কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় তার গোপন টিপস
কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় এই প্রশ্ন আপনারা অনেকেই করে থাকেন। অতিরিক্ত চর্বি বর্তমানে আমাদের অনেকেরই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকে ব্লগে আপনাদের পেটের চর্বি কমানোর উপায় সম্পর্কে জানাবো।
এছাড়াও আজকের পোস্টে জানতে পারবেন কি ধরনের ব্যায়াম এবং খাবার খাওয়ার মাধ্যমে পেটের চর্বি কমিয়ে ফেলা যায়। চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় তার গোপন কিছু টিপস সম্পর্কে।পেইজ সূচিপত্রঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
- কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
- পেটের চর্বি কমানোর ব্যায়াম
- পেটের চর্বি কমানোর খাবার
- পেটের চর্বি কমানোর ডায়েট চার্ট
- মেয়েদের পেটের চর্বি কমানোর উপায়
- ছেলেদের পেটের চর্বি কমানোর উপায়
- বেল্ট পড়লে কি পেটের চর্বি কমে
- বাচ্চা হওয়ার পর পেটের চর্বি কিভাবে কমানো যায়
- পেটের চর্বি কমানো কেন জরুরী
- শেষ কথাঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় এই দুশ্চিন্তা কমবেশি সকলেই করে থাকি। দশ জনের মধ্যে প্রায় সাত জনেরই একটা সময়ের পর এই সমস্যা দেখা দেয়। এটি খুব খারাপ পরিস্থিতির তৈরি করে অনেক অস্বস্তিকর অনুভব করায়। আমরা নিজেরাই কিছু ছোট ছোট ভুলের কারণে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি। শুধু পেটে নয়, শরীরের কিছু বিশেষ জায়গায় চর্বি জমতে দেখা যায়।
চলুন আজকের পোস্টে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়। পেটের চর্বি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার পেছনে একটি মূল কারণ খারাপ অভ্যাসগুলো। যেগুলো খারাপ জেনেও আমরা সচরাচর করে থাকি। এই অভ্যাসগুলো দূর করা গেলে চর্বি প্রতিরোধ করা যাবে। তাই ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে সুস্বাস্থ্যের সন্ধান পাওয়া সম্ভব।
খাওয়ার সময় তাড়াহুড়া না করাঃ খাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করা একদমই উচিত না। কিছুটা সময় ধরে খাবার চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়া উচিত। তাড়াহুড়ো করে খেলে বেশি খাওয়া হয়ে যায়। ব্রেন বুঝতে পারে না পেট ভরে গেছে কিনা। তাই তাড়াহুড়া না করে আসতে ধীরে খাবার খান। পরিমিত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে চর্বি বেড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবেন।
খাবারের প্রতি মনোযোগী হনঃ মনোযোগ সহকারে খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাওয়ার সময় তাড়াহুড়া না করে ধীরে ধীরে মনোযোগ সহকারে খান। এটির মাধ্যমে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বেঁচে যাবেন। আর অমনোযোগী হয়ে খাওয়ার অভ্যাস দূর করতে না পারলে পরিমিত খাবার প্লেটে তুলে নিন। বারবার খাবার না নিয়ে একবারে প্লেটে নিন এতে খাবারের পরিমাণ বোঝা যাবে।
নিয়মিত খাবার খানঃ খাবার নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন। এক বেলা বাদ দিয়ে পরের বেলায় গিয়ে বেশি বেশি খাবার খাবেন না। এটি পেটে মেদ বাড়ার একটি অন্যতম কারণ। যদি কোনো কারণে এক বেলার খাবার বাদ পড়ে যায় তবে পরের বেলায় পরিমিত খাওয়ার চেষ্টা করুন একদমই বেশি খাবেন না এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে।
অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুনঃ অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনারা অনেকেই আছেন পেট ভরে যাওয়ার পরও খেতেই থাকেন। পছন্দের খাবার হলে তো কোন কথাই নেই। এটি উচিত নয়। পেট কিছুটা ফাঁকা রেখে খাবার খান। খাওয়া শেষে পানি খান দেখবেন পেট ভরে যাবে। এক্ষেত্রে আপনি যে প্লেটে খাবার খাবেন সে প্লেটটি বড় না নিয়ে ছোট প্লেট ব্যবহার করতে পারেন।
কারণ বড় প্লেট নিলে সাধারণত প্লেটে যতটা খাবার ধরে আমরা ততটাই খেয়ে থাকি। ক্ষেত্রে ছোট প্লেটে খাবার খেলে কিছুটা খাবার কমানো সম্ভব। খাবার কমানোর মাধ্যমে অতিরিক্ত মেদ থেকে রক্ষা পেতে পারেন। এই পদক্ষেপটি গ্রহণ করুন দেখবেন ধীরে ধীরে খাবার কম পরিমাণে খেতে পারছেন। অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারছেন।
