা দেয়। সিস্ট হলে কি ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ থাকতে হলে পর্যাপ্ত পানি ও খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু অনিয়মের জন্য সিস্ট এর সমস্যা দেখা দেয়। এবং নানা সমস্যায় পড়তে হয়। চলুন শেষ হলে কেমন সমস্যা হয় দেখে নেওয়া যাক। সিস্টের সমস্যাগুলোঃ

সিস্ট-দূর-করার-ঘরোয়া-উপায়
যেমনঃ

  • পেট ব্যথা করে 
  • মাসিক এর আগে অত্যন্ত পেট ব্যথা হয়। 
  • মাসিক নিয়মিত হয় না। 
  • অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায়। 
  • সন্তান ধারণে অসুবিধা হয়। 
  • মুখের রুচি চলে যায়। 
  • ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। 
  • মাথা ঘোড়া বা ঝিমঝিম এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। 
  • গা গুলায় বা বমি বমি ভাব হয়।

গর্ভাবস্থায় সিস্ট প্রতিরোধ করার উপায় 

গর্ভাবস্থায় সিস্ট প্রতিরোধ করার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন। গর্ভাবস্থায় সিস্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তাই এ সময় সাবধানে থাকতে হয়। প্রতিমাসে মাসিকের কারণে এই সৃষ্টির আবির্ভাব ঘটে। তার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। এক সময় বড় আকার ধারণ করে। আর সিস্ট ফেটে গেলে নানা রকম জটিলতায় পড়তে হয়। তাই গর্ভাবস্থায় সাবধানে চলা উচিত। গর্ভাবস্থায় সিস্ট প্রতিরোধে উপায় সমূহ জেনে নিনঃ

আরো পড়ুনঃ নরমাল ডেলিভারির জন্য প্রস্তুতি কিভাবে নিবো 

  • নিয়মিত চেকআপ করাবেন ।
  • ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। 
  • সিস্ট সম্পন্ন দূর হওয়ার পর বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিবেন। 
  • সিস্ট থাকলে গর্ভধারণ এ অসুবিধা হয়। 
  • সৃষ্টি নিরাময় না করে গর্ভবতী হলে পেটের বাচ্চা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
  • পরিমিত পানি খান। 
  • পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন। 
  • প্রয়োজনীয় শাকসবজি ফলমূল খান। বিশেষ করে জলপাই শেষ প্রতিরোধে উপকারী। 
  • সিস্ট সম্পূর্ণ দূর করতে এবং সঠিক ফলাফল পেতে নিয়মিত চেকআপ করুন তাহলে আপনার সুস্থতা আশা করা যায়। 

সর্বশেষ কথাঃ সিস্ট দূর করার ঘরোয়া উপায় 

সিস্ট দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আজকের পোস্টে বিস্তারিত জানিয়েছি। সিস্ট দূর করতে কি ধরনের খাবার খেতে হবে, কি ধরনের ব্যায়াম করতে হবে এবং গর্ভকালীন কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে সিস্ট এড়ানো যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হবেন। প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জানানোর চেষ্টা করেছি। 

সুস্থ থাকতে হলে শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে হবে। জীবনের প্রতিটি ধাপে নিজেকে নতুন করে তৈরি করতে হবে। কোন কিছুই যেন আমাদের বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। তাই সুস্থতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করুন। পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানাবেন। এছাড়াও আর কিছু জানার থাকলে প্রশ্ন করতে পারেন। ধন্যবাদ।

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডেইলি ডাইরির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url