ইলিশ মাছ চেনার ৫ টি উপায়
ইলিশ মাছ চেনার ৫ টি উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আজকের পোস্টে। ইলিশ মাছ
বাঙ্গালীদের কাছে খুবই প্রিয় একটি খাবার। কিন্তু আমাদের সঠিক ইলিশ চিনতে খুবই
অসুবিধা হয়। আজকের পোস্টে জেনে নিন ইলিশ মাছ চেনার উপায়।
এছাড়াও আজকের পোস্টে জানতে পারবেন ইলিশ মাছ সম্পর্কে নানান তথ্য। ইলিশ মাছের
উপকারিতা,অপকারিতা,ইলিশ মাছের আইন ইলিশ মাছের ডিম সহ আরো বিষয়ে আজকে আপনাদের
সাথে আলোচনা করব এই পোস্টে।
পেইজ সূচিপত্রঃ ইলিশ মাছ চেনার ৫ টি উপায়
- ইলিশ মাছ চেনার ৫ টি উপায়
- ইলিশ মাছ খাওয়ার উপকারিতা
- ইলিশ মাছের অপকারিতা
- ইলিশ মাছ কোথায় ডিম পাড়ে
- ইলিশ মাছের আইন
- মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ কেন?
- ইলিশ মাছের ডিমের উপকারিতা
- ইলিশ মাছ খেলে কি গ্যাস হয়
- ইলিশ মাছ খেলে কি এলার্জি হয়
- ইলিশ মাছ খেলে কি ওজন বাড়ে
- ইলিশ মাছের খাদ্যাভাস এবং অন্যান্য তথ্য
- মন্তব্যঃ ইলিশ মাছ চেনার উপায়
ইলিশ মাছ চেনার ৫ টি উপায়
ইলিশ মাছ চেনার ৫ টি উপায় তুলে ধরব আপনাদের সামনে। ইলিশ মাছের কাছে বাঙ্গালীদের
যেন এক দুর্বলতা। ইলিশ মাছ পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। প্রতিটা
বাঙালির বাড়িতে বছরে একবার অন্তত ইলিশ মাছ আসবেই। ইলিশের কত রকমের আইটেম যেন
একটা থেকে আরেকটি বেশি স্বাদযুক্ত। কোনটা রেখে কোনটা খাই এমন অবস্থা হয়ে যায়।
সরিষা ইলিশ, ইলিশের পাতলা ঝোল,বেগুন দিয়ে ইলিশের ঝোল, কচু শাকের সবজি, ইলিশের
লেজা ভর্তা এছাড়া নানান পদ রান্না হয় আমাদের সবার বাসায়। কিন্তু আজকাল আসল
ইলিশ চেনা বড় কঠিন হয়ে গেছে। ও সাধু ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে ঠকানোর চেষ্টা
করছে। তাই ৫ টি উপায় মাথায় রাখুন। এতে সঠিক ইলিশ বাছাই করতে পারবেন। যেমনঃ
১. পদ্মা ও মেঘনার ইলিশঃ পদ্মা নদীর ইলিশ বরাবরই পছন্দ সকলের কাছে। পদ্মার
ইলিশ হয় খুবই সুস্বাদু। পদ্মার ইলিশ চেনার একটি সহজ উপায় হলো পদ্মার ইলিশ হয়
খুবই উজ্জ্বল। শুধু পদ্মার নয় সকল নদীর ইলিশ গুলোই অনেক বেশি চকচকে হয়। গায়ের
রং রুপোর মত ঝকঝক করে।
২.সাগরের ইলিশঃ সাগরের ইলিশ নদীর ইলিশের মতো এত বেশি চকচকে হয় না। সাগরের
ইলিশ তুলনামূলক কম চকচকে হয়।