নিজেকে কন্ট্রোল করুনঃ অনেক সময় দেখা যায় কোথাও দাওয়াত খেতে গেলে অথবা বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গেলে খাওয়ার পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। কেউ বেশি বেশি খাবার তুলে দিলে সৌজন্যবোধ রক্ষা করতে আমরা প্লেটের খাবার নষ্ট করতে পারিনা তা বাধ্য হয়ে খেতে হয়। আবার খাওয়ার পরে মিষ্টি মিষ্টান্ন তো আছেই। এই সব অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসুন।
খাওয়ার পরে যদি মিষ্টি খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে খাবার কিছুটা কম খান। আর যদি আপনি মিষ্টি না খেতে চান তাহলে পরিমিত খাবার খান। প্রয়োজনের বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত খাবার খাবেন না এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে। অভ্যাসগুলোর জন্যই মেদ বেড়ে যায়। শরীরের চর্বি কমাতে হলে এই অভ্যাসগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
মেন্টালি সুস্থ থাকার চেষ্টা করুনঃ মেন্টালি সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন। দীর্ঘদিন মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। চর্বি বেড়ে যাওয়ার মত সমস্যায় করতে পারেন। দীর্ঘদিন মানসিক চাপে থাকার কারণে শরীরে কর্টিসল নামক একটি হরমোন ক্ষরণ হয়। এই হরমোনটি যদি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়ে যায় তাহলে মানুষের মিষ্টি জাত খাবারের ওপর আগ্রহ বেড়ে যায়।
আর অতিরিক্ত মিষ্টি জাত খাবার খেলে চর্বি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই মানসিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন। যদি অনেক বেশি মানসিক ভাবে অসুস্থ থাকেন তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। না হলে এটি একসময় বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে আপনার জন্য। তাই শরীরের হরমোন ঠিক রাখতে বেশি চাপ না নিয়ে হাসিখুশি থাকুন।
নিয়মিত ঘুমঃ নিয়মিত ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। ঘুমের সমস্যা হলে বা অতিরিক্ত রাত জাগলে শরীরের ওজন অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায়। নানা হরমোনাল পরিবর্তন আসতে পারে। ঘুম নিয়ে অনেক তর্কবিতর্ক রয়েছে। ঘুম কম হলে ওজন বেড়ে যায়। ছাড়াও অতিরিক্ত রাত জাগলে রাতে খিদা পায় তখন আবার যদি খাবার খান তাহলে শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বেড়ে যায়।
ফলে এটি চর্বি আকারে জমা হয় আপনার শরীরে। আপনি যদি সঠিক সময়ে ঘুমিয়ে যেতেন তাহলে আপনার খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হতো না আপনার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরিও বৃদ্ধি পেত না। রাতের বেলা অতিরিক্ত মিষ্টি জাত এবং ফ্যাট জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকুন। এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ঘুমের অভাব হলে আপনি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বেন। যার কারণে আবার শরীরে ওজন ও চর্বি বৃদ্ধির কারণ হবে।
দানাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুনঃ দানাযুক্ত খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। একেবারে ছেড়ে দেওয়া তো সম্ভব নয়। তবে শরীরকে সুস্থ রাখতে কিছুটা কমানো যেতেই পারে। যেমন ভাত পরিমাণে একটু কম খেয়ে সবজি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনার পেট তাড়াতাড়ি ভোরে যাবে এবং অতিরিক্ত চর্বি আপনার শরীরে প্রবেশ করবে না।
ফ্যাট যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুনঃ যেসব খাবারে ফ্যাট আছে সেসব খাবারগুলো কম পরিমাণে খান। কম পরিমাণে খেলে এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে না। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ফ্যাট এর পরিমাণ কম রাখুন। যতটুকু সুষম খাবারে প্রয়োজন ততটুকু খাওয়ার চেষ্টা করুন অতিরিক্ত ফ্যাট চর্বির একটি মুখ্য কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
চিনি যুক্ত বাম মিষ্টান্ন বর্জন করুনঃ চিনে যুক্ত বা মিষ্টান্ন বর্জন করুন। এটি আপনার শরীরের অস্বাভাবিক ভাবে ওজন বাড়িয়ে দিবে। তাই শরীরের চর্বি কমাতে এই অভ্যাসটি ত্যাগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত চিনি আপনার শরীরের ফ্যাট বাড়িয়ে দিবে। এছাড়াও নানা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই খান অপ্রয়োজনে খাওয়া বর্জন করুন।