৩. ইলিশ মাছের বৈশিষ্ট্যঃ যে ইলিশ যত বেশি রুপোর মত চকচকে হবে সেই ইলিশ
খেতে তত বেশি সুস্বাদু হবে। ইলিশ মাছের দেহটি হবে লেজ ও মাথার দিকে কিছুটা সরু।
এবং মাঝখানে মানে পেটের কাছে একটু মোটা বা ওসার হবে। ইলিশের মুখ যত সরূ ইলিশ তত
বেশি সুস্বাদু।
ইলিশ মাছের কানটা জাগিয়ে ফুলকাটা দেখে নিবেন। ইলিশ মাছের ফুলকা যদি লাল টকটকে
থাকে তাহলে সেটি টাটকা ইলিশ। আর যদি কালার পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে সেটি সতেজ
মাছ নয়। তাজা ইলিশের বা আসল ইলিশের একটি সুন্দর সুঘ্রাণ থাকে। আর ইলিশ টি আসল না
হলে তার সুঘ্রাণ হারিয়ে ফেলে।
৪. ইলিশ মাছের গন্ধঃইলিশ মাছের গন্ধ শুধু আসল মারছেই পাওয়া যাবে। মাছটি
যদি তাজা এবং টাটকা হয় তবে মাছ থেকে প্রত্যাশিত গন্ধটা পাবেন। মাছ কেনার সময়
হাতে নিয়ে দেখবেন ।মাছটি হাতে নেওয়ার পর যদি সোজা থাকে তাহলে মাছটি সতেজ আছে।
আর যদি লেজ অথবা মাথা হেলে যাচ্ছে নিচের দিকে তাহলে মাছটি পুরনো বা টাটকা নয়।
৫.ইলিশ মাছের চোখঃ ইলিশ মাছের চোখ দেখেও আসল মাছ কিনা যাচাই করা
যায়। ইলিশ মাছের চোখ হয় সচ্ছ এবং উজ্জ্বল। মাছের চোখ যদি ধূসর কালার হয় তাহলে
সে মাছটা আসল নয়। চোখটা যদি নীলচে হয় তাহলে মাছটি সতেজ এবং আসল ইলিশ।
ইলিশ মাছ খাওয়ার উপকারিতা
ইলিশ মাছ খাওয়ার উপকারিতা চলুন জেনে নেওয়া যাক। ইলিশ মাছ খুবই সুস্বাদু একটি
খাবার। কমবেশি সবাই খেয়ে থাকি। তবে ইলিশ মাছ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে কতজন
জানি। চলুন কিছুটা ধারণা নিয়ে আসি। প্রতি ১০০০ গ্রাম বা ১ কেজি পিসি
প্রায় ২৫ গ্রাম ওমেগা-৩(ইপিএ ডিএইচএ) ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। অন্যান্য মাঝে
তুলনায় স্যাচুরেটেড চর্বির পরিমাণ খুবই কম এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বেশি থাকে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমায়। রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। রক্তনালী সচল রাখে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। তুলনামূলক ইলিশ মাছের চর্বি কম থাকায় হার্ট কে সুস্থ রাখে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খুবই সাহায্য করে। ইলিশ মাছে রয়েছে EPA,DHA.