সব সময় শুয়ে বসে থাকবেন নাঃ অতিরিক্ত শুয়ে বসে থাকলে শরীরে চর্বি জমে যাবে। তাই অতিরিক্ত শুয়ে বসে না থেকে একটু অ্যাক্টিভ থাকার চেষ্টা করুন। এতে আপনার ওজন এবং পেটের চর্বি কমানো সম্ভব। সব সময় শুয়ে থাকলে আপনার স্বাস্থ্য আরো খারাপ হবে। একটিভ থাকুন। মানসিকভাবে স্ট্রং থাকার চেষ্টা করুন। এগুলো আপনার চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
হাঁটাচলা করুনঃ সপ্তাহে অন্তত চার দিন দ্রুত ৪৫ মিনিট হাঁটার অভ্যাস তৈরি করুন। হাঁটাহাঁটি শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি গলিয়ে ফেলে। এবং আপনাকে হিট রাখতে সাহায্য করবে। নিয়মিত হাটার অভ্যাস তৈরি করুন। সারাদিন শুয়ে বসে না থেকে নিজেকে একটিভ রাখুন। যেকোনো প্রয়োজনে বাহিরে গেলে গন্তব্যস্থলে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করুন এতে হাঁটার অভ্যাস তৈরি হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস তৈরি করুন। এদের শরীরের মেদ কমানো সম্ভব অতিরিক্ত চর্বি গলার জন্য এটি একটি কার্যকরী উপায় হিসেবে। আপনার যদি কোন জিম সেন্টারে গিয়ে ব্যায়াম করা সম্ভব না হয় তাহলে বাসায় বসে google এবং youtube এ ভিডিও দেখে ব্যায়াম করার অভ্যাস তৈরি করুন। নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে চর্বি কমানো সম্ভব।
শাকসবজি খাওয়াঃ অতিরিক্ত ভাত না খেয়ে ভাতের পরিমাণ কমিয়ে দিন। এবং বেশি বেশি সবজি খান। এতে আপনার চর্বি বাড়বে না। সবজি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চর্বি কমাতে এটি সাহায্য করবে। তাই নিয়মিত সবজি খাওয়ার অভ্যাস করে তুলুন। যেমনঃ পালংশাক, ফুলকপি, ব্রকলি, করলা, শসা, বেগুন এবং যেকোনো শাক খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
ফল খাওয়াঃ নিয়মিত ফল খাওয়ার মাধ্যমে পেটের চর্বি কমাতে পারেন। অতিরিক্ত ফ্যাট জাতীয় খাবার থেকে বিরত থেকে কিছু উপকারী ফল খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের চর্বি কমাতে পারেন। যেমন: আঙ্গুর, আপেল, পেয়ার, কমলালেবু, অ্যাভোকাডো, পেঁপে, তরমুজ, বাঙ্গি, নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে চর্বি বেড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তাই এই নিয়মটি ফলো করতে পারেন।
পেটের চর্বি কমানোর ব্যায়াম
পেটের চর্বি কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের মাঝে দেওয়ার চেষ্টা করবো। সাধারণত নারী পুরুষ উভয় এই সমস্যার সম্মুখীন হতে দেখা যায়। অন্যান্য শরীরের তুলনায় পেটে একটু বেশি চর্বি জমে থাকে। যা খুবই দুঃখজনক এবং অস্বস্তিকর। তবে একটু সময় নিয়ে নিয়ম গুলো মেনে চললে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব। শুধু ব্যায়াম করলেই হবে না পাশাপাশি আপনার খাবারের দিকে মনোযোগী হতে হবে।
খাদ্যাভাসে আনতে হবে কিছু পরিবর্তন। বেশি বেশি করে না খেয়ে। অল্প অল্প করে দিনে কয়েকবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। এবং পানি খাওয়ার জন্য পেটে অবশ্যই জায়গা ফাঁকা রাখবেন। খেতে খেতে গলা পর্যন্ত খাবার তুলে ফেলবেন না। তাই খাবার কে নিয়ন্ত্রণ করে পাশাপাশি কিছু ব্যায়াম করার মাধ্যমে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব।
সিট আপ ব্যায়ামঃ এই ব্যায়ামটি সমতল একটি জায়গা অথবা মেঝেতে শুয়ে করতে পারেন। দুই হাঁটুর কাছে দুই হাত দিয়ে ধরুন তারপর উঠে বসুন আবার শুয়ে পড়ুন। এভাবেই করতে থাকুন কিছুক্ষণ। ১০ থেকে ১২ বার সিট-আপ ব্যায়ামটি করতে পারেন। কিছুক্ষণ ব্যায়াম করার পর একটু করে রেস্ট নিন। দিনে দিনে বেশি করে সিট আপ ব্যায়াম করার অভ্যাস তৈরি করুন।
পুশ আপঃ পুশ আপ ব্যায়াম এর মাধ্যমে আপনার মেদ কমাতে পারেন। একটি জায়গায় উপর হয়ে শুয়ে হাতের ওপর ভর করে উঠানামা করুন। প্রথমের দিকে দশবার করে চেষ্টা করুন। পরে সংখ্যা অবশ্যই বাড়ানো উচিত। প্রতিদিন সকাল অথবা সন্ধ্যায় একবার করে করার চেষ্টা করুন। পুশ আপ ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনার পেটের চর্বি কমানো সম্ভব।
ওয়ার্কিংঃ নিয়মিত হাঁটার চেষ্টা করুন। হাঁটার মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। পেটের মেদ কমাতে চাইলে এই নিয়মগুলো মেনে হাঁটাহাঁটি করুন। প্রথমে তিন মিনিট ধীরে ধীরে হাঁটুন তারপরের এক মিনিট অনেক জোরে হাটার চেষ্টা করুন। তারপর আবার তিন মিনিট ধীরে হাঁটুন এবং তারপর আবার এক মিনিট আসতে হাঁটুন। এভাবে ১৫ মিনিট হাটার অভ্যাস তৈরি করুন। দৈনন্দিন কর্মস্থলে হেঁটে যাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