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়।
- প্রদাহ কমাতে ভীষণভাবে সাহায্য করে।
- ত্বকের উন্নতি করে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ে।
- ইলিশ মাছে থাকে ভিটামিন-এ ভিটামিন-ডি এবং ভিটামিন-ই।
- ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার খুবই কম দেখা যায়। তাই ভিটামিন-ডি এর উৎস হিসেবে ইলিশ মাছ পারফেক্ট। ভিটামিন-ডি এর অভাবে শিশুদের হতে পারে রিকেটস রোগ আর বয়স্কদের হয় নানা রকম রোগ।এছাড়াও ভিটামিন-এ রয়েছে ইলিশ মাছের যা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। ভিটামিন এর অভাবে হতে পারে রাতকানা রোগ। ভিটামিন-ই আমাদের স্কিন ভালো রাখে এবং চুলের যত্নে ভিটামিন-ই খুবই প্রয়োজনীয়।
- ইলিশ মাছে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন যা কোলাজানের একটি অন্যতম উপাদান হিসেবে কাজ করে।
- কোলাজেন ত্বক ফিট এবং মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। তারুণ্য ধরে রাখে। ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষার্থে কাজ করে ওমেগা-৩। ত্বকের ক্ষতি প্রতিরোধ করে।
- এছাড়াও ইলিশ মাছের রয়েছে ভিটামিন বি ১২, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, নাইসইন সহ অন্যান্য ভিটামিন। এছাড়াও ইলিশ মাঝে রয়েছে খনিজ বিশেষ। ফসফরাস দাঁত কে ভালো রাখে। ক্যালসিয়াম আর কে পুষ্টি প্রদান করে। এবং বাকি উপাদান সহ লৌহ স্বাভাবিক শরীর বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশে একটি বড় অবদান রাখে।
- চোখ ভালো রাখে। চোখের সুস্থতায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের গুরুত্ব অপরিসীম। চোখ উজ্জ্বল হয় সুস্থ থাকে। এবং বয়সকালে দৃষ্টিহীনতা সাথে মোকাবেলা করতে সাহায্য করে।
- ইলিশ মাছে আরজিনিন থাকায় তা ডিপ্রেশন দূর করতে সাহায্য করে। এবং এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড অবসাদ এর সাথে মোকাবেলা করতে সাহায্য করে।
- ইলিশ নিজের এই নানা পুষ্টিগুণ আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণ। নিয়মিত খেলে পাকস্থলীর আলসার ও কলিটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
- এমন নানা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর ইলিশ মাছ। আমাদের শরীরের নানা চাহিদা মিটিয়ে থাকে। এবং শরীরের ক্ষয় পূরণ করে সুস্থ রাখে।
ইলিশ মাছের অপকারিতা
ইলিশ মাছের অপকারিতা সম্পর্কে আজকে আপনাদের জানাবো। কোথায় আছে কোন কিছুই
অতিরিক্ত ভালো না। প্রতিদিন ইলিশ মাছ খেলে কি কি সমস্যায় পড়তে পারে তা নিয়ে
থাকছে এই পোস্টে কিছু আলোচনা। চলুন জেনে নেওয়া যাক কেমন সমস্যা থাকলে ইলিশ মাছ
থেকে দূরে থাকা উচিত। এবং অতিরিক্ত ইলিশ খেলে কি কি সমস্যায় পড়তে পারেন আপনারা
তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আরো পড়ুনঃআমাদের জিবনে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ কেন
-
ইলিশ মাছ খুবই সুস্বাদু এবং উপকারী তবে যাদের কিডনির ক্রনিক অসুখ রয়েছে তাদের
ইলিশ মাছ থেকে দূরে থাকাই ভালো।
- সি ফুড এলার্জি চাঁদের রয়েছে তারা ইলিশ মাছ এড়িয়ে চলুন।
- বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, ইলিশ প্রতিদিন খেলে বা পরিমানে বেশি খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।
- এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাম্প্রতিক নোটিফিকেশন এর তালিকাভুক্ত ১২০ রকমের সামুদ্রিক মাছ যাদের অতিরিক্ত উদরস্থ করলে হিস্টামিন বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা প্রবল পরিমাণে পাওয়া যায়। সামুদ্রিক বিভিন্ন মাছের মধ্যে রয়েছে ইলিশ মাছ ও।
-
সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার প্রবণতা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। তাই এটি নিয়ে
বিশেষজ্ঞরা যখন গবেষণা শুরু করে তখন ইলিশ সহ কিছু সামুদ্রিক মাছে এ ধরনের