জগিংঃ নিয়মিত জগিং করার মাধ্যমে খুব সহজেই পেটের চর্বি কমানো সম্ভব। পাঁচ মিনিট জগিং করার পর তিন মিনিট হেঁটে আসুন। আবার পাঁচ মিনিট জগিং করুন। এভাবে ২০ থেকে ২৫ মিনিট জগিং করতে পারেন। তবে এটি রেগুলার করলে আপনার জন্য ভালো ফলাফল দিতে সক্ষম হবে। সকাল সকাল উঠে জগিং করার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
যোগ ব্যায়ামঃ নিয়মিত সকাল সকাল যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। পেটের চর্বি কমাতে চাইলে এই পদক্ষেপটি অনুসরণ করুন। প্রতিদিন সকালে একটি মাদুর পেড়ে সেখানে বসুন এবং অবশ্যই সোজা হয়ে বসবেন। মেরুদন্ড সোজা রাখুন। এক পায় আরেক পায়ের মধ্যে সেটাপ করে নিন। তারপরে হাত দুটি টান করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিন। পেট একবার ভেতরে নিন আবার ছেড়ে দিন এভাবে কিছুক্ষণ করতে থাকুন।
পেটের ট্রেচিংঃ কোন সমতল জায়গায় সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত দুটি সোজা করে মুখমন্ডলের পিছনে নিয়ে যান। এবং পায়ের পাতা দিয়ে মেঝে ছোঁয়ার চেষ্টা করুন। এই সোজা হয়ে শুয়ে থাকার মাধ্যমে পেটের পেশীগুলো অনুভব করতে সক্ষম হবেন। ফলে পেটের চর্বি কমানো আপনার জন্য সহজ হবে। পাঁচ মিনিট করে করুন। নিশ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করুন।
ফ্লাটার কিকঃ প্রথমে একটি মাদুরের ওপর শুয়ে পড়ুন তারপর হাত দুটি মাদুরে রাখুন এবং পা মাধুরীর ওপর রাখুন। হাতের ওপর এবং পায়ের ওপর ভর করে পেট, বুক জাগানোর চেষ্টা করুন। আপনাকে দেখতে অনেকটা টেবিলের মত লাগবে। হাত-পা চারদিকে থাকবে আর মাঝখানে বডিটি জেগে থাকবে। কিছুদিন চেষ্টা করলেই আপনি এই ব্যায়ামটি শিখে যাবেন।
এই ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করার মাধ্যমে আপনার পেটের চর্বি কমাতে পারেন যারা প্রশ্ন করে থাকেন কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় তাদের জন্য আজকের এই পদক্ষেপটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। শুধু ব্যায়াম করলেও হবে না খাওয়া-দাওয়ার প্রতি একটু সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার খান ফ্যাট যুক্ত খাবার বর্জন করুন। এভাবেই ধীরে ধীরে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব।
পেটের চর্বি কমানোর খাবার
পেটের চর্বি কমানোর খাবার সম্পর্কে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো। চলুন জেনে নেওয়া যাক কি ধরনের খাবার খাওয়ার মাধ্যমে পেটের চর্বি কমাতে পারবেন। খাবারের ভালো-মন্দ দিক বিচার করে তারপর খাবার নির্বাচন করুন। প্রতিদিনের খাবারের শাকসবজি এবং ফল রাখা আপনার জন্য উপকারী হবে। ভালো ফলাফল পেতে পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করুন।
আরো পড়ুনঃ বেগুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- পালং শাকঃ পালং শাক ভীষণ পুষ্টিকর একটি খাবার। যেকোনো ধরনের শাক আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে। পেটের চর্বি কমাতে নিয়মিত পালং শাক খেতে পারেন।
- শসাঃ শসা আমাদের সকলের অনেক পছন্দের খাবার। আমরা কম-বেশি অনেকেই জানি পেটের চর্বি কমাতে শসা কতটা প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও স্বশা শরীর এবং ত্বককে সতেজ রাখে। নিয়মিত খালি পেটে শসা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের মেদ কমানো সম্ভব। ভাত কম খেয়ে পেট ভরে শসা খান।
- করলাঃ করলা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। করলার স্বাদ অনেকের পছন্দ নাও হতে পারে। তবে আপনারা জানলে অবাক হবেন তেতো খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি আপনার পেটের চর্বি কমাতেও ভূমিকা পালন করবে। খাবার লিস্টে নিয়মিত করলা রাখুন।
- ব্রকলিঃ ব্রকলি আপনার জন্য উপকারী খাবার। ব্রকলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার অর্থাৎ এটি আঁশ জাতীয় খাবার। যা আপনার শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে। তাই পেটের চর্বি কমাতে নিয়মিত ব্রকলি খান।
- ফুলকপিঃ স্বাস্থ্য রক্ষায় ফুলকপি দারুন ভূমিকা রাখে এর মতো ফুলকপি খাওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন এছাড়াও আপনার পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে ফুলকপি।
- বেগুনঃ বেগুন অনেক পছন্দের খাবার আমাদের সকলেরই। নিয়মিত বেগুন খেলে আপনার ওজন কমতে সাহায্য করবে সাথে পেটের চর্বি গলাতেও সাহায্য করবে। বেগুন খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করলে আপনার পেট ভরা অনুভুতি হবে ফলে খাওয়ার অভ্যাস কম করতে পারবেন আপনি।।
- আখরোটঃ নিয়মিত আখরোট খাওয়ার মাধ্যমে পেটে চর্বি কমানো সম্ভব তাই আপনার খাবারে আখরোট রাখার চেষ্টা করুন।
- কাঠবাদামঃ যেকোনো ধরনের বাদাম অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর হয় এবং পরিমাণ মতো খাওয়ার মাধ্যমে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব। তবে কাঠবাদাম আপনার জন্য বেশি উপকারী হবে।
- সামুদ্রিক মাছঃ পেটের চর্বি কমাতে সামুদ্রিক মাছ অত্যন্ত উপকারী। সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমাগো-৩ ফ্যাটি এসিড। এই পদার্থ পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে তাই নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন।
- ঝাল খাবার খানঃ যার খাবার আপনার পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে। এটি হয়তো আপনাদের অনেকের কাছেই অজানা। তবে ঝাল খাবার পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে ।
- ব্রেড বর্জনঃ যেকোনো ধরনের পাউরুটি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এটি আপনার পেটে স্থায়ীভাবে চর্বির জন্ম দেয়। ব্রেড খাওয়ার ফলে যে চর্বি আপনার পেটে জমা হয় তা গলানো সম্ভব হয় না। বিশেষ করে হোয়াইট ব্রেড। তাই এটি বর্জন করা আপনার জন্য উপকারী হবে।
- লাল চাল বা লাল আটাঃ নিয়মিত লাল চাল বা লাল আটা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। এগুলো ফ্যাট মুক্ত খাবার। এই খাবারের গুনাগুন থেকে ফ্যাটকে বর্জন করা হয়েছে। তাই আপনি নিয়মিত লাল চালের ভাত খেতে পারেন। এছাড়াও দৈনন্দিন কাজে লালা আটার ব্যবহার করতে পারেন।
- গ্রিন টিঃ প্রতিদিন সকালে উষ্ণ গরম পানির সাথে গ্রিন টি মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি টেস্ট খারাপহলেও খেয়ে আপনি উপকৃত হবেন।
- লেবুঃ ভাতের সাথে অথবা খালি মুখে লেবু খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। লেবুর শরবত খাওয়ার মাধ্যমে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব। তবে শরবতে অবশ্যই চিনি ব্যবহার করবেন না।
- লেটুস পাতাঃ প্রতিদিনের খাবারে হালকা করে লেটুস পাতা রাখতে পারেন। লেটুস পাতা মিশিয়ে যেকোনো শাকসবজি রান্না করতে পারেন। লেটুস পাতায় রয়েছে উচ্চমানের লুটেইন। যা আপনার চর্বি গলাতে সাহায্য করবে তাই নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন এটি আপনার জন্য উপকারী হবে।
- আনারসঃ পেটে চর্বি গলাতে নিয়মিত আনারসের জুস খেতে পারেন। আপনি যদি প্রতিদিন এক গ্লাস আনারসের জুস খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন তাহলে এটি আপনার জন্য খুব চমকপ্রদ ফলাফল নিয়ে আসবে।
- আঙ্গুরঃ পেটের চর্বি কমাতে আঙ্গুর ফল খুবই ভালো ফলাফল দেয় তাই এটি খেতে পারেন।
- আপেলঃ আপেলে রয়েছে নানা পুষ্টি উপাদান। আপেল ফাইবার যুক্ত খাবার। তাই নিয়মিত আপেল খাওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার পেটের চর্বি কমাতে পারেন।
- তরমুজঃ তরমুজ খেলে আপনার চর্বি কমানো সম্ভব। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পানি এখানে কোন ফ্যাট জাতীয় উপাদান নেই। নিয়মিত খাবার মাধ্যমে চর্বি কমাতে পারেন।
- পেঁপেঃ পেঁপেতে ফ্যাটের পরিমাণ অনেক কম থাকে। তাই কাঁচা অথবা পাকা যে কোন পেঁপে আপনি আপনার খাবার লিস্টে রাখতে পারেন।
- অ্যাভোকাডোঃ অ্যাভোকাডো নানা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। তাই নিয়মিত অ্যাভোকাডো খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। এটি আপনার চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
- পেয়ারাঃ চর্বি কমাতে পেয়ারা খেতে পারেন।
- কমলালেবুঃ কমলালেবু খেলে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব।
- স্ট্রবেরিঃ কবে দিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। জাবেদের চর্বি কমাতে সাহায্য করে থাকে। স্ট্রবেরি শরীরে মেটাবলিজম বাড়ায়। তাই নিয়মিত স্ট্রবেরি খেতে পারেন।
- কলাঃ কলা উচ্চ ফাইবার যুক্ত। তাই কলা খেলে আপনার চর্বি কমানো সম্ভব। কলা খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরে থাকে।