হিস্টিডিন এমিনো এসিডের উপস্থিতি অত্যাধিক। এটি থেকে তৈরি হয় হিস্টামিন যার
শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে।
- হিস্টামিনের পরিমাণ বেশি থাকায় এলার্জিক প্রতিক্রিয়া হয়। গবেষণায় দেখা গেছে ১৮০ থেকে 190 মিলিগ্রাম হিসটামিন আমাদের শরীর কোন সমস্যা ছাড়াই নিতে পারে তবে এর পরিমাণ বেড়ে গেলে অবশ্যই সমস্যা হবে। তাই পরিমাণ মতো খান একসাথে অনেকগুলো টুকরো না খাওয়াই ভালো।
- গর্ভবতী মহিলারা খুব বেশি পরিমাণে ইলিশ খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। এতে আপনার পেটের বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। তবে পরিমাণ মতো দুই এক টুকরা খেতে পারেন। কারণ ইলিশে রয়েছে হিস্টামিন যা বিষক্রিয়া করে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।
ইলিশ মাছ কোথায় ডিম পাড়ে
ইলিশ মাছ কোথায় ডিম পাড়ে? প্রতিবছর মেঘনা-পদ্মা-যমুনা মোহনার হাওর থেকে প্রচুর
পরিমাণে ইলিশ মাছ ধরা হয়। এই নদীর ইলিশ মাছ গুলোই আমাদের কাছে পৌঁছে দেয় মাছ
ব্যবসায়ীরা। কিন্তু আপনারা জানলে অবাক হবেন ইলিশ একটি সামুদ্রিক মাছ। ইলিশ মাছ
সাগরে বসবাস করে। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ মাছের ডিম দেওয়ার মৌসুম।
এ সময় ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ।
এই ডিম দেওয়ার মৌসুমে ইলিশ মাছ সাগর থেকে নদীতে আসে। কারণ ডিম দেওয়ার জন্য
উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে নদী। নদীতে রয়েছে স্রোত তাই ইলিশ মাছের ডিম দেওয়ার
উপযুক্ত জায়গা। এ সময় ইলিশ মাছ ডিম দিয়ে যখন আবার সাগরে ফিরে যায় তখন জেলেদের
জালে ধরা পড়ে। এই দিন ফুটে গেলে বাচ্চা ইলিশের জন্ম হয়। বাচ্চা ইলিশ কে আমরা
ঝাটকা বলে থাকি।
ইলিশ মাছ যখন বড় হয়ে যায় তখন তারা আবার সাগরে ফিরে যায়। সাগরের ফেরার পথে এই
ইলিশ গুলোও জেলের জালে আটকা পড়ে। তবে মা ইলি শ ধরা নিষিদ্ধ। চাহিদা অনুযায়ী
ইলিশ মাছের সরবরাহ কম। বিশেষ করে যখন কোন অনুষ্ঠান বা উৎসব এর আয়োজন হয় তখন
ইলিশ মাছের চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে যায়। একটি ইলিশ বিশ লক্ষেরও বেশি ডিম ছাড়ে।
সারা বছর ডিম ছাড়লেও এ সময়টা (সেপ্টেম্বর ,অক্টোবর)বেশি ছাড়ে।
ইলিশ মাছের আইন
ইলিশ মাছের আইন সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা উচিত। এটি বাংলাদেশ সরকার নির্ধারিত।
আইনের বাইরে গেলে অবশ্যই তাদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা আইনের বাইরে গিয়ে মাছ
বিক্রি করবে অথবা কিনবে তাদের জন্য রয়েছে উপযুক্ত শাস্তি এবং জরিমানা। অসময়ে
ইলিশ মাছ ধরা যাবে না। সরকার থেকে নির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ করা হবে সেই দামেই ইলিশ
মাছ বিক্রি করতে হবে।
সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। এ সময় মা ইলিশ সাগর থেকে নদীতে আসে
ডিম ফোটাতে। মা ইলিস ধরা আইনত অপরাধ। কারণ এভাবে মা ও ইংলিশ ধরলে ইলিশ মাছের
বিলুপ্তি ঘটবে। তাই এ সময় কেউ মাছ ধরতেও পারবেনা আবার কিনতেও পারবেনা। ইলিশ
মাছের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে মাইলিশ কে রক্ষার্থে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা
হয়েছে। এই ধারাবাহিকতার একমাত্র কারণ ইলিশ মাছের বংশ রক্ষা এবং সংরক্ষণ।
আমরা সবাই জানি মাছ প্রজনন করতে না পারলে তা বৃদ্ধি পাবে না। তাই এই সম্পর্কে
মানুষকে জানাতে নানা রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং মাঝি ভাইদের সাবধান করা হয়।
মাছের প্রজনন নিশ্চিত করতে নানা রকম নির্দেশনা দেওয়া হয় মাঝিদের। মৎস ও
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এর কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান
চলাকালে আইন লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ কেন?
মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ কেন? মা ইলিশ ধরা আইনত অপরাধ। মা ইলির ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা
হয়েছে। এই অপরাধের জন্য কঠোর সাজার ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রজননের মাধ্যমে মা ইলিশ
অনেক বাচ্চা ফোটাতে সক্ষম। বংশবিস্তারের জন্য মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা
হয়েছে। মা ইলিশ ডিম পাড়ার সময় সাগর থেকে নদীতে উঠে আসে সেপ্টেম্বর অক্টোবর
মাসের দিকে সেই সময় ইলিশ ধরা নিষেধ।
আরো পড়ুনঃ নকশি কাঁথা সম্পর্কে তথ্য
চাহিদার তুলনায় ইলিশ কম। এর ওপর আবার যদি মা ইলিশ ধরা হয় তাহলে বংশবিস্তার কমে
যাবে। এমনকি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। হুমকির মুখে পড়বে সামুদ্রিক মাছ ইলিশ।
দীর্ঘ সময়ের জন্য মাছের প্রাপ্যতা ধরে রাখার জন্য এটি খুবই জরুরী। আইননীতির ওপর
ভিত্তি করে বাংলাদেশ সরকার মৎস্য সংরক্ষণ আইন প্রয়োগ করে থাকে। এই আইনের নীতি
অনুসারে প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ।
এ সময় মাছ বিক্রি নিষিদ্ধ আবার কেনাও আইনত অপরাধ। ইলিশের বংশবিস্তার নিশ্চিত
করার জন্য এ আইন গ্রহণ করা হয়েছে। কমবেশি সারা বছর ইলিশ ডিম দেয় তবে প্রজনন
মৌসুমে তা কয়েকগুণ বেশি। একটি ইলিশ প্রজনন মৌসুমে কম করে ২০ লক্ষ ডিম দেয়।
প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা পড়লে বংশবিস্তার রোধ হবে মূলত এই কারণেই মাইলির ধরা
নিষিদ্ধ।
ইলিশ মাছের ডিমের উপকারিতা
ইলিশ মাছের ডিমের উপকারিতা প্রচুর। ইলিশ মাছ নিজেই বিভিন্ন রকম পুষ্টিগুণ এর
সমৃদ্ধ তেমনই ইলিশ মাছের ডিমও রয়েছে নানারকম পুষ্টিগুণ। ইলিশ বাঙালির কাছে খুবই
জনপ্রিয় একটি খাবার। ইলিশ মাছ এর ডিম খেয়ে আমরা কি কি উপকার পেতে পারি তা নিচে
আলোচনা করব। এছাড়াও ইলিশ মাছের ডিম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যেমনঃ
- রক্ত সচ্ছ হয়।
- ইলিশ মাছের ডিম খেলে গায়ে রক্ত বাড়ে রক্তস্বল্পতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- এছাড়াও এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন।
- ইলিশ মাছে রয়েছে ফ্যাটি এসিড যা হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। হৃদপিণ্ডের চলন অব্যাহত রাখে।
- রক্ত জমাট বাধা থেকে রক্ষা করে।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
- প্রেসারের রোগীর জন্য উপকারী এটি রক্তচাপ কমিয়ে দেয়।
- মাছের ডিম ভিটামিন-এ সহ ভিটামিন-ডি এ ভরপুর। যা রাতকানা রোগ থেকে মুক্তি দেয় এবং শিশুদের রিকেটস রোগ থেকে বাঁচায়।
- ইলিশ মাছের ডিমে রয়েছে ভিটামিন-এ যা চোখের জন্য খুবই উপকারী।