এভাবেই সুষম খাদ্য ভাসের অভ্যাস তৈরি করুন। এতে দ্রুত আপনার পেটের চর্বি কমে যাবে। তবে কখনোই এটা আশা করবেন না যে আপনার রাতারাতি ফলাফল আসবে। আপনার পেটের চর্বি একদিনে তৈরি হয়নি। দিনে দিনে তৈরি হয়েছে। তাই এটি কমাতে হলেও দিনে দিনে চেষ্টা করতে হবে। ভিটামিন-সি যুক্ত সুষম খাদ্য এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব।
পেটের চর্বি কমানোর ডায়েট চার্ট
পেটের চর্বি কমানোর ডায়েট চার্ট নিয়ে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো। পেটের চর্বি কমানোর জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট ডায়েট ফলো করতে হবে তাহলে আপনি আরো ভালো ফলাফল পাবেন। নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং নির্দিষ্ট ডায়েট চ্যাটের মাধ্যমে পেটের চর্বি দ্রুত কমানো সম্ভব। দেখেনি ডায়েট চার্ট কেমন হওয়া প্রয়োজন।
সকালঃ- সকালে একটি রুটি খাবেন। রুটি আকার ছোট হলে দুটি খেতে পারেন।
- সিদ্ধ ডিম খেতে পারেন তবে অবশ্যই কুসুমটি বাদ রাখবেন।
- সিদ্ধ ডিম না খেতে পারলে পানি পোস করে খেতে পারেন। অবশ্যই তেল ব্যবহার থেকে দূরে থাকবেন।
- পরিমাণ মতো টক দই খেতে পারেন।
- লো ফ্যাট যুক্ত দুধ খেতে পারেন।
- কমলা খেতে পারেন।
- অর্থাৎ সাইট্রিক এসিডযুক্ত যেকোনো ফল অথবা খাবার খান।
- এছাড়া সকালে কনফ্লেক্স খেতে পারেন।
- ওটস খেতে পারেন।
- প্রতিদিন সকালে হালকা কুসুম গরম পানির সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন এটি আপনার জন্য খুবই ভালো ফলাফল দিবে।
- অবশ্যই চিনি ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন।
- এছাড়াও মধু অবশ্যই হালকা কুসুম গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। না হলে এটি শরীরে স্যাচুরেটেড ফ্যাট হিসেবে জমা জমা হবে।
দুপুরঃ
- এক বাটি ভাত নিন সাথে মাছ-মাংস অথবা ডাল রাখতে পারেন।
- সবজি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- এছাড়াও খাবারের সাথে শসা, টমেটো, গাজর ইত্যাদির সালাত রাখতে পারেন।
- খাবার খাওয়ার সময় কাঁচা লবণ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। লবণ খাওয়ার অভ্যাস পরিহার করুন।
- উচ্চ ফ্যাট যুক্ত খাবার একটু কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- যেই খাবারই খান পরিমাণে কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। ভাতের জায়গায় সবজি একটু বেশি খাবেন।
বিকাল অথবা সন্ধ্যাঃ
- আমরা বিকাল অথবা সন্ধ্যার দিকে হালকা নাস্তা করতে পছন্দ করি। নাস্তায় ফ্যাট যুক্ত খাবার রাখবেন না।
- মুড়ি খেতে পারেন।
- পপকন খেতে পারেন।
- চিনি ছাড়া ছাতু খেতে পারেন।
- সুগার লেস বিস্কুট খেতে পারেন।
- টোস্ট বিস্কুট খেতে পারেন।
- রং চা অথবা দুধ চা খেতে পারেন তবে চিনি ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন।
- তেল যুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকুন।
- ফাস্টফুড এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।
রাতঃ
- সবজি অথবা মাংসের সুপ খেতে পারেন।
- এক বাটি সালাত খেতে পারেন।
- লো ফ্যাট যুক্ত দুধ খেতে পারেন।
- রাতে ঘুমানোর আগে টক দই খেতে পারেন।
- আপেল অথবা পেয়ারা খেতে পারেন।
- রাতে অন্য খাবারের তুলনায় বেশি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
মেয়েদের পেটের চর্বি কমানোর উপায়
মেয়েদের পেটের চর্বি কমানোর উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পেটে চর্বি দ্রুত জমে যায়। ছেলেদের শরীরে পেশী বেশি থাকে মেয়েদের শরীরে তুলনায়। তাই সমান খাবার খেলেও খাবার গুলোর ফ্যাট প্রত্যেক পেশীতে ভাগ হয়ে যায়। তাই ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের শরীরে চর্বি বেশি জমে থাকে। চলুন দেখে নেই মেয়েদের চর্বি কমানোর উপায়।
- নিয়মিত খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
- দ্রুত খাবার খাওয়া বর্জন করুন।
- খাবার খাওয়ার সময় মনোযোগী হন।
- আনমনে খাবার খাবেন না।
- বড় প্লেটের তুলনায় ছোট প্লেটে খাবার খেলে আপনার জন্য উপকারী হবে।
- ঘুমের রুটিন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- ফ্যাট যুক্ত খাবার পরিহার করুন।
- ভালো খাবার দেখলে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবেন না।
- সবজি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
- টক দই খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
- নিয়মিত ফল খেতে পারেন।
- শুধু খাবার খেলেই হবে না খাবার খাওয়ার পাশাপাশি হালকা ব্যয়াম করার অভ্যাস তৈরি করুন।
- অনেক মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় নিজেরা খাবার খাওয়ার পর বাচ্চাদের খাবার খাওয়ানোর সময় বাচ্চা যদি না খায় তবে বাচ্চার খাবার আবার খেয়ে নেন। পেট ভরা থাকা সত্ত্বেও এই কাজটি প্রায় প্রতিদিনই করে থাকেন। এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকুন।
- প্রতিদিনের খাবারে চিনির পরিমাণ কমিয়ে দিন না খাওয়া আরো ভালো।
- হাঁটাহাঁটির অভ্যাস তৈরি করুন। নিয়মিত এডিটিং গুলো ফলো করে শরীরে মেদ কমানো সম্ভব।
সাধারণত মেয়েদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে পেশির সংখ্যা কমতে থাকে। ফলে ইস্ট্রোজেন হরমোন হ্রাস পায় যার কারণে পেটে মেদ জমা হতে দেখা যায়। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের শরীরে পেশির সংখ্যা কম। তাই ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের দ্রুত চর্বি জমে। নিয়মিত খাবার ও ব্যায়াম এর মাধ্যমে আপনি তা কমাতে সক্ষম হবেন।
ছেলেদের পেটের চর্বি কমানোর উপায়
ছেলেদের পেটের চর্বি কমানোর উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। খাদ্যাভ্যাস এর জন্য সাধারণত পেটের চর্বি বৃদ্ধি পায়। ছেলেরা অনেক খাবার প্রিয় হয়ে থাকে। খাদ্য রসিক বাঙালি চোখের সামনে খাবার দেখলে যেন সবকিছুই ভুলে যায়। এভাবেই সপ্তাহে একদিনও ডায়েটের কথা মাথায় রাখে না। কিছু নিয়ম মানার মাধ্যমে ছেলেদের পেটের চর্বি কমানো সম্ভব । চলুন জেনে নিইঃ
আরো পড়ুনঃ শরীরে রক্ত বৃদ্ধি করার দশটি কার্যকরী উপায়
- চর্বি জাতীয় খাবার কমিয়ে দিন।
- অতিরিক্ত চা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- অথবা চা কফি খেলে চিনি ছাড়া খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- খাদ্য তালিকায় ফ্যাট জাতীয় খাবার কমিয়ে প্রোটিন বাড়ানোর চেষ্টা করুন।
- ফাইবার যুক্ত খাবার খান।
- সব সময় গাড়িতে যাতায়াত না করে হাঁটাচলার অভ্যাস তৈরি করুন।
- যদি সময় পান জিমে ভর্তি হতে পারেন এতে ভাল ফলাফল পাবেন।
- বাড়িতে যোগ ব্যায়াম করতে পারেন।
- সবজি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
- নিয়মিত ফল খান।
- খাবার দেখলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন।
- বাহিরের খাবার থেকে বিরত থাকুন। রেস্টুরেন্টে না খেয়ে বাড়ির খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- কর্মস্থলে হেঁটে যাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
- নেশা দ্রব্য থেকে বিরত থাকুন।
- ছেলেরা ফাস্টফুড বেশি খেয়ে থাকেন। ফাস্টফুড এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
- ঘুম নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- খাওয়ার সময় মনোযোগী হন।
- বড় প্লেটের তুলনায় ছোট প্লেটে খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
- স্বাস্থ্য সচেতন হন।
- অতিরিক্ত শুয়ে বসে থাকবেন না।
- হাটাহাটি করুন।
- ডায়েট চার্ট অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়া করুন তবে দ্রুত পেটের চর্বি কমানো সম্ভব। এ নিয়ম গুলো মেনে চললে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে পারবেন। তাই নিয়ম গুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন।
বেল্ট পড়লে কি পেটের চর্বি কমে
বেল্ট পড়লে কি পেটের চর্বি কমে এমন প্রশ্ন আপনারা অনেকেই করেছেন। এ প্রশ্নের উত্তর আজকে আপনাদের জানাবো। অনেকেই মনে করেন বেল্ট ব্যবহার করে পেটের চর্বি কমিয়ে ফেলবেন রাতারাতি। মনে রাখবেন এটি কখনোই সম্ভব নয়। শুধু বেল্ট ব্যবহার করে কখনো পেটের চর্বি রাতারাতি কমানো সম্ভব নয়। এর পাশাপাশি কিছু নিয়ম মানতে হবে।
বেল্ট ব্যবহার করার পাশাপাশি যদি আপনি কিছু নিয়ম অনুসরণ করেন তবে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। স্লিমিং বেল্ট অথবা যেকোনো বেল্ট ব্যবহার করে পেটে চর্বি কমানো যায় না। এই বেল সাধারণত ঘাম উৎপাদন করতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ করে দিয়েছে যে শুধু বেল্ট ব্যবহার করে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব নয়। বেল্টের প্রচার যেভাবে করা হয় তা ১০০ শতাংশ সত্যি নয়।