- ইলিশ মাছের ডিমে নানা ভিটামিন রয়েছে যাহার মজবুত করতে সাহায্য করে।
- দাঁতের মাড়ির জন্য ভীষণ উপকারী ভূমিকা পালন করে ইলিশ মাছের ডিম।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । এভাবে নানা গুণে ভরপুর ইলিশ মাছের ডিম যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করে দেয় এবং সুস্থ জীবন যাপনের সাহায্য করে।
ইলিশ মাছ খেলে কি গ্যাস হয়
ইলিশ মাছ খেলে কি গ্যাস হয়? এ প্রশ্নের উত্তর হল ইলিশ মাছ খেলে গ্যাস হয় না।
আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর ইলিশ মাছ এবং ইলিশ মাছের
ডিম। আমাদের শরীরের চাহিদা মেটাতে মাছ খাওয়া বাধ্যতামূলক। আবে কোন মাঝে যদি
আপনার অ্যালার্জি থাকে বা খাওয়া নিষেধ থাকে তবে সেটা এড়িয়ে চলাই ভালো। তবে
খেয়াল রাখতে হবে আপনি কতটুকু খাচ্ছেন।
খাওয়ার পরিমাণ এর ওপর নির্ভর করবে আপনার সুস্থতা। কোন কিছুই বেশি ভালো নয়।
পরিমিত খেলে আপনার গ্যাস হবে না। আপনি যদি মাত্রা অতিরিক্ত খান তাহলে গ্যাস
হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মাত্রা অতিরিক্ত খেলে পাকস্থলী তার প্রয়োজনীয় পরিমাণ মতো
হরমোন খরণ করতে ব্যর্থ হবে যার কারণে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে আপনি
পরিমাণ মতো খেলে গ্যাসের কোনো সমস্যা হবে না।
ইলিশ মাছ খেলে কি এলার্জি হয়
ইলিশ মাছ খেলে কি এলার্জি হয়? ইলিশ মাছ খেলে এলার্জি হয় না। তবে আপনার যদি
সিফুডে অ্যালার্জি থাকে তাহলে ইলিশ মাছ থেকে দূরে থাকাই ভালো। আপনি জানলে অবাক
হবেন যে ইলিশ একটি সামুদ্রিক মাছ। ডিম পাড়ার জন্য নদীতে আসে। ডিম পেরে সমুদ্র
ফিরে যাওয়ার সময় জেলের জালে আটকা পরে। আবার অনেক ইলিশ ডিম থেকে ফুটে সমুদ্রে
যাওয়ার সময় জালে আটকা পড়ে। তাই এটি সামুদ্রিক মাছ।
আরো পড়ুনঃ ঘুম কমানোর উপায়
তাই আপনার যদি সামুদ্রিক মাছে এলার্জি থাকে তাহলে ডিম থেকে এবং ইলিশ মাছ থেকে
দূরে থাকেন। আর যদি ভুলে খেয়ে ফেলেন তারপর দেখেন আপনার সমস্যা হচ্ছে তাহলে
ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সামুদ্রিক মাছ যেমন: চিংড়ি, ইলিশ ,ফ্লুইড, ইত্যাদিতে
এলার্জি হয় বেশি যাদের এসব মাঝে এলার্জি আছে বা খাওয়ার পর একটা প্রতিক্রিয়া
দেখা দেয় তারা দূরে থাকবেন। সবার জন্য নিষিদ্ধ নয়।
ইলিশ মাছ খেলে কি ওজন বাড়ে
ইলিশ মাছ খেলে কি ওজন বাড়ে? ইলিশ মাছ খেলে ওজন বাড়ে না যদি আপনি পরিমিত খান।
ইলিশ মাছ নানা উপাদানে ভরপুর। মানব দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিশু এবং বয়স্কদের জন্য খুবই উপকারী। তবে গর্ভবতী মহিলারা একটু ডাক্তারের
পরামর্শ নিয়ে খাবেন। ছোট বাচ্চার ব্যাপার। ইলিশ মাছের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি
উপাদান ভিটামিন এ ভরপুর।
১০০০ গ্রাম বা ১ কেজি ইলিশে আনুমানিক ৩১০০ ক্যালোরি, ২২০ গ্রাম প্রোটিন, ও 190
দশমিক ৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে। অন্যান্য মাছের তুলনায় ইলিশ মাছে সেচুরেটেড চর্বির
পরিমাণ কম এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বেশি থাকে। যার রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড কমিয়ে
দ্রুত ভালো চর্বি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই বলা যায় ইলিশ মাছ খেলে অতিরিক্ত ওজন
বাড়বে না। আপনার খাদ্য তালিকা ইলিশ মাছ রাখতে পারেন।
ইলিশ মাছের খাদ্যাভাস এবং অন্যান্য তথ্য
ইলিশ মাছের খাদ্যাভাস এবং অন্যান্য তথ্য নিয়ে জানাবো আপনাদের। ইলিশ মাছ ডিম
পাড়ার সময় নদীতে আসে এই সময় তারা নদীর মোহনায় এবং উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান
করে।ইলিশ মাছের খাদ্য ভাস প্রধানত প্লাঙ্ককটন খেয়ে বেঁচে থাকে। ইলিশ মাছ মূলত
সামুদ্রিক মাছ নোনা পানিতে বেঁচে থাকে। তবে এরা সাধু পানিতেও বসবাস করতে পারে।
ডিম পাড়ার সময় এরা সাধু পানিতেই অবস্থান করে।
এছাড়াও তারা চোখ জুপ্ল্যাংকটন এবং ফ্লাইটোপ্লাংকটন হে জীবন যাপন করে। এগুলো
সাধারণত কিশোর ইলিশের খাবার। কিশোর অবস্থায় ইলিশ মাছের বৃদ্ধও খুব দ্রুত হয়। ১২
মাসে তাদের প্রায় ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে দেখা যায়। প্রাপ্তবয়স্ক
ইলিশ ২৫ থেকে ৪৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ওজন হয় এক থেকে দেড় কেজি। ইলিশ মাছের
বাচ্চা প্রজননের জন্য দুই থেকে তিন বছর সময় লাগে।
মন্তব্যঃ ইলিশ মাছ চেনার উপায়
ইলিশ মাছ চেনার উপায় এবং ইলিশ মাছের নানা তথ্য নিয়ে আপনাদের সাথে আজকের পোস্টে
আলোচনা করেছি আশা করি উপকৃত হবেন। ইসমাস কেবল খাদ্য তালিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ
অংশ নয়। এটি আমাদের সংস্কৃতি অর্থনীতি এবং পরিবেশের সাথে মলিন হয়ে আছে। মাছের
প্রজনন প্রক্রিয়া ইলিশ মাছের পুরো জীবনে একটি রহস্যময় ঘটনা।
আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্রণ দূর করার উপায়
এটি খুব জটিল একটি প্রক্রিয়া। এটি শুধু বংশবিস্তারের সাথে সম্পর্কিত নয় এটি
রয়েছে নদী সমুদ্র এবং পরিবেশের সাথে ভারসাম্যের একটি বিষয়। জেলেদের জীবনযাত্রা।
এবং অর্থনৈতিক নানা বিষয়। তাই ইলিশ মাছ সংরক্ষণ করার জন্য এবং তাদের
বংশবিস্তারের সুযোগ দেয়ার জন্য নিয়ম-কানুন মেনে চলা উচিত আমাদের সবার। আজকের
পোস্টটি কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ডেইলি ডাইরির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url