তবে আপনি নিয়মিত ব্যায়াম এবং পরিমিত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে অবশ্যই চর্বি কমাতে পারেন। বেল্ট ব্যবহারের পাশাপাশি এ বিষয়গুলো আপনার মেনে চলতে হবে তবে একটি ভালো ফলাফল পাবেন আশা করছি। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খান ফ্যাট যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। বেল্ট ব্যবহারের পাশাপাশি ব্যায়াম করুন। তবে একটি ভাল ফলাফল পাবেন বলে আশা করা যায়।
বাচ্চা হওয়ার পর পেটের চর্বি কিভাবে কমানো যায়
বাচ্চা হওয়ার পর পেটে চর্বি কিভাবে কমানো যায় এমন প্রশ্ন আপনারা অনেকেই করে থাকেন। বাচ্চা হওয়ার পর অনেকের এই সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত পেটের চর্বি বেড়ে যায়। চলুন যে দেখে নেওয়া যাক কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে বাচ্চা হওয়ার পর পেটের চর্বি কমাতে পারবেন আপনারা। গর্ভাবস্থার পরেও দেখে মনে হয় যেন পেটে আরেকটি বাচ্চা আছে। এই সমস্যার সমাধান দেখে নিনঃ
- বাচ্চা হওয়ার কিছুদিন পর হালকা-পাতলা ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন নিজের সুস্থতা। সুস্থ হওয়ার পরে শুরু করবেন। অপারেশনের পরপর ব্যায়াম করা শুরু করা যাবে না এতে ক্ষতি হবে।
- নিয়মিত শরীর চর্চা করুন। শুধু বাচ্চা হওয়ার পরে নয় গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করুন। এতে বাচ্চা হওয়ার পর ওজন কমিয়ে স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব।
- দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকুন।
- ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন।
- মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন।
- সঠিক পরিমাণে সুষম খাদ্য খান।
- সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- নিয়মিত পানি খান।
- ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- লাল আটা লালময়দা খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান অন্তত ছয় মাস। এটি আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
- পুষ্টিকর খাবার খান।
- তেল চর্বিযুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকুন।
- অতিরিক্ত শুয়ে বসে থাকবেন না।
- ধীরে ধীরে নিজের কাজগুলো নিজে করার চেষ্টা করুন।
- যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। এ নিয়মগুলো নিয়মিত মেনে চললে আপনি ভালো ফলাফল পাবেন। বাচ্চা হওয়ার পর পেটের চর্বি কমাতে এই নিয়মগুলো অবশ্যই ফলো করবেন।
পেটের চর্বি কমানো কেন জরুরী
পেটের চর্বি কমানো কেন জরুরী এটি নিয়ে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা সকলেই সুস্থ জীবন যাপন করতে চাই। ভালোভাবে বাঁচতে হলে সুস্থতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অস্বস্তি কর পেটের চর্বি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যেকোনো কাজ কঠিন করে দেয় অতিরিক্ত চর্বি। অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় প্রতিদিনের কাজে।
আরো পড়ুনঃ খাঁটি মধু কিভাবে চেনা যায়
এ কারণে পেটের চর্বি কমানো আমাদের জন্য জরুরি হয়ে পড়ে। এছাড়াও অতিরিক্ত চর্বি বাহ্যিক সৌন্দর্য অনেকটাই কমিয়ে দেয়। যে কোন পোশাক পড়ে আমরা স্বাচ্ছন্দ বোধ করি না। জামা কাপড় পড়ার পরে মনে হয় যেন পেটটা সামনের দিকে একটু বেশিই এগিয়ে এসেছে। এটি লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এজন্যই পেটের চর্বি কমানো এত জরুরী হয়ে পড়ে আমাদের কাছে। তাই পেটে চর্বি কমাতে এই নিয়মগুলো মেনে চলুন।
শেষ কথাঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় তা নিয়ে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পেটের চর্বি কমানোর সকল তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। কি ধরনের খাবার এবং কি ধরনের ব্যায়াম করলে তাড়াতাড়ি ফলাফল পাবেন তা জানতে পেরেছেন আজকের পোস্টে। এই সমস্যা যদি আপনারও থেকে থাকে তাহলে নিয়মগুলো অবশ্যই ফলো করা উচিত।
সুস্থভাবে জীবন যাপন করতে হলে শারীরিকভাবে ফিট থাকা খুবই প্রয়োজন। তাই আপনি যদি এই সমস্যায় পড়ে থাকেন এই সমাধান গুলো আপনার জন্য। সুষম খাদ্য খাওয়ার মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করবেন। আজকের পোস্টটি কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করছি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হবেন। ধন্যবাদ।
ডেইলি ডাইরির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